কান্তোও অঞ্চল

কান্তোও অঞ্চল (関東地方, কান্তোও-চিহোও) হল জাপানের বৃহত্তম দ্বীপ হোনশুর একটি ভৌগোলিক অঞ্চল।[1] বৃহত্তর টোকিও মহানগর অঞ্চল সমেত সাতটি প্রশাসনিক অঞ্চল এই ভৌগোলিক অঞ্চলের অন্তর্গত, যথা: গুন্‌মা, তোচিগি, ইবারাকি, সাইতামা, টোকিও, চিবা এবং কানাগাওয়া। কান্তোও অঞ্চলের ভৌগোলিক সীমার প্রায় ৪৫% কান্তোও সমভূমির অন্তর্গত। অবশিষ্ট অংশ পর্বতময়। জাপান স্ট্যাটিস্টিক্স ব্যুরো পরিচালিত ২০১০ এর আদমশুমারি অনুযায়ী এই অঞ্চলের জনসংখ্যা ছিল ৪,২৬,০৭,৩৭৬ জন।[2] এই সংখ্যা জাপানের সমসাময়িক মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ।

কান্তোও অঞ্চল
関東地方
অঞ্চল
কান্তোও অঞ্চল (গাঢ় সবুজ) ও অবশিষ্ট জাপান
আয়তন
  মোট৩২৪২৩.৯০ কিমি (১২৫১৮.৯৪ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (১লা এপ্রিল, ২০১২)
  মোট৪,২৫,৯৮,৩০০
  জনঘনত্ব১৩০০/কিমি (৩৪০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলজেএসটি (ইউটিসি+9)

নামকরণ

কান্তোও নামের আক্ষরিক অর্থ "বাধার পূর্বদিক"। বর্তমানে মোটামুটি হাকোনে চেক পয়েন্টের (関所) পূর্বদিকের অংশ বোঝাতে এই নামের ব্যবহার হয়। কান্তোও-এর বিপরীত শব্দ "বাধার পশ্চিম দিক" বলতে কান্‌সাই অঞ্চলকে বোঝানো হয়, যা পশ্চিম হোনশুর অন্তর্গত এবং ঐতিহাসিকভাবে ছিল সামন্ততান্ত্রিক জাপানের অন্যতম কেন্দ্র।

ইতিহাস

কান্তোও অঞ্চল মধ্যযুগীয় জাপানে কামাকুরা যুগ এবং আবার এদো যুগে ছিল সামন্ততান্ত্রিক ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। দেশের আধুনিক উন্নয়নের প্রথম ছাপও দেখা যায় এই অঞ্চলে। বৃহত্তর টোকিও অঞ্চল এবং বিশেষ করে টোকিও-য়োকোহামা মহানগর অঞ্চলের মধ্যে জাপান সরকারের প্রধান প্রধান দপ্তর, সর্বাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, সর্বাধিক ঘনবসতি এবং অন্যতম প্রধান শিল্পাঞ্চল অবস্থিত। কান্তোও সমভূমির অধিকাংশই বসতি, বাণিজ্যিক ও শিল্পনির্মাণের কাজে ব্যবহৃত হলেও এখনও এখানকার কৃষিজমিতে চাষাবাদ করা হয়। প্রধান ফসল হল ধান, তবে বর্তমানে টোকিও-য়োকোহামার নিকটবর্তী অঞ্চলে শহুরে বাজারের চাহিদা মেটাতে উদ্যানপালন শুরু হয়েছে।

আধুনিক জাপানের ইতিহাসের এক বৃহৎ বিভাজিকার আকারে তাইশো যুগের শেষে ১৯২৩ খ্রিঃ ঘটে যায় বৃহৎ কান্তোও ভূমিকম্প। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী আর্থিক মন্দায় বেকায়দায় পড়া জাপানের অর্থনীতিতে এক লক্ষাধিক প্রাণহানি সমেত এই ভূমিকম্প শোচনীয় ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রশক্তি জাপান আক্রমণের কথা বিবেচনা করতে আরম্ভ করে। এই উদ্দেশ্যে ছকা অপারেশন ডাউনফলের অংশ অপারেশন করোনেটের লক্ষ্য ছিল কান্তোও সমভূমির দখল নেওয়া। বর্তমানে হোনশু দ্বীপে অধিষ্ঠিত মার্কিন সেনা ছাউনির অধিকাংশই এই সমভূমির নানা অংশে ছড়িয়ে আছে। এগুলোর মধ্যে আছে আৎসুগি নৌ-বায়ুসেনা ঘাঁটি, য়োকোতা বিমানঘাঁটি, য়োকুসুকা নৌঘাঁটি এবং যামা ক্যাম্প।

বৃহৎ কান্তোও ভূকম্পের পর অনেকে নতুন নতুন পদ্ধতি ও রঙ ব্যবহার করে শিল্পসৃষ্টি করতে থাকেন। এই শিল্পীরা ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত জনপদগুলির স্মৃতি রক্ষার্থে শিল্পে ঐ জনপদগুলির উপস্থাপনা করেন।

কান্তোও অঞ্চলের নিক্কো পর্বতের মানচিত্র

তথ্যসূত্র

  1. Nussbaum, Louis-Frédéric. (2005). "Kantō" in গুগল বইয়ে জাপান বিশ্বকোষ, pp. 478-479, পৃ. 478,
  2. "政府統計の総合窓口"। E-stat.go.jp। ২০১১-১০-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১২-৩১
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.