অনুরাগ কাশ্যপ

অনুরাগ কাশ্যপ (জন্ম ১০ সেপ্টম্বর, ১৯৭২) একজন ভারতীয় সিনেমার প্রযোজক, পরিচালক, লেখক, অভিনেতা যিনি হিন্দি সিনেমায় তার অসাধারণ কাজের জন্য সুপরিচিত ৷ তার এই অসাধারণ কাজের জন্য তিনি একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার এবং চারবার ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার জিতেছেন ৷ ২০১৩ সালে তার অবদানের জন্য ফ্রান্স সরকার তাকে অর্দ্রে দেস আর্টস এট দেস লেটট্রেস" বা "নাইট অব আর্ট এন্ড লেটার্স " পুরষ্কারে ভূষিত করে ৷

অনুরাগ কাশ্যপ
কাশ্যপ বোম্বাই ভেলভেট এর প্রমোশনে (২০১৫)
জন্ম
অনুরাগ সিং কাশ্যপ

(1972-09-10) ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৭২[1]
গোরাকপুর, উত্তর প্রদেশ, ভারত
পেশাসিনেমা প্রযোজক, অভিনেতা
কার্যকাল১৯৯৭ থেকে বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীআরতি বাজাজ
কল্কি কোচলিন
আত্মীয়অভিনব কাশ্যপ (ভাই)

কর্মজীবনের প্রথমদিকে অনেক টিভি সিরিয়ালের কাহিনী রচনা করলেও কাশ্যপ বড় ধরনের সাড়া পান রাম গোপাল ভার্মা এর " সত্য" নামক ক্রাইমভিত্তিক সিনেমায় সহ লেখক হিসেবে ৷ এরপর তিনি পরিচালক হিসেবে সিনেমা জগতে পদার্পণ করেন পাচ নামক সিনেমার মাধ্যমে ৷ যদিও এই সিনেমাটি সেন্সরবোর্ডের কিছু সমস্যার কারণে কখনও মুক্তিই পাইনি ৷ এরপর তিনি "ব্লাক ফ্রাইডে" সিনেমা পরিচালনা করে যা হুসাইন জাহিদির বইয়ের অবলম্বনে ১৯৯৩ সালে বোম্বাইয়ের বোমা হামলার কাহিনী নিয়ে নির্মিত ৷ নিষ্পত্তিহীন কেসের রায়ের জন্য এই সিনেমাটিও সেন্সরবোর্ডে দুই বছরের মতো আটকে থাকে ৷ ২০০৭ সালে সিনেমাটির বিশ্বব্যপি মুক্তি পাওয়ার পর খুবই জনপ্রিয়তা পায় ৷ কিন্তু তার পরবর্তী সিনেমা "নো স্মোকিং" অনেক খারাপ সমলোচনার শিকার হয় এবং বক্স অফিসেও ভালো আয় করতে পারেনি ৷ এর পরবর্তীতে তিনি ডেভ.ডি, গুলাল, গ্যাং অব ওয়াসিপুর ১ ও ২ , শাহিদ , বোম্বে টকিজ এর মত ব্যবসাসফল ভালো সিনেমা নির্মাণ করেন যা সিনেমা মহলে অনেক সাড়া ফেলেছে ও প্রশংসিত হয়েছে ৷

ব্যক্তিজীবন

কাশ্যপ ১৯৭২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর উত্তর প্রদেশের গোরাকপুরে জন্মগ্রহণ করেন ৷ [2][3][4] তার বাবা শ্রী প্রকাশ সিং উত্তর প্রদেশ পাওয়ার কর্পোরেশনের একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান ইঞ্জিনিয়ার ৷ [5] কাশ্যপ তার স্কুলজীবন শুরু করেন দেরাদুনের গ্রীন স্কুলে এবং আট বছর বয়সে গোয়ালিয়ারের এসসিইন্ডিয়া স্কুলে ভর্তি হন ৷ গ্যাং অব ওয়াসিপুর সিনেমার কিছু শুটিং এই এলাকায় তার পুরানো বাড়িতে হয়েছে যেখানে তিনি তার বাবা মা ও ভাই বোনের সাথে থাকতেন ৷[6][7][8]

