ইয়ান হার্ভে
ইয়ান যোসেফ হার্ভে (ইংরেজি: Ian Harvey; জন্ম: ১০ এপ্রিল, ১৯৭২) ভিক্টোরিয়ার ওনথাগ্গি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ও সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। ১৯৯৭ থেকে ২০০৪ সময়কালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লুচেস্টারশায়ার, ইয়র্কশায়ার, ডার্বিশায়ার, হ্যাম্পশায়ার ও নর্দাম্পটনশায়ার এবং দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে কেপ কোবরাস দলের পক্ষে খেলেছেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডারের দায়িত্ব পালন করতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন ‘ফ্রেক’ ডাকনামে পরিচিত ইয়ান হার্ভে।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | ইয়ান যোসেফ হার্ভে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ওনথাগ্গি, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া | ১০ এপ্রিল ১৯৭২|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | ফ্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি (১.৭৩ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | ম্যাকেঞ্জি হার্ভে (ভাইপো) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় পার্শ্ব |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১৩৫) | ৪ ডিসেম্বর ১৯৯৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ২৯ মে ২০০৪ বনাম জিম্বাবুয়ে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই শার্ট নং | ২৯ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৯৩–২০০৫ | ভিক্টোরিয়ান বুশরেঞ্জার্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৯৯–২০০৬ | গ্লুচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৪–২০০৫ | ইয়র্কশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৫–২০০৬ | কেপ কোবরাস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৭ | ডার্বিশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৮ | হ্যাম্পশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৯ | নর্দাম্পটনশায়ার (দল নং ২৯) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১০ | সাউদার্ন রক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো, ৫ মার্চ ২০১৮ |
খেলোয়াড়ী জীবন
১৯৯৩ সালে অল-রাউন্ডার হিসেবে ভিক্টোরিয়ার সদস্যরূপে শেফিল্ড শিল্ডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ঘরোয়া ক্রিকেটে অসামান্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৭ সালে অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভূক্ত হন। ৪ ডিসেম্বর, ১৯৯৭ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে ইয়ান হার্ভে। এরপর থেকে ৭৩টি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেন। তবে, তিনি কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করেননি।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ
২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের শিরোপা বিজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ঐ বিশ্বকাপের মূল দলে তিনি ছিলেন না। তবে, আঘাতপ্রাপ্ত শেন ওয়াটসনের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি।[1] গ্রুপ পর্বের খেলায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে বল প্রতি ২৪ রান তুলে অপরাজিত ১৪৩ রান তোলা অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসকে প্রভূতঃ সহায়তা করেন। ৩১০ রান টপকাতে ব্যস্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪ উইকেট নিয়ে সেরা বোলারে পরিণত হন। তন্মধ্যে, প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছিলেন ইয়ান হার্ভে। কিন্তু, আঘাতের পর আরোগ্য লাভ করে ড্যারেন লেহম্যান ও মাইকেল বেভান মাঠে ফিরে আসলে তাকে চলে আসতে হয়। গ্রুপ পর্বে দূর্বল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আরেকটি খেলায় তার অংশগ্রহণ ছিল। তিন উইকেট লাভ করলে দুই খেলায় সাত উইকেট পান।
সুপার সিক্স পর্বের প্রথম খেলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের শেষদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ে ব্যাটিংয়ে নেমে অপরাজিত ৫ রান তুলেন। উইকেট লাভ না করলেও মিতব্যয়ী বোলিং করেন তিনি। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ২ রান তুলে ব্যর্থতার পরিচয় দিলেও ৬ ওভার বোলিং করে মাত্র ১১ রান দিয়ে ১ উইকেট পান। সুপার সিক্স পর্বের শেষ খেলায় কেনিয়ার বিপক্ষে খেলেন ও মিতব্যয়ীভাবে বোলিং করলেও কোন উইকেট পাননি। তবে, ১৭৫ রান টপকাতে অস্ট্রেলিয়াকে বেগ পেতে হয়। তিনি ও সাইমন্ডস ৫০ রানে জুটি গড়ে দলকে নিরাপদে জয় এনে দেন। হার্ভে ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। ড্যামিয়েন মার্টিন আঘাত পেলে সেমি-ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেন।
প্রতিযোগিতার ৬ খেলায় অংশ নিয়ে ২২.০০ গড়ে ৬৬ রান ও ১৯.৬২ গড়ে ৮ উইকেট পান তিনি।[2]
কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ
