কুষ্টিয়া জিলা স্কুল

কুষ্টিয়া জিলা স্কুল বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি। ১৯৬১ সালে এই স্কুলটি কুষ্টিয়া সদরে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬১ সালে এর প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই স্কুল এই অঞ্চলের অন্যতম সেরা স্কুল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি এই স্কুলে তার শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করেছেন। স্বাধীনতা পূর্ব সময় থেকে এখন পর্যন্ত 'কুষ্টিয়া জিলা স্কুল' অনন্য আবেদন ও পরিচয়ের অধিকারী।

কুষ্টিয়া জিলা স্কুল
কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রধান ফটক
অবস্থান
মজমপুর, কুষ্টিয়া সদর, কুষ্টিয়া
বাংলাদেশ
তথ্য
ধরনমাধ্যমিক
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৬১
কুষ্টিয়া শহর
অধ্যক্ষমোঃ এফতে খাইরুল ইসলাম
শিক্ষার্থী সংখ্যা২৫০০(প্রায়)
ক্যাম্পাস১৬ একর (৬৫,০০০ মি)
ডাকনামKZS

এটি কুষ্টিয়া জেলার প্রাণকেন্দ্রে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ সড়কের পাশে অবস্থিত। স্কুলটি প্রভাতী ও দিবা এই দুই শাখায় বিভক্ত। স্কুলটিতে ৩য় থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা দেয়া হয়। পি এস সি, জে এস সি ও এস এস সি পরীক্ষার ফলাফলের দিক দিয়ে, এই স্কুলটি বেশ কয়েক বছর ধরে যশোর শিক্ষা বোর্ডে অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে এবং সমগ্র বাংলাদেশেই স্কুলটির ফলাফল,আভিজাত্য ও সাংস্কৃতিক কার্যাবলির অনবদ্য সুনাম রয়েছে। স্কুলটি প্রায় ২৫০০ শিক্ষার্থীর অধ্যয়ন-চাঞ্চল্যে মুখরিত।


বর্তমান অবস্থা

প্রাথমিকভাবে এই বালক বিদ্যালয়ে একটি শিফট ছিল। কিন্তু ১৯৯১ সাল থেকে, স্কুলে দুইটি শিফটে বিভক্ত হয়ঃ প্রভাতি ও দিবা। বর্তমানে স্কুলটিতে তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়। তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রত্যেক শ্রেণীতে চারটি শাখা বিদ্যমান এবং নবম ও দশম শ্রেণীতে ছয়টি করে শাখা বিদ্যমান। বর্তমানে স্কুলটিতে প্রায় ২৫০০ শিক্ষার্থী এবং ৫৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন।

শিক্ষা খরচ

বেতন সাধারানত মাসিক হিসাবে নেয়া হয়।সরকারি বেতন ৬ থেকে ১৫ টাকা ক্লাসভিত্তিক ভাবে বাড়তে থাকে। সাথে টিফিন ফি এর জন্য অতিরিক্ত ৭৫ টাকা প্রদান করতে হয় প্রতি মাসের বেতনের সাথে।এছাড়া একজন শিক্ষার্থিকে প্রতিমাসে কম্পিউটার শিক্ষার জন্য বাড়তি ২০ টাকা প্রদান করতে হয়। উল্লেখ্য যে যারা বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থি তাদের শুধু বেতন বাদে অন্যান্য ফি প্রদান করা লাগে।

ইউনিফর্ম

স্কুলের ইউনিফর্ম হল ফুল হাতা সাদা শার্ট, খাকী প্যান্ট ও সাদা জুতো। এছাড়া শীতকালে নীল রঙের সোয়েটারও ইউনিফর্মের অন্তর্ভুক্ত। শার্টে বিদ্যালয়ের মনোগ্রাম সংবলিত ব্যাজ থাকে।

