দাঙ্গা (১৯৯২-এর চলচ্চিত্র)

দাঙ্গা ১৯৯২ সালের বাংলাদেশী অপরাধধর্মী-নাট্য চলচ্চিত্র। ছবিটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন কাজী হায়াৎ এবং প্রযোজনা করেছেন হেলেন মুস্তাফিজ। মৌসুমী কথাচিত্রের ব্যানারে ছবিটি পরিবেশিত হয়। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন মান্না, সুচরিতা, রাজীব, মিজু আহমেদ, আনোয়ারা প্রমুখ।[1][2]

দাঙ্গা
দাঙ্গা চলচ্চিত্রের পোস্টার
পরিচালককাজী হায়াৎ
প্রযোজকহেলেন মুস্তাফিজ
রচয়িতাকাজী হায়াৎ
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারআহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল
চিত্রগ্রাহকআজমল হক
সম্পাদকমোহাম্মদ আলী শহীদ
প্রযোজনা
কোম্পানি
মৌসুমী কথাচিত্র
পরিবেশকমৌসুমী কথাচিত্র
মুক্তি২৪ জানুয়ারি ১৯৯২
দৈর্ঘ্য১৪০ মিনিট
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা

ছবিটি ১৯৯২ সালের ২৪ জানুয়ারি সারা বাংলাদেশে মুক্তি পায়।[3] ছবিটি ১৬তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে দুটি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে। রাজীব শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা এবং সাবিনা ইয়াসমিন শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী বিভাগে পুরস্কৃত হন।[4] ছবিটি পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে পুনঃনির্মিত হয়। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন চিরঞ্জিতসুচরিতা

কাহিনী সংক্ষেপ

ছোট মফস্বল শহর বেগুনবাড়ি। সেখানকার সংসদ সদস্য আবুল হোসেন অনেকদিন ধরে মন্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করছেন। বেগুনবাড়ীর চেয়ারম্যান লিটন আখতার আবুল হোসেনের কাছের লোক। সে আবুল হোসেনের সাহায্যে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় অপকর্ম করে থাকে। সরকার থেকে প্রাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী জনগণের মধ্যে অল্প পরিমাণ বিলিয়ে বাকিটুকু গুদামজাত করে। নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছবি অভাবের তাড়নায় ত্রাণসামগ্রী নিতে গেলে চেয়ারম্যানের লোলুপ দৃষ্টি পরে তার দিকে। স্থানীয় কলেজের ভিপি ছাত্রনেতা হাবিব ছবিকে লিটনের হাত থেকে উদ্ধার করে এবং গুদামজাত ত্রাণসামগ্রী এলাকার গরীব জনগণদের নিয়ে যাওয়ার জন্য সুযোগ করে দেয়। এতে সংসদ সদস্য আবুল হোসেন হাবিবের উপর ক্ষিপ্ত হোন। পূর্বেও হাবীব নির্বাচনের সময় তার বিরোধিতার করেছিল বলে আবুল হোসেন আগে থেকেই তার উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। ফলে সে চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয় হাবিবকে খুন করার জন্য। চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী, ভাড়াটে খুনি কালুকে দিয়ে হাবীবকে খুন করায়। হত্যা করার সময় বৃদ্ধ নাপিত অমূল্য প্রামাণিক তাকে দেখে ফেলে। কালু তাকে দুটি চোখ ও জিহবা কেটে ফেলে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দেয়।

হাবিব হত্যার তদন্তের জন্য বেগুনবাড়ি এলাকায় ওসি হিসেবে বদলি হয়ে আসে রাজু। হাবিব হত্যার তদন্ত করতে গিয়ে অসহায় যুবতী ছবির পরিবারের পাশে দাঁড়ায় রাজু। এতে সংসদ সদস্য আবুল হোসেন, চেয়ারম্যান ও খুনি কালুর সাথে তার বিরোধ লেগে যায়। রাজুর সহযোগিতায় হাবিব হত্যার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী অমূল্য প্রামাণিক সাক্ষ্য দিয়ে দেয়। সাক্ষ্য দেয়ার কারণে কালু অমূল্যের দুটি চোখ তুলে নেয় ও জিহবা কেটে দেয়। অন্ধ ও বোবা অমূল্য প্রামাণিককে রাজু তার বাড়ীতে আশ্রয় দেয়। কালু অমূল্য ও রাজুর গর্ভবতী স্ত্রী ছবিকে খুন করে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজুর গুলিতে মারা যায়। অন্যদিকে আবুল হোসেন মন্ত্রিত্ব লাভ করার পর এক সংবর্ধনায় আসলে রাজু তাকে গুলি করে অপরাধী চক্রের প্রধানকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়।

কুশীলব

সঙ্গীত

দাঙ্গা চলচ্চিত্রের গানের সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। গীত রচনা করেছেন মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। ছবিতে ৪টি গান রয়েছে। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন, এন্ড্রু কিশোর, শাকিলা জাফর, রথীন্দ্রনাথ রায় ও বেবি নাজনীন। সাবিনা ইয়াসমিন "হে মাতৃভূমি" গানের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।[5]

গানের তালিকা

নং.শিরোনামকণ্ঠশিল্পী(রা)দৈর্ঘ্য
১."হে মাতৃভূমি"সাবিনা ইয়াসমিন২:৪৮
২."শুধু তুমি শুধু আমি"শাকিলা জাফরএন্ড্রু কিশোর 
৩."আমি এক ঝরা ফুল"সাবিনা ইয়াসমিন 
৪."এ কুল আর ও কুল"রথীন্দ্রনাথ রায় ও বেবি নাজনীন 

পুরস্কার

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

তথ্যসূত্র

  1. এলাহী, ফজলে (২৬ মার্চ ২০১৫)। "'দাঙ্গা' শুধুই একটি চলচ্চিত্র নয়, নির্মম এক সত্যর উপলব্ধি"বাংলা মুভি ডেটাবেজ। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০১৭
  2. বন্দ্যোপাধ্যায়, নূপুর (৩০ মার্চ ২০১৭)। "'দাঙ্গা'ই ছিল মিজু আহমেদের টার্নিং পয়েন্ট"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০১৭
  3. "DANGA"বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০১৭
  4. "জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তদের নামের তালিকা (১৯৭৫-২০১২)"বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১৫
  5. বিউটি, রওশন আরা (২৪ জানুয়ারি ২০১৪)। "সংগীতের অহংকার সাবিনা ইয়াসমিন"দৈনিক আজাদী। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০১৭

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.