শোণিতপুর জেলা

শোণিতপুর (অসমীয়া: শোণিতপুর) ভারতের আসাম রাজ্যের একটি প্রশাসনিক জেলা৷ জেলাটির প্রধান সদর হচ্ছে তেজপুর৷ ২০১১ সনের লোকগণনা[1] অনুসারে নগাঁও জেলা এবং ধুবড়ী জেলার পর তৃতীয় জনবহুল জেলা৷ শোণিতপুর জেলা প্রাকৃতিকভাবে অতি সুন্দর একটি জেলা এবং বিভিন্ন জাতি-জনগোষ্ঠীর মিলনভূমি৷ শোণিতপুর জেলা বিভিন্ন ঐতিহাসিক সময়ের সাক্ষী৷

Sonitpur district
শোণিতপুর
District
Map of Sonitpur district
Sonitpur district
স্থানাঙ্ক: ২৬.৬৩° উত্তর ৯২.৮° পূর্ব / 26.63; 92.8
Country India
StateAssam
Attained District status as Darrang District on 1835 and Bifurcated to Darrang district & Sonitpur Districton 19831983
HeadquartersTezpur
আয়তন
  মোট৫৩২৪ কিমি (২০৫৬ বর্গমাইল)
উচ্চতা৪৮ মিটার (১৫৭ ফুট)
জনসংখ্যা (2011)
  মোট১৯,২৫,৯৭৫
  জনঘনত্ব৩৬০/কিমি (৯৪০/বর্গমাইল)
Languages
  OfficialAssamese
সময় অঞ্চলIST (ইউটিসি+5:30)
ওয়েবসাইটsonitpur.nic.in

শোণিতপুর নামটির উৎপত্তি

সাহিত্যিক অর্থত শোণিতপুরের অর্থ হচ্ছে তেজের নগর৷ প্রধানৎ শোণিতপুর নামটি এসেছে সংস্কৃত 'শোণিত' (অর্থ তেজ) এবং 'পুর' (অর্থ নগর) থেকে৷ এই স্থানটির পুরনো নাম বর্তমান এটির সদর এলাকা তেজপুর হিসাবেও জানা গেছিল৷ তেজপুর শব্দটিও এসেছে সংস্কৃত 'তেজ' এবং 'পুর' শব্দ থেকে৷ শোণিতপুর নামটির ঐতিহাসিক কাহিনী একই ধরনের৷[2]

ভৌগোলিক অবস্থিতি

শোণিতপুর জেলা ব্রহ্মপুত্র নদীর উত্তর দিকে মোট ৫৩২৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে ছড়িয়ে আছে৷ বর্তমানে জেলাটি ২৬° ৩০’N এবং ২৭° ০১’N অক্ষাংশ এবং ৯২° ১৬’E এবং ৯৩° ৪৩’E দ্রাঘিমাংশের মাঝে অবস্থিত৷

জেলাটির চারিসীমা হ'ল[2]-

উত্তরে- অরুণাচল প্রদেশ

দক্ষিণে- ব্রহ্মপুত্র নদী, নগাঁও জেলা এবং গোলাঘাট জেলা

পূর্বে- লখিমপুর জেলা এবং

পশ্চিমে- দরং জেলা

জলবায়ু

মোট জনসংখ্যা

২০১১ সনের লোকগণনা অনুসারে জেলার মোট জনসংখ্যা হচ্ছে ১,৯২৫,৯৭৫৷[1] ২০০১-২০১১ সনের ভিতরে জনসংখ্যার হার হচ্ছে ১৫.৬৭%[1]৷ জেলার শিক্ষিত হার হচ্ছে ৬৯.৯৬%৷ এখন জিলার হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোক সংখ্যা হচ্ছে ১,২৮৭,৬৪৬ জন এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বী লোকসংখ্যা ২৬৮,০৭৮ (১৫.৯৪) জন৷

ইতিহাস

ভাষা

জিলার বসবাস করা বৃহৎ সংখ্যক মানুষের মাতৃভাষা হ'ল অসমীয়া ভাষা৷ কিন্তু বহু স্থানে মিশ্রিত ভাষার ব্যবহার হয়৷ অন্যান্য কিছু সংখ্যক মানুষে কার্বি ,বড়ো, নেপালী, বাংলা এবং হিন্দী ভাষা ব্যবহার করে৷[2] বর্তমানে চাবাগানসমূহে বাস করা বৃহৎ সংখ্যক শ্রমিকের মাঝে মিশ্রিত রূপের অসমীয়া ভাষার ব্যবহার দেখা যায়৷

