কমনওয়েলথ দিবস

কমনওয়েলথ দিবস (ইংরেজিতেঃ Commonwealth Day) সাংবার্ষিকভিত্তিতে মার্চ মাসের ২য় সোমবার কমনওয়েলথ অধিভূক্ত দেশসমূহে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়।[1] সাধারণতঃ কমনওয়েলথভূক্ত রাষ্ট্রপ্রধান, কমনওয়েলথ মহাসচিব এবং হাইকমিশনারগণের উপস্থিতিতে মহামান্য রাণী ২য় এলিজাবেথ ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে, লন্ডনে বহুমূখী বিশ্বাসযোগ্য সেবার বার্তা নিয়ে জনসমক্ষে উপস্থিত হন। সেখানে রাণী কমনওয়েলথবাসীদের কাছে তার বক্তব্য পেশ করেন যা বিশ্বব্যাপী সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।

কমনওয়েলথ দিবস
পালনকারীকমনওয়েলথভূক্ত দেশ
উদযাপনওয়েস্টমিনিষ্টার অ্যাবেতে বহু-বিশ্বাসীয় সেবা
তারিখমার্চের ২য় সোমবার
সম্পর্কিতকমনওয়েলথ গেমস (প্রতি চার বছর অন্তর অনুষ্ঠিত)

এছাড়াও, প্রতি চার বছর পরপর কমনওয়েলথ গেমস উপলক্ষে পূর্বের বছরের কমনওয়েলথ দিবসে রাণী দৌড়বিদের কাছে ব্যাটন রীলে বা ছোট মোটা লাঠি হস্তান্তর করেন। এটি রাণীর ব্যাটন রীলে নামে পরিচিত এবং গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দৌড় শেষ হয়।

আনুষ্ঠানিকভাবে মর্যাদাপ্রাপ্ত হলেও কমনওয়েলথ দিবস উপলক্ষে অধিকাংশ কমনওয়েলথভূক্ত দেশে সরকারী ছুটি ঘোষণা করা হয় না। এমনকি এ দিবসের সচেতনতা ও গুরুত্ব সম্পর্কে খুব কমই তুলে ধরা হয়।

দিবস উদযাপন

বিশ্বব্যাপী পালিত দিবস হিসেবে কমনওয়েলথ দিবস সমানভাবে উদযাপন করা হয় না। ২০০৬ সালে রাণী ২য় এলিজাবেথ অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসের প্রাক্কালে সেন্ট এন্ড্রু'জ ক্যাথেড্রাল, সিডনী, নিউ সাউথ ওয়েলসে কমনওয়েলথ দিবসের শুভেচ্ছা বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় দিনটি সরকারী ছুটির দিন নয়। আঞ্চলিক পর্যায়ে বিভিন্ন রাজ্যে এ দিনটি ক্যানবেরা ডে, লেবার ডে, এডিলেড কাপ ডে এবং এইট-আওয়ার ডে পালিত হয়।

কানাডায় যুক্তরাজ্যিয় সরকার কর্তৃক জাতীয় পতাকার পাশে রয়্যাল ইউনিয়ন ফ্ল্যাগ উত্তোলনের মাধ্যমে একমাত্র আনুষ্ঠানিক সম্মাননা প্রদর্শন করা হয় যা এদিন দেশব্যাপী উত্তোলন করা হয়ে থাকে, যেখানে দৃশ্যমান আয়োজন অনুমোদিত ........ দৃশ্যমান আয়োজন বলতে কমপক্ষে দু'টি পতাকা দণ্ডের উপস্থিতি।[2] ১৯৬৪ সালের সংসদীয় অধ্যাদেশে কানাডার পতাকা বা ম্যাপল লিফ ফ্ল্যাগ-এ ইউনিয়ন ফ্লাগ পুণরায় অন্তর্ভুক্তির জন্য মতামত ব্যক্ত করে যা কমনওয়েলথের সদস্যতা ও রাজমুকুটের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের আনুষ্ঠানিক প্রতীক।[2]

কমনওয়েলথ দিবসকে কেন্দ্র করে ও স্মরণীয় করে রাখতে যুক্তরাজ্যের পতাকা বিশেষতঃ ইউনিয়ন ফ্ল্যাগ সকল সরকারি ভবনে উড্ডয়ন করা হয়। স্কটিশ সংসদ ভবনেও ৪র্থ পতাকা দণ্ডে কমনওয়েলথ পতাকা টাঙ্গানো হয়। অন্যদিকে জিব্রাল্টারে কমনওয়েলথ দিবসে সরকারী ছুটি প্রদান করা হয়।[3]

