আনোয়ার পারভেজ

আনোয়ার পারভেজ (মৃত্যু ১৭ জুন, ২০০৬) একজন বাংলাদেশী শীর্ষস্থানীয় সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, সঙ্গীতজ্ঞ ও শব্দসৈনিক। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বিবিসির জরিপে যে ২০টি বাংলা গান সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বলে স্বীকৃতি পেয়েছে তার সুরকৃত তিনটি গান "জয় বাংলা বাংলার জয়", "একবার যেতে দে না" এবং "একতারা তুই দেশের কথা"৷[1] তার সুরারোপিত ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় ছিল৷ সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০৭ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে।[2]

আনোয়ার পারভেজ
জন্মআনু. ১৯৪৪
মৃত্যু১৭ জুন ২০০৬
জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা, বাংলাদেশ
সমাধিআজিমপুর কবরস্থান, ঢাকা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পেশা
কার্যকালআনু ১৯৬৫–২০০৬
দাম্পত্য সঙ্গীজেসমিন পারভেজ
আত্মীয়শাহনাজ রহমতুল্লাহ (বোন)
জাফর ইকবাল (ভাই)
সঙ্গীত কর্মজীবন
ধরন
  • চলচ্চিত্রের গান
  • লোক সঙ্গীত
সহযোগী শিল্পী

কর্মজীবন

ষাটের দশকের গোড়ায় তিনি পেশাদার সঙ্গীত জীবন শুরু করেন চট্টগ্রাম বেতারে সুরকার পদে যোগ দিয়ে৷ পরে ঢাকায় এসে বিভিন্ন মাধ্যমে সঙ্গীত পরিচালনা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে "জয় বাংলা বাংলার জয়" গানের সুর করেন। এছাড়া তার সুরকৃত শাহনাজ রহমতুল্লাহর কণ্ঠে "একতারা তুই দেশের কথা" ও "একবার যেতে দে না আমার" গান দুটি জনপ্রিয়তা লাভ করে।[3] স্বাধীনতার পরই বাংলাদেশের একটি অন্যতম ব্যবসাসফল ছবি রংবাজ-এর সুরকারও ছিলেন তিনি৷ সে সময় "সে যে কেন এলো না কিছু ভালো লাগে না" বা "এই পথে পথে", "আমি একা চলি"- এ গানগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে৷ এছাড়া দি রেইন (১৯৭৬) চলচ্চিত্রে সুর করেও তিনি সমালোচকদের দৃষ্টি কেড়েছিলেন৷ সঙ্গীত জীবনের ৪০ বছরে দুই হাজারেরও বেশি গানে সুর দিয়েছেন৷[4]

ব্যক্তিগত জীবন

আনোয়ার পারভেজ জেসমিন পারভেজের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তার বোন শাহনাজ রহমতুল্লাহ দেশের একজন খ্যাতিমান গায়িকা এবং তার ভাই জাফর ইকবাল ছিলেন একজন চলচ্চিত্র অভিনেতা৷

মৃত্যু

দীর্ঘদিন ধরেই তিনি প্রস্টেট ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ২০০৫ সালে তা তার হার্ট অবধি ছড়িয়ে পড়েছিল৷[5] ভীষণ অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢাকার জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশনে নেয়ার পর পরই কোমায় চলে যান তিনি এবং ২০০৬ সালে ১৭ জুন মধ্যরাতে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন৷[6] তাকে ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়৷[7]

সুরারোপিত চলচ্চিত্র

  • বিজলী (১৯৬৯)
  • বিন্দু থেকে বৃত্ত (১৯৭০)
  • জয় বাংলা (১৯৭১)
  • ছন্দ হারিয়ে গেল (১৯৭২)
  • রংবাজ (১৯৭৩)
  • বন্দিনী (১৯৭৬)
  • দি রেইন (১৯৭৬)
  • মাটির মায়া (১৯৭৬)
  • অভিযান (১৯৮৪)
  • রাজিয়া সুলতানা (১৯৮৪)
  • ঢাকা ৮৬ (১৯৮৬)
  • জবরদস্ত (১৯৮৮)
  • জীনের বাদশা (১৯৮৯)
  • ছুটির ফাঁদে (১৯৯০)
  • মৌমাছি (১৯৯৬)
  • সাবাশ বাঙ্গালী (১৯৯৮)
  • বউ শাশুড়ীর যুদ্ধ (২০০৩)
  • মধু মালতী
  • সোনার হরিণ
  • তালাক
  • সকাল সন্ধ্যা

সম্মাননা

  • সঙ্গীতে অবদানের জন্য মরণোত্তর একুশে পদক (২০০৭)
  • বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটি থেকে আজীবন সম্মাননা (২০০৬)[8]

তথ্যসূত্র

  1. "সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা গান"বিবিসি বাংলা। ৩ মে ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭
  2. "Five receive Ekushey Padak"দ্য ডেইলি স্টার। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭
  3. "Anwar Pervez talks about his invaluable patriotic song"দ্য ডেইলি স্টার। ১৬ ডিসেম্বর ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭ অজানা প্যারামিটার |;ast= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); Authors list-এ |প্রথমাংশ1= এর |শেষাংশ1= নেই (সাহায্য)
  4. "Anwar Parvez no more"দ্য ডেইলি স্টার। ১৮ জুন ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭
  5. "Anwar Parvez in critical condition"দ্য ডেইলি স্টার। ২১ আগস্ট ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭
  6. "Eminent music composer Anwar Parvez passes away"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৬ জুন ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭
  7. "Bidding farewell to a cultural icon"স্টার উইকেন্ড। ২৩ জুন ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭
  8. "Lifetime Achievement Award for film personalities"স্টার উইকেন্ড। ৭ মার্চ ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৭

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.