১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ইংরেজ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে গ্লুচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেন। এ সময় ঘরোয়া একদিনের প্রতিযোগিতায়ও সপ্রতিভ অংশগ্রহণ ছিল তার। তিনি দলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হন। বেশ কয়েকটি একদিনের ট্রফি জয় করে তার দল। তন্মধ্যে একাধারে চারটি একদিনের চূড়ান্ত খেলায় অংশগ্রহণ করে গ্লুচেস্টারশায়ার দল। এছাড়াও ২০০৩ সালে টুয়েন্টি২০ ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি করেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনটি টি২০ সেঞ্চুরি করেছিলেন। ২০০৪ সালে স্থান পরিবর্তন করে ইয়র্কশায়ারে চলে যান। এ ক্লাবে ২০০৫ সাল পর্যন্ত খেলেন।[3]
২০০৬ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে গ্লুচেস্টারশায়ারে ফিরে যান। এছাড়াও পুরা কাপে অংশ নেন তিনি। ২০০৭ সালে ডার্বিশায়ারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। তবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র না পাওয়ায় পূর্ণাঙ্গ মৌসুম খেলার সুযোগ হয়নি তার। অনুমতির বিলম্ব ঘটায় মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালনার ন্যায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এরফলে ডার্বিশায়ারের প্রধান নির্বাহী জন সিয়ার্সের সিদ্ধান্তে হতাশ হন তিনি।[4] ডার্বিশায়ার কর্তৃপক্ষ ইয়ান হার্ভেকে সাপ্তাহিক অবকাশের খেলায় মিডলটন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলার জন্য সাময়িকভাবে তাদের পেশাদার খেলোয়াড়কে অনুমতি দেন।[5]
২০০৫-০৬ মৌসুমে ইয়ান হার্ভে দক্ষিণ আফ্রিকান প্রাদেশিক দল নশুয়া-ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স বোল্যান্ডের পক্ষে খেলেন। এ সময়ে একাধারে তিনি প্রশিক্ষণ প্রদান ও ধারাভাষ্যকর্মের পাশাপাশি খেলতেন।
টুয়েন্টি২০ ক্রিকেট
সংক্ষিপ্ত ঘরানার টুয়েন্টি২০ ক্রিকেটে ইয়ান হার্ভে নিজেকে বেশ পারদর্শী করে তুলেন। শুরুতে গ্লুচেস্টারশায়ার ও ভিক্টোরিয়ার পক্ষে খেলেন। এছাড়াও, ২০০৭ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লীগের উদ্বোধনী আসরে চেন্নাই সুপারস্টার্সের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। এ প্রতিযোগিতার শিরোপা জয় করে তার দল। চূড়ান্ত খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারসহ প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় মনোনীত হন তিনি।
টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হওয়ায় ২০০৮ সালে স্বল্পকালের চুক্তিতে হ্যাম্পশায়ার হকস এবং ২০০৯ সালে নর্দাম্পটনশায়ার স্টিলব্যাকসের পক্ষে খেলেন তিনি।[6] নর্দার্নটসের পক্ষে প্রথম খেলায় ব্যাটিং করে ১২ রান তুলেন। কিন্তু, ওয়ারউইকশায়ার বিয়ার্সের বিপক্ষে বল হাতে ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ও ১৭ রানের জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন।[7] সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হওয়ায় কোয়ার্টার ফাইনালে অনুপস্থিত ছিলেন। তবে, নর্দাম্পটনশায়ার জয় পেয়েছিল।[8] এরপর চূড়ান্ত খেলা পর্যন্ত খেলতে থাকেন।
ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সালে জিম্বাবুয়ের বিশেষ প্রাধিকারপ্রাপ্ত দল সাউদার্ন রক্সের পক্ষে টি২০ ও প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন।[9]
খেলার ধরন
খেলার শেষদিকে আঁটোসাঁটো বোলিং করতেন। ধীরগতিসম্পন্ন বোলিং করে বেশ সুনাম অর্জন করেন ইয়ান হার্ভে। পাশাপাশি নিচেরসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাট হাতে মাঠে নামতেন ও মারকুটে ব্যাটিং করতেন। তবে, ওডিআইয়ে কোন অর্ধ-শতরানের ইনিংস সংগ্রহ করতে পারেননি।
২০০৪ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন তিনি।[10] তার ভাইপো ম্যাকেঞ্জি হার্ভে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।[11]
কোচিং
২০১৫ সালে গ্লুচেস্টারশায়ারে ফিরে আসেন। তবে এবার সহকারী কোচের দায়িত্ব নিয়ে। তিনি প্রধান কোচ রিচার্ড ডসনের সহকারী মনোনীত হন।[12][13]
তথ্যসূত্র
- "Injured Watson ruled out of World Cup"। Cricinfo.com। ২৫ জানুয়ারি ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১১-২৪।
- "Records/ICC World Cup 2002/3 Australia - Batting and Bowling Averages"। espncricinfo.com। ১১ জানুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১৫।
- Warner, David (২০১১)। The Yorkshire County Cricket Club: 2011 Yearbook (113th সংস্করণ)। Ilkley, Yorkshire: Great Northern Books। পৃষ্ঠা 370। আইএসবিএন 978-1-905080-85-4।
- "Driving ban delays Harvey return"। BBC Sport। ২০০৭-০৫-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৫-১৮।
- "ECB block Harvey over citizenship"। Cricinfo। ২০০৭-০৫-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৫-১৮।
- Northants sign Harvey for Twenty20 cup Sky Sports
- Harvey turns game for Northants BBC Sport
- Harvey ruled out with 'swine flu' BBC Sport
- "Ian Harvey signs for Southern Rocks - Sportingo.com"। ১৬ এপ্রিল ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১৮।
- Full List on Cricinfo, Retrieved 11 July, 2017.
- "Mackenzie Harvey signed by Melbourne Renegades to replace Aaron Finch"। Sydney Morning Herald। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৮।
- Harvey returns to Gloucestershire
- Gloucestershire find their voice after Bracewell departure
বহিঃসংযোগ
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ইয়ান হার্ভে
(ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে ইয়ান হার্ভে
(সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)