ছোটবেলা থেকেই তার বিজ্ঞানী হওয়ার ইচ্ছা ছিলো ৷ এজন্য উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য তিনি দিল্লিতে আসেন ও হংসরাজ কলেজ থেকে প্রাণীবিজ্ঞানের কোর্স করেন ৷ ১৯৯৩ সালে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন ৷[9][10][11] এরপর তিনি হটাৎ করেই পথ নাট্য গ্রুপ "জানা নিত্য মঞ্চ" এ যোগ দেন এবং বিভিন্ন নাটকে কাজ করতে থাকেন ৷[7][11] ওই বছরই তার কিছু বন্ধু তাকে আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভাল এ নিয়ে যায় ৷ [6][7][12] সেখানে তিনি দশ দিনে ৫৫ টি সিনেমা দেখেন ও ভিট্টোরিও ডে সিকার " বাইসাইকেল থিভস্" সিনেমা তাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করে ৷[11][13]

কর্মজীবন

"১৯ বছর বয়সে যখন আমি দিল্লিতে হংসরাজ কলেজে প্রাণিবিজ্ঞান পড়ি, তখনও আমার ফিল্মমেকার হওয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিলো না ৷ যখন আমি ভিট্টোরিও ডে সিকার ১৯৪৮ সালের "বাইসাইকেল থিভস " সিনেমাটি দেখি দিল্লির ফিল্ম ফেস্টিভালে তখন সাল ছিল ১৯৯৩ ৷ সিনেমাটি দেখার পর আমি এটাকেই পেশা হিসেবে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই এবং তল্পিতল্পা গুছিয়ে ফিল্মমেকার হওয়ার ইচ্ছায় বোম্বেতে চলে আসি ৷"

—Kashyap on how one film changed his life.[9]

ডে সিকা অভিজ্ঞতার পর কাশ্যপ ১৯৯৩ সালে মাত্র ৫০০০ রুপি নিয়ে মুম্বাইতে চলে আসেন ৷[14][15] অতিদ্রুতই টাকা পয়সা শেষ হয়ে যায় এবং তাকে মাসের পর মাস কখন ছাদের ঘরে, কখন রাস্তার পাশে বেঞ্চে, কখনও বা পানির ট্যংকের নিচে আবার কখন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের বয়েস হোস্টেলে থাকতে হয়েছে ৷ "[7] এরপর তিনি পৃথ্বী থিয়েটারে কাজ জোগাড় করেন, কিন্তু তার প্রথম নাটক অসমাপ্তই থেকে যায় কারণ নাটকের পরিচালক মারা যান ৷ [10]

লেখক ও পরিচালক

১৯৯০ পরবর্তী

১৯৯৫ সালে, কাশ্যপ শিবম নায়ারের সাথে পরিচিত হন ৷ ওই দিনই কাশ্যপ নায়ারের বাড়িতেই "ট্যাক্সি ড্রাইভার " সিনেমাটি দেখেন এবং লেখালেখির প্রতি তার আগ্রহ জন্মায় ৷ শ্রীরাম রাঘবন, শ্রীধর রাঘবন এবং শিব সুব্রমনিয়ম এই তিন জনের টিম তখন দুটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছিলো যার একটি ছিলো "অটো নারায়ন" নামক একটি টিভি সিরিজ যা মূলত সিরিয়াল কিলার অটো নারায়নের জীবনীর উপর ভিত্তি করে রচিত আর ২য় প্রকল্পটি কাশ্যপের রচিত স্ক্রিপ্ট নিয়ে নির্মিত সিনেমা ৷ .[11] "অটো নারায়ণ " যার স্ক্রিপ্ট সুব্রমনিয়ম লিখছিলেন, তিনি কাজ বন্ধ করে দেন যার কারণ টিভি সিরিজটি কিছুদিন বন্ধ থাকে ৷ কাশ্যপ এটিকে পুনরায় লেখার কাজটি পান এবং এটিরও সম্মান পান ৷ [13][14][16][17]

