কেপলার-৪

কেপলার-৪ সূর্যের মত একটি নক্ষত্র যা তারকামণ্ডলে ১৬৩১ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এটি কেপলার মিশনের একটি ক্ষেত্র, যা পৃথিবী সাদৃশ গ্রহ খোঁজার উদ্দেশ্যে নাসা কর্তৃক পরিচালিত একটি অভিযান। কেপলার-৪বিনেপচুন আকারের একটি গ্রহ যা এই নক্ষত্রের অত্যন্ত নিকটবর্তী কক্ষপথে আবর্তিত হচ্ছে বলে আবিষ্কৃত হয় এবং ৪ জানুয়ারি ২০১০ সালে কেপলার দলের মাধ্যমে জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়। কেপলার-৪বি কেপলার স্যাটেলাইটের প্রথম আবিষ্কার ছিল, এবং তার নিশ্চিতকরণ মহাকাশযানের কার্যকারিতা প্রদর্শনে সাহায্য করেছে।

কেপলার-৪
পর্যবেক্ষণ তথ্য
ইপক J২০০০      বিষুব J২০০০
তারামণ্ডল ড্রেকো
বিষুবাংশ 19 2মি 27.68সে[1]
বিষুবলম্ব +50° 8 8.7[1]
আপাত  মান (V) ১২.৬
জ্যোতির্মিতি
দূরত্ব১৬৩১ ly
(৫৫০ pc)
বৈশিষ্ট্যসমূহ
বর্ণালীর ধরণজি০
বিবরণ
ভর১.০৯২ ± ০.০৭৩[2] M
ব্যাসার্ধ১.৫৩৩ ± ০.০৪০[2] R
উজ্জ্বলতা০.৩৫৪ ± ০.১ L
তাপমাত্রা৫৭৮১ ± ৭৬[2] K
ধাতবতা [Fe/H]+০.০৯ ± ০.১০[2] dex
বয়স৪.৫ Gyr
অন্যান্য বিবরণ
কেআইসি 11853905, KOI ৭, 2MASS ১৯০২২৭৬৭+৫০০৮০৮৭

নামকরণ ও ইতিহাস

কেপলার -৪ কেপলার মহাকাশযানের নামে নামকরণকৃত - যা নাসার এমন একটি দূরবীন যে পৃথিবী থেকে দেখা যায় এরূপ নক্ষত্রের পথের মধ্যে পৃথিবী সাদৃশ গ্রহ খোঁজার কাজে ব্যবহৃত হয়।[3] পূর্বের তিনটি গ্রহ যা ইতোমধ্যে কেপলার নিশ্চিত করেছে তা পূর্বে আবিষ্কৃত হওয়ায় কেপলার-৪ এবং তার গ্রহ ছিল কেপলার দলের প্রথম আবিষ্কার।[4] তারকাটি এবং তার ব্যবস্থা, গুণাবলী, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি জানুয়ারি ৪, ২০১০ তারিখে ওয়াশিংটন ডিসিতে আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ২১৫তম সভায় কেপলার-৫, কেপলার-৬, কেপলার -৭, ও কেপলার-৮সহ ঘোষণা করা হয়। উপস্থাপিত গ্রহগুলোর মধ্যে কেপলার-৪বি গ্রহ ছিল নেপচুন গ্রহের আকারের চেয়ে ক্ষুদ্রতম।[5] আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির সভায় কেপলার-৪ বি এবং অন্যান্য গ্রহ আবিষ্কারের তত্ত্ব উপস্থাপন করায় এটা নিশ্চিত করেছে যে কেপলার মহাকাশযান যথার্থই কার্যকরী।[6]

টেক্সাসের ফোর্ট ডেভিস ম্যাকডোনাল্ড মানমন্দিরের হার্লান জে স্মিথ টেলিস্কোপটি অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কেপলারের আবিষ্কারগুলো অনুসরণ করতে এবং তা নিশ্চিত করতে ব্যবহার করতেন।[7] এছাড়াও হাওয়াই,ক্যালিফোর্নিয়া, অ্যারিজোনা, এবং ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের দূরবীক্ষণও তথ্য নিশ্চিত করার জন্য ব্যবহার করা হত।[6]

গুণাবলী/বৈশিষ্ট্যসমূহ

কেপলারের আবিষ্কৃত পাঁচটি গ্রহের আপেক্ষিক আকৃতি দেখানো একটি ছবি। কেপলার-৪বি পাঁচটির মধ্যে ক্ষুদ্রতম, বেগুনি রংয়ে নির্দেশিত।