ফলাফল

২০১৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় স্কুলের ২১৯ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। শতভাগ উত্তীর্ণ হওয়া কুষ্টিয়া জিলা স্কুল যশোর শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পঞ্চম স্থান লাভ করে[1] ২০১২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিলা স্কুল যশোর শিক্ষা বোর্ডের মধ্য ষষ্ঠ স্থান লাভ করে। পাশের হার ১০০%। ১২২ জন জি পি এ-৫ পেয়েছে। [1] ২০১১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১৭০ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ লাভ করে এবং শতভাগ পাশ করে।[1] ২০০৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১৩৯ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ লাভ করে এবং বোর্ডের ২য় সেরা স্কুল হবার মর্যাদা লাভ করে।

ভর্তি

সাধারণত শিক্ষার্থীরা তৃতীয় ও ষষ্ঠ শেণীতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ লাভ করে। অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যোগ্য ছাত্রদের নির্বাচিত করা হয়। ভর্তি পরীক্ষায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এই ভর্তি পরীক্ষা ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়।

শিক্ষা সুবিধাসমূহ

এই বিদ্যালয়ে তিনটি বিজ্ঞানাগার, একটি লাইব্রেরী, একটি কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, একটি ব্যায়ামাগার ও কর্মশালা কক্ষ রয়েছে। পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিদ্যার প্রায়োগিক পাঠসমূহ সাধারণত বিজ্ঞানাগারে পড়ানো হয়। বিদ্যালয়ে একটি ঘাট বাঁধানো পুকুর রয়েছে যাতে ইতিপূর্বে প্রতি বছর সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হত। বিদ্যালয়ের মূল ভবনে বড় একটি হলঘর আছে যেখানে সভা, সাংস্কৃতিক উতসব, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা(যেমন; চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক, রচনা লিখন, বিজ্ঞান মেলা, সঙ্গীত ইতাদি) আয়োজিত হয় এবং প্রতি বছর ইনডোর গেম্সের আয়োজন হয়। এছাড়া দূরবর্তী ছাত্রদের জন্য বিদ্যালয়ের অদূরে একটি ছাত্রাবাস রয়েছে (বর্তমানে র‍্যাব-১২ এর তত্ত্বাবধানে আছে)।

সহশিক্ষা কর্মসূচী

খেলাধুলা (ভলিবল, অ্যাথলেটিক্স,সাতার, ক্রিকেট ও ফুটবল), বিতর্ক ক্লাব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বার্ষিক সাময়িকী, গণিত উৎসব ও ভাষা প্রতিযোগ, বিজ্ঞান মেলা,বি এন সি সি (বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর), স্কাউটিং ।

স্কুলের বিভিন্ন ক্লাব

স্কুলটিতে দীর্ঘদিন যাবৎ কাব, স্কাউট এবং বিএনসিসি ক্লাব আছে। এছাড়া রয়েছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। ২০০৪ সালে বিতর্ক চর্চা বাড়ানোর লক্ষে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল ডিবেটিং ক্লাব আত্মপ্রকাশ করে। কুষ্টিয়া জিলা স্কুল ডিবেটিং ক্লাব প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ২০০৫ সালের ৫ জুন তার গৌরবময় যাত্রা শুরু করে। অপর দিকে ২০১০ সালে অনেক চেষ্টার পরে ১৬২ জন সদস্য নিয়ে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল সায়েন্স ক্লাব গঠন করা হয়, কিন্তু ২০১২ সালে সেটা তৎকালীন প্রধান শিক্ষিকার অবহেলায় এবং মৌলবাদী শিক্ষকদের চাপের মুখে বন্ধ হয়ে যায় ।

অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন

অতিসম্প্রতি জিলা স্কুলের ৫০ বছর পূর্তি(সুবর্ণজয়ন্তী) উপলক্ষে ৯/১০/১১ তারিখ একটি পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজন হয় । অনুষ্ঠানে প্রায় ৩০০০ প্রাক্তন ছাত্র অংশগ্রহণ করে । সম্প্রতি কুষ্টিয়া জিলা স্কুল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে ।

প্রাক্তন ছাত্র

গ্যালারি

তথ্যসূত্র

  1. "(যশোর_বোর্ড)"। ১১ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১৪
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.