চুম্বন

চুম্বন হল দুই ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে কাউকে আদর করা বা স্নেহ প্রকাশ করা।[1] সাধারণভাবে প্রেম, কাম, স্নেহ, অনুরাগ, শ্রদ্ধা, সৌজন্য অথবা শুভেচ্ছা প্রকাশার্থে অন্য কারো চিবুক, অধরোষ্ঠ, করতল, কপাল বা অন্য কোন অঙ্গে ঠোঁট অর্থাৎ অধরোষ্ঠ[2] স্পর্শ করা। সৌভাগ্য কামনায়, সম্মান প্রদর্শনার্থে বা কিছু প্রাপ্তির আনন্দ প্রকাশার্থে ঐ বস্তুতে অধরোষ্ঠ স্পর্শ করানোও চুম্বন। স্নেহ-ভালবাসা প্রকাশার্থে চুম্বন একটি সাধারণ প্রথা। যৌনসঙ্গমকালে চুম্বন একটি গুরুত্বপূর্ণ শৃঙ্গারবাৎস্যায়নের কামসূত্রে বিভিন্ন প্রকার চুম্বনের বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে আধুনিক কাল অবধি তাহিতি এবং আফ্রিকা মহাদেশের কোনো কোনো আদিবাসী সমাজে চুম্বন প্রথা অজ্ঞাতই রয়ে গেছে।[3]

মা সন্তানকে চুম্বন করছে

সংস্কৃত "চুম্বন" থেকে বাংলায় "চুমা", "চুমু", "চুমো" প্রভৃতি শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। মানব সভ্যতার বিভিন্ন পর্যায়ে নানা অনুষ্ঠান ও উৎসবে চুম্বন প্রথা ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। এটি অভিবাদনের সাধারণ একটি রীতি। পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলিতেও চুম্বন বর্ণিত হয়েছে। হোমারের রচনা থেকে জানা যায় যে প্রাচীন গ্রিসে শ্রদ্ধা প্রদর্শনের পন্থা হিসেবে ওষ্ঠ, হস্ত ও পদ চুম্বনের প্রথা প্রচলিত ছিল। প্রাচীন রোমে, ইসাক ডি’ইসরায়েলির বর্ণনা থেকে জানা যায়, কেউ কেউ একনায়কের হস্ত চুম্বনের অনুমতি প্রাপ্ত হলে "নিজেদের ভাগ্যবান মনে করতেন"। আধুনিক যুগেও চুম্বন প্রায়শই ধর্মোপাসনার অঙ্গ হিসেবে পরিগণিত হয়। হজ্জ পালন কালে মুসলমানরা ক্বাবার প্রাচীরে স্থাপিত হজরে আসওয়াদ নামক পাথরটিতে চুম্বন করে থাকে।

ছবিঘর

একটি রোমান্টিক চুম্বন

পাদটীকা

  1. আকাদেমি বিদ্যার্থী বাংলা অভিধান, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, কলকাতা, ১৯৯৯, পৃ:২৯৭
  2. অধরোষ্ঠ=অধর + ওষ্ঠ। অধরোষ্ঠ অর্থ ঠোঁট। "অধর" হলো নিচের ঠোঁট, "ওষ্ঠ" হলো ওপরের ঠোঁট।
  3. Dyer, Tristeleton T. F. "The History of Kissing", The American Magazine, vol. 14, 1882, pgs. 611-614

বহিসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.