কুমিল্লা জিলা স্কুল

কুমিল্লা জিলা স্কুল বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলায় অবস্থিত একটি বিখ্যাত বালক বিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি সুপ্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি কুমিল্লা জেলার প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়ের সন্নিকটে অবস্থিত। স্কুলটি প্রভাতি ও দিবা এই দুই শাখায় বিভক্ত। স্কুলটিতে ৫ম থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা দেয়া হয়। এস এস সি পরীক্ষার ফলাফলের দিক দিয়ে, এই স্কুলটি বেশ কয়েক বছর ধরে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে প্রথম স্থান ও সমগ্র বাংলাদেশে সেরা দশের মধ্যে অবস্থান করছে। স্কুলটিতে প্রায় ২০০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে।

কুমিল্লা জিলা স্কুল
অবস্থান
কুমিল্লা,
বাংলাদেশ
তথ্য
ধরনসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠাকাল১৮৩৭
বিদ্যালয় জেলাকুমিল্লা
বিদ্যালয়ের প্রধানরাশেদা আক্তার
শ্রেণী৫ম - ১০ম
তালিকাভুক্তি২০০০
ক্যাম্পাসের আকার৫.৬৯ একর
ক্যাম্পাসের ধরনশহুরে
পোশাক        

ইতিহাস (১৮৩৭-২০১৫)

কুমিল্লা জিলা স্কুলের একটি গৌরবময় সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। ১৮৩৭ সালে এইচ জি লেজিস্টার নামে একজন ইংরেজ শিক্ষক স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই ছিলেন এই স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক। পরবর্তীতে ব্রিটিশ ভারত সরকার ইংরেজি সাহিত্য ও বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে স্কুলটিকে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের রূপ প্রদান করে এবং "কুমিল্লা জিলা স্কুল" নামকরণ করে। ১৮৫০ সাল পরবর্তী সময়ে, স্কুলের ভবন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন শুরু হয় এবং শিক্ষা প্রদান পদ্ধতির উন্নয়ন ঘটানো হয়। ১৯৩৭ সালে কুমিল্লা জিলা স্কুল এর প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উদযাপন করে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর স্কুলটির শিক্ষাপদ্ধতির পরিবর্তন ঘটানো হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে, স্কুলটি শিক্ষা ও অন্যান্য দিক দিয়ে উন্নয়ন লাভ করতে থাকে। ২০০৯ সালে, স্কুলটি কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের শ্রেষ্ঠ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে।২০১২ সালের ২০ই জুলাই স্কুলটি তার প্রতিষ্ঠার ১৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন করে।এ উপলক্ষে স্কুল প্রাঙ্গন ও ভবনসমূহ আলোকসজ্জিত করা হয় এবং জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বর্তমান অবস্থা

স্কুলটি একটি বালক উচ্চ বিদ্যালয়। প্রাথমিকভাবে স্কুলটিতে একটি শিফট ছিল। কিন্তু ১৯৯১ সাল থেকে, স্কুলে দুইটি শিফটে বিভক্ত হয়ঃ প্রভাতি ও দিবা। বর্তমানে স্কুলটিতে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়। পঞ্চম শ্রেণীতে দুইটি শাখা বিদ্যমান।প্রভাতি ক ও দিবা ক।ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রত্যেক শ্রেণীতে ছয়টি শাখা বিদ্যমান। এগুলো হল, প্রভাতি ক, খ, গ এবং দিবা ক, খ, গ। নবম ও দশম শ্রেণীতে চারটি করে শাখা বিদ্যমান। প্রভাতি ক ও খ এবং দিবা ক ও খ। বর্তমানে স্কুলটিতে প্রায় ২০০০ শিক্ষার্থী এবং ৫৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন।

পোশাক

স্কুলের নির্দিষ্ট পোশাক হল সাদা শার্ট, সাদা প্যান্ট ও সাদা জুতো এবং কালো বেল্ট । শার্ট ফুল হাতা বা হাফ হাতা দুটোই গ্রহণযোগ্য। এছাড়া শীতকালে নীল রঙের সোয়েটারও ইউনিফরমের অন্তর্ভুক্ত। শার্টের পকেটে স্কুলের মনোগ্রামযুক্ত ব্যাজ থাকা আবশ্যক।

ভর্তি

সাধারণত শিক্ষার্থীরা পঞ্চম ও ষষ্ঠ শেণীতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ লাভ করে। এজন্য শিক্ষার্থীদের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। ভর্তি পরীক্ষা ডিসেম্বর মাসে সংঘটিত হয়।

হাউজ প্রথা

স্কুলটিতে বর্তমানে হাউজ প্রথা বিদ্যমান। স্কুলে চারটি হাউজ রয়েছে। এগুলো হল, আবু জাহিদ হাউজ, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হাউজ, কাজী নজরুল ইসলাম হাউজ এবং মোতাহের হোসেন চৌধুরী হাউজ। আবু জাহিদ হাউজের রঙ আকাশি, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হাউজের রঙ লাল, নজরুল ইসলাম হাউজের রঙ হলুদ এবং মোতাহের হোসেন হাউজের রঙ নীল। প্রত্যেক বছর হাউজগুলোর মধ্যে লেখাপড়া ছাড়াও খেলাধুলা প্রভৃতি বিষয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- আন্তঃহাউজ ফুটবল প্রতিযোগিতা

সহশিক্ষা কর্মসূচী

  • বি এন সি সি (বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর)
  • স্কাউটিং
  • খেলাধুলা (অ্যাথলেটিক্স, ক্রিকেট ও ফুটবল)
  • বিতর্ক
  • সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
  • বার্ষিক সাময়িকী
  • গণিত ও ভাষা প্রতিযোগীতা
  • বিজ্ঞান মেলা
  • শিক্ষা সফর ইত্যাদি

উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন ছাত্র

যে সব খ্যাতনামা ব্যক্তি এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন, তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হল:

চিত্রশালা

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  • এখানে উল্লিখিত তথ্যসমূহ স্কুলটির বার্ষিক সাময়িকী থেকে সংগৃহীত।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.