১৯৯৮ সালে , মনোজ বাজপেয়ি রামগোপাল বার্মাকে কাশ্যপের খোঁজ দেন ৷[18] কাশ্যপের লেখা অটো নারায়ণের স্ক্রিপ্ট ও কাহিনী, বার্মার খুব পচ্ছন্দ হয় ৷ তিনি কাশ্যপ ও সৌরব শুক্লাকে তার ক্রাইম সিনেমা " সত্য" এর স্ক্রিপ্ট লেখার কাজ দেন ৷ [10][14]"সত্য " সিনেমাটি বাণিজ্যিক ভাবে এবং সমলোচকের দিক থেকে সফলতা পায় ,[19][20] এবং এটিকে ভারতীয় সিনেমা জগতের অন্যতম সেরা সিনেমা মনে করা হয় ৷ [21][22]

2000-2009

2009-বর্তমান

অভিনেতা

অভিনেতা হিসেবেও কৃতিত্বের ছাপ রেখেছেন তিনি। প্রথমদিকের মুভিগুলোতে বিশেষ অতিথি হিসেবে অভিনয় করলেও ‘সাগরদি’ নামের ক্রাইম থ্রিলার মুভিতে পুরোদস্তুর অভিনেতা হয়ে যান। এর পূর্বে নো স্মোকিং , ব্লাক ফ্রাইডে, লাক বাই চান্স মুভিগুলোতে অতিথি হিসেবে অভিনয় করেন।

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:FilmfareAwardBestEditing টেমপ্লেট:FilmfareAwardBestScreenplay

তথ্যসুত্রঃ

  1. "Anurag Kashyap"। British Film Institute। ৭ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৭
  2. Sonar, Mamta (১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭)। "Anurag Kashyap birthday special: The unlucky love life of the renowned filmmaker"The Free Press Journal। ৭ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৭
  3. "Anurag Kashyap turns 41; finds birthday wishes awkward"Daily News and Analysis। ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩। ২৪ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৬
  4. Parul Khanna (৫ জুলাই ২০১৩)। "Anurag Kashyap, the Godfather"Hindustan Times। ৭ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০১৩
  5. "Clear light of day"Tehelka। ২৭ নভেম্বর ২০০৪। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৫
  6. "Moving beyond art"The Telegraph। ২৫ জানুয়ারি ২০০৯। ২৪ জুলাই ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০০৯
  7. Shoma Chaudhury (৭ অক্টোবর ২০০৬)। "Catcher in the Rye"Tehelka। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০১০
  8. Suhani singh (৩১ মে ২০১৩)। "Sister Act"India Today। ১৮ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫
  9. Akbar, Irena (১৪ জুন ২০০৮)। "Why Sica Moved Patna"The Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৫
  10. "'Black Friday is based on facts!'"। Rediff.com। ৫ এপ্রিল ২০০৫। ৩ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৫
  11. Saakshi Juneja (৩ জানুয়ারি ২০০৭)। "Interview Anurag Kashyap (Part 1) : A Man With A Vision"। sakhijuneja.com। ১২ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৫
  12. "Anurag Kashyap's Biography"Koimoi। ১৮ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৫
  13. Aniruddha Guha (১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯)। "Anurag Kashyap is jinxed no more"Daily News and Analysis। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৫
  14. "Audacious, irreverent, yet refreshingly original"The Financial Express। ১০ সেপ্টেম্বর ২০০৬। ৮ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৫
  15. Thakur, Tanul (১০ মে ২০১৪)। "Not all those who wander are lost: A filmmaker's conviction is vindicated"The Sunday Guardian। ২ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মে ২০১৫
  16. "B-Towners who made a splash on TV in 2014"The Times of India। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৫
  17. Gupta, Priya (১৪ আগস্ট ২০১২)। "I don't see Ram Gopal Varma's films: Anurag Kashyap"The Times of India। ২০ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৫
  18. Khalid Mohammed। "Nothing but the truth"Filmfare। Archived from the original on ২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০০৮
  19. "Box Office 1998"। Box Office India। ১৭ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৫
  20. Rachel Dwyer (৩০ মে ২০০৫)। "Behind The Scenes"Outlook। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১০
  21. "100 Years of Indian Cinema: The 100 greatest Indian films of all time"CNN-IBN। ১৭ এপ্রিল ২০১৩। Archived from the original on ২৫ এপ্রিল ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.