কোষ নিউক্লিয়াস
নিউক্লিয়াস (ইংরেজি: Cell Nucleus) হল প্রোটোপ্লাজমের সবচেয়ে ঘন, পর্দাঘেরা এবং প্রায় গোলাকার অংশ।যা কোষের সব জৈবনিক ক্রিয়া বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে তাকে বলা হয় নিউক্লিয়াস ৷ লিউয়েন হুক (Lewaen hook) সর্বপ্রথম ১৯৬৭ সালে কোষে নিউক্লিয়াস দেখতে পান এবং এর নামকরণ করেন।তিনিই এটি আবিষ্কার করেন সর্বপ্রথম। এটি ৪ টি অংশে বিভক্ত।

গঠন
এর আকৃতি গোলাকার, ডিম্বাকার, নলাকার, উপবৃত্তাকার, প্যাঁচানো থালার মত এবং শাখান্বিও হতে পারে ৷ রাসায়নিকভাবে নিউক্লিয়াস মূলত প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিড দ্বারা গঠিত। এতে অন্যান্য উপাদানও থাকে। যেমনঃ প্রোটিন (Protein), আরএনএ(RNA), ডিএনএ(DNA) । সিভকোষ বা লোহিত রক্তকণিকায় নিউক্লিয়াস থাকে না৷[1] নিউক্লিয়াসে বংশগতির বৈশিষ্ট্য নিহিত ৷ এটি কোষে সংঘটিত বিপাকীয় কার্যাবলিসহ সব ক্রিয়া-বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে ৷ সুগঠিত নিউক্লিয়াসে নীচের অংশগুলো দেখা যায়:
নিউক্লিয়ার ঝিল্লি বা নিউক্লিও পর্দা

নিউক্লিয়াস কে ঘিরে রাখে যে ঝিল্লী তাকে নিউক্লিয়ার ঝিল্লী বলে ৷ এটি দ্বিস্তর বিশিষ্ট ঝিল্লী ৷ এ ঝিল্লী লিপিড ও প্রোটিন এর সমন্বয়ে গঠিত ৷ এ ঝিল্লীতে মাঝে মাঝে কিছু ছিদ্র থাকে একে নিউক্লিয়াররন্ধ্র বলে ৷ এই ছিদ্রের মাধ্যমে কেন্দ্রিকা ও সাইটোপ্লাজম এর মধ্যে কিছু বস্তু চলাচল করে ৷ এই ঝিল্লী সাইটোপ্লাজম থেকে কেন্দ্রিকার অন্যান্য বস্তুকে পৃথক করে ও বিভিন্ন বস্তুর চলাচল নিয়ন্ত্রন করে ৷[2]
নিউক্লিয়ার ঝিল্লি বা নিউক্লিও পর্দা এর কাজ
নিউক্লিয়াসকে রক্ষণাবক্ষেণ করা এর প্রধান কাজ। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ অঙ্গানুগুলোকে সাইটোপ্লাজম থেকে পৃথক করে রাখে।
নিউক্লিওপ্লাজম
কেন্দ্রিকা ঝিল্লীর অভ্যন্তরে জেলির ন্যায় বস্তু বা রসকে কেন্দ্রকারস বা নিউক্লিওপ্লাজম বলে ৷ কেন্দ্রিকা রসে নিউক্লিক অ্যাসিড , প্রোটিন , উৎসেচক, আরএনএ,বিভিন্ন এনজাইম, (ডিএনএ পলিমারেজ, আরএনএ পলিমারেজ, নিউক্লিওটাইড ট্রাইফসফাটেজ, নিউক্লিওসাইড ফসফোরাইলেজ, কাইনেজ, ডিহাইড্রোজিনেজ, এন্ডোনিউক্লয়েজ), আরএনপি দানা, অল্প পরিমাণে লিপিড ও কতিপয় খনিজ লবণ থাকে ৷
নিউক্লিওপ্লাজম এর কাজ
এখানে নিউক্লিওলাস ও ক্রোমাটিন তন্তু অবস্থান করে। নিউক্লিয়াসের রসস্ফীতি অবস্থা বজায় রাখা ও নিউক্লিয়াসের বিভিন্ন কাজে সহায়তা করা।
নিউক্লিওলাস
নিউক্লিয়ার বা কেন্দ্রিকার মধ্যে ক্রোমোজম এর সাথে লাগানো গোলাকার বস্তুকে নিউক্লিওলাস বা কেন্দ্রিকাকাণু বলে ৷১৭৮১ সালে বিজ্ঞানী ফনটানা(Fontana) সর্বপ্রথম নিউক্লিওলাস আবিষ্কার করেন। ক্রোমোজোমের রঙঅগ্রাহী অংশের সাথে এরা লেগে থাকে ৷ এরা RNA ও প্রোটিন দ্বারা গঠিত ৷ এরা নিউক্লিক অ্যাসিড মজুত করে ও প্রোটিন সংশ্লেষণ করে ৷ নিউক্লিওলাস ক্রোমোজোমের যে স্থানটিতে লাগানো থাকে তাকে বলা হয় স্যাটেলাইট। ক্রোমোজোমের যে স্থানে নিউক্লিওলাস সংযুক্ত থাকে তাকে বলা হয় SAT বা স্যাটেলাইট।
ক্রোমাটিন জালিকা বা নিউক্লিও জালিকা
কোশের বিশ্রামকালে কেন্দ্রিকায় কুন্ডলী পাকানো সূক্ষ সুতার ন্যায় অংশই হল ক্রোমাটিন জালিকা ৷ কোশ বিভাজনের সময় এরা মোটা ও খাটো হয় তাই তখন তাদের অালাদা ক্রোমোজোম হিসেবে দেখা হয় ৷ ক্রোমোজোম এর দুইটি অংশ রয়েছে।
তথ্যসূত্র
- আজমল, গাজী; আসমত, গাজী। "কোষ"। উচ্চ মাধ্যমিক জীববিজ্ঞান (2 সংস্করণ)। গাজী পাবলিসার্স।
- রীপা, রাহাত পারভীন (২০১১-১০-০১)। "নিউক্লিয়াস ও ক্রোমোজোম"। BdFISH Bangla।