কেপলার-৪ একটি জি০-টাইপ তারকা যা সূর্যের অনুরূপ, কিন্তু  উজ্জ্বলতা সামান্য বেশি। নক্ষত্রটি ১.০৯২ সূর্যের ভর এবং ১.৫৩৩ সূর্যের ব্যসার্ধ Msun, বা সূর্যের ভরের ১০৯% এর এবং সূর্যের ব্যাসার্ধের ১৫৩%।[2] কেপলার-৪ ধাতু  সমৃদ্ধ  { .১৭ (±০.০৬) } [Fe/H] যা সূর্যের চেয়ে ৪৮% বেশি। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, কম ধাতু সমৃদ্ধ নক্ষত্রের তুলনায় বেশি ধাতু সমৃদ্ধ নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে গ্রহগুলোর আবর্তনের ঝোঁক বেশি। কেপলার-৪, ৪.৫ (±১.৫) বিলিয়ন বছরের পুরনো।[8] সে তুলনায়, সূর্যের বয়স ৪.৬ বিলিয়ন বছর।[9] এছাড়াও, কেপলার-৪ এর কার্যকর তাপমাত্রা ৫৭৮১ (±৭৬) কেলভিন,[2] যা সূর্যের তাপমাত্রা ৫৭৭৮ কেলভিনের সাথে প্রায় অভিন্ন।[10]

পৃথিবী থেকে প্রতীয়মান হয় যে, কেপলার -৪ এর আপাত বিস্মৃতি ১২.৭। ফলে, এটা খালি চোখে দৃশ্যমান নয়।[8]

গ্রহের তত্ত্ব

কেপলার-৪বি এর আবিষ্কার জানুয়ারি ৪,২০১০ এ ঘোষিত হয়। এর আকার নেপচুন গ্রহের মতই, ০.০৭৭ এম.জে. (জুপিটার ভর এর ৭%) এবং ০.৩৫৭ আর.জে (জুপিটার ব্যাসার্ধ এর ৩৬%)। গ্রহটি তার নক্ষত্রের কক্ষপথে ০.০৪৫ এইউ দূরত্বে ৩.২১৪ দিন পর পর আবর্তন করে।[4] এই দূরত্ব বুধ গ্রহের সাথে তুলনা করা হয়, যা সূর্য থেকে ০.৩৯ এইউ দূরে।[11] কেপলার-৪ এর উৎকেন্দ্রিকতা ০ ধরা হয়, তবে পরবর্তীতে নিরপেক্ষভাবে আবিষ্কারের তথ্য পুনরায় বিশ্লেষণ করে (০.২৫ +- ০.১২) মান পাওয়া যায়।[12] অনুরূপভাবে,এই গ্রহের তাপমাত্রা ১৬৫০ কেলভিন ধরা হয় যা বৃহস্পতির (গ্রহ) তাপমাত্রা ১২৪ কেলভিনরে চইতে অনেক বেশি (অভ্যন্তরীণ তাপ এবং বায়ুমন্ডল বিবেচনা না করে)।[4]

কেপলার-৪ গ্রহমণ্ডল[4][12]
সহচর
(তারকার অনুক্রম)
ভর পরাক্ষ
(AU)
কক্ষীয় পর্যায়কাল
(দিনসমূহ)
উৎকেন্দ্রিকতা কক্ষীয় নতি ব্যাসার্ধ
বি ০.০৭৭ MJ ০.০৪৫৫৮ ৩.২১৩৫ ০.২৫ ± ০.১২ ৮৯.৭৬° ০.৩৫৭ RJ

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Borucki, William J.; ও অন্যান্য (২০১০)। "Kepler-4b: A Hot Neptune-like Planet of a G0 Star Near Main-sequence Turnoff"The Astrophysical Journal Letters713 (2): L126। arXiv:1001.0604doi:10.1088/2041-8205/713/2/L126বিবকোড:2010ApJ...713L.126B
  2. Huber, Daniel; ও অন্যান্য (২০১৩)। "Fundamental Properties of Kepler Planet-candidate Host Stars using Asteroseismology"The Astrophysical Journal767 (2)। 127। arXiv:1302.2624doi:10.1088/0004-637X/767/2/127বিবকোড:2013ApJ...767..127H
  3. "Kepler: About the Mission"Kepler Missionনাসা। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১
  4. "Summary Table of Kepler Discoveries"। NASA। ২০১০-০৮-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-১৬
  5. Rich Talcott (৫ জানুয়ারি ২০১০)। "215th AAS meeting update: Kepler discoveries the talk of the town"Astronomy.comAstronomy magazine। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১
  6. "NASA's Kepler Space Telescope Discovers its FIrst Five Exoplanets"নাসা। ৪ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১
  7. "Texas Astronomers Aid Kepler Mission's Discovery of New Planets"UT News। University of Texas at Austin। ৪ জানুয়ারি ২০১০। ২৮ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১
  8. Jean Schneider (২০১০)। "Planet Kepler-4 b"Extrasolar Planets Encyclopaedia। Jean Schneider। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১২
  9. Fraser Cain (১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮)। "How Old is the Sun?"। Universe Today। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১
  10. David Williams (১ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। "Sun Fact Sheet"Goddard Space Flight CenterNASA। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১
  11. David Williams (১৭ নভেম্বর ২০১০)। "Mercury Fact Sheet"Goddard Space Flight CenterNASA। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১
  12. Kipping, David; Bakos, Gáspár (২০১১)। "An Independent Analysis of Kepler-4b through Kepler-8b"The Astrophysical Journal730 (1)। 50। arXiv:1004.3538doi:10.1088/0004-637X/730/1/50বিবকোড:2011ApJ...730...50K

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.