এছাড়াও, অন্যান্য কমনওয়েলথভূক্ত দেশেও মার্চের ২য় সপ্তাহে দিবসটি পালন করে থাকে। ২০০৯ সালে মার্চের ২য় সপ্তাহ হিসেবে ৯ মার্চ পালিত হয়। কিছু দেশ বিশেষ করে ১৯৭৩ সালে এর সদস্যরূপে বেলিজ এবং বাহামা আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি উদযাপন করে। বিদ্যালয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান, সমাবেশ, পতাকা-উত্তোলন - অনুষ্ঠানগুলো এ দিবস উদযাপন উপলক্ষে পালন করা হয়। অনুষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি প্রায়শঃই রাণীর ভাষণ পাঠ করে শোনানো হয়ে থাকে।

প্রতিপাদ্য বিষয়

বছরপ্রতিপাদ্য বিষয়
২০১২সংস্কৃতির সাথে সম্পর্ক
২০১১পরিবর্তনে প্রতিনিধিত্বকারী নারী
২০১০বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং সমাজ
২০০৯কমনওয়েলথ@৬০ - নতুন প্রজন্মকে সেবা
২০০৮পরিবেশ, আমাদের ভবিষ্যৎ
২০০৭পার্থক্যে সম্মাননা, বোঝায় উন্নতি
২০০৬স্বাস্থ্য এবং জীবন
২০০৫শিক্ষা - সুযোগ সৃষ্টি, উপলদ্ধি প্রচ্ছন্ন
২০০৪কমনওয়েলথবাসীদের জন্য মুক্তিক্ষেত্র তৈরী
২০০৩উন্নয়নে অংশীদার
২০০২বৈসাদৃশ্য
২০০১নতুন প্রজন্ম
২০০০জ্ঞানে অংশগ্রহণ - যোগাযোগ ব্যবস্থায় পরিবর্তন
১৯৯৯সঙ্গীত
১৯৯৮খেলাধূলা আমাদেরকে একত্রিত করে
১৯৯৭একে-অপরের সাথে কথা বল
১৯৯৬আমাদের অংশীদারীত্ব কর্ম
১৯৯৫আমাদের কমনওয়েলথ প্রতিবেশী - পরমতসহিষ্ণুতা এবং বোঝার জন্য একত্রিত হয়ে কাজ করা

স্মারক স্ট্যাম্প মুদ্রণ

১৯৮৩ সালে কমনওয়েলথ দিবস উপলক্ষে কমনওয়েলথভূক্ত দেশসমূহে স্মারক স্ট্যাম্প মুদ্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। আইতুয়াকি, অ্যাঙ্গোলা, এন্টিগুয়া ও বার্বুদা, অস্ট্রেলিয়া, বাহামা, বাংলাদেশ, বার্বাডোজ, বার্বুদা, বেলিজ, বতসোয়ানা, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, ব্রুনেই, কানাডা, ক্যামেন আইল্যান্ড, কুক আইল্যান্ড, সাইপ্রাস, ডোমিনিকা, ফকল্যাণ্ড দ্বীপপুঞ্জ, ফিজি, গাম্বিয়া, ঘানা, জিব্রাল্টার, গ্রেনাডা, গায়ানা, হংকং, ভারত, জামাইকা, কেনিয়া, কিরিবাতি, লেসোথো, মালাউ, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মাল্টা, মৌরিতাস, নেভিস, নিউজিল্যান্ড, নাইজেরিয়া, নিউই, পাকিস্তান, পাপুয়া নিউগিনি, পেনরিন দ্বীপপুঞ্জ, পিটকেইর্ন দ্বীপপুঞ্জ, সেন্ট কিটস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনস, সামোয়া, সিসিলিস, সিয়েরালিওন, সিঙ্গাপুর, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, শ্রীলঙ্কা, সোয়াজিল্যান্ড, তাঞ্জানিয়া, টোঙ্গা, ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগো, তুর্কস ও ক্যাইকোস, টুভ্যালো, উগান্ডা, যুক্তরাজ্য, ভানুয়াতু, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে প্রমূখ দেশ ও অধীনস্থ দ্বীপসমূহে এ দিবস উপলক্ষে একযোগে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়েছিল।

তথ্যসূত্র

  1. কমনওয়েল্‌থ ডে অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে, সংগ্রহকালঃ ১২ মার্চ, ২০১২ইং।
  2. "United Kingdom - Gibraltar"। The Commonwealth Secretariat। ২০১০-০৩-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৩-০৬

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.