জেলার সদর এবং মহকুমা

জিলার প্রধান সদর হচ্ছে তেজপুর৷ এটি ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে, ১৮১ কিলোমিটার গুয়াহাটির পূর্বে অবস্থিত৷ বর্তমান শোণিতপুর জেলার প্রধান নগর তেজপুর ঐতিহাসিক সম্পদের কারণে ভারত বিখ্যাত৷

শোণিতপুর জেলার তিনটা মহকুমা হ'ল তেজপুর, বিশ্বনাথ এবং গহপুর৷

গহপুর ভারত-এর উত্তর-পূর্ব রাজ্য আসামের শোণিতপুর জেলার একটা মহকুমা এবং এখন ইতিহাস প্রসিদ্ধ নগর৷ এখানেই স্বাধীনতা সংগ্রামী কনকলতা বড়ুয়ার জন্ম হয়৷ নগরটি ৫২ নং রাষ্ট্রীয় ঘাই পথর দ্বারা অরুণাচল প্রদেশের রাজধানী ইটানগর-এর নিকটে সংযোগ হয়ে আছে৷ নিকটে ব্রহ্মপুত্র নদীর দ্বারা মাজুলী এবং যোরহাট-এর নিকটে সংলগ্ন হয়ে আছে৷

শোণিতপুরের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিসকল

এখানকার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি নাম তলত উল্লেখ করা হ’ল।

পর্যটনস্থল

অগ্নিগড়
অগ্নিগড়ের মূল প্রবেশ দ্বার

তেজপুর শহরের ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে অবস্থিত ঐতিহাসিক গড়। এই গড়টি তেজপুরের বাণরাজাই নির্মাণ করেছিল। কালিকা পুরাণ-এ উল্লেখ আছে যে শত্রুর পরা নগরটি সুরক্ষিত করে রাখবার জন্য বাণাসুরে সমগ্র নগরটিকে আগুনের বেড়া দিয়ে রেখেছিল। সেই থেকে গড়টির নাম অগ্নিগড় হ'ল। অগ্নিগড়ের সংরক্ষণের দায়িত্ব ১৯২৮ সনে তেজপুর পৌরসভার পৌরপতি পদ্মনাথ গোহাঞি বড়ুয়ায়ে ব্রহ্মপুত্র নদ-এর পারে থাকা টিলাটিতে একটি উদ্যান প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমান তেজপুর পারিপার্শ্বিক সমিতির তত্বাবধানত এখন উদ্যান পরিচালনা করছে।

দ-পর্বতীয়ার শিলের দুয়ার

তেজপুর নগেরর প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে দ-পর্বতীয়া নামের গাঁয়ে অবস্থিত। ১৯২১-১৯২২ সনে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব জরিপ বিভাগের খনন কার্যের পরে দ-পর্বতীয়ায় শিলের মন্দিরের ওপরে আহোম যুগের শিল এবং ইট-নির্মিত দেয়ালের গাঁথনি উদ্ধার হয়। ঠাহর করা হয়েছে যে এই স্থানে বাণরাজা হরি-হর-এর মিলন ভূমির স্মৃতি চিরযুগমীয়া করে রাখিবার জন্যে ’হরি হরাত্মক’ শিব প্রতিষ্ঠা করে মন্দির নির্মাণ করাইছিলেন। বর্তমানের শিলর দ্বার এই মন্দিরের ভগ্নাবশেষ। কোনো কোনো প্রত্নতত্ববিদে এটিকে গুপ্ত যুগ-এর ঐতিহাসিক পুরনো স্মৃতি চিহ্ন বুলি মনে করে থাকে। এই স্থান ভারতীয় পুরাতত্ত্ব জরিপ বিভাগের দ্বারা সংরক্ষিত করা হয়েছে।[3]

ঐতিহাসিক মঠ-মন্দির

উল্লেখনীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

বিশ্ববিদ্যালয় : তেজপুর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়

মহাবিদ্যালয়:

তেজপুর মহাবিদ্যালয়
  1. দরং মহাবিদ্যালয় : তেজপুর শহরের উচ্চ শিক্ষার অন্যতম কেন্দ্রস্থল হ’ল দরং মহাবিদ্যালয়। মহাবিদ্যালয়খনি স্থাপিত হয় ১৯৪৫ খ্রীষ্টাব্দে। প্রতিষ্ঠাপক অধ্যক্ষ কামাখ্যা প্রসাদ ত্রিপাঠী ছিল।
  2. তেজপুর মহাবিদ্যালয়
  3. লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈ কন্যা মহাবিদ্যালয়
  4. তেজপুর আইন মহাবিদ্যালয়
  5. বি.টি. কলেজ
  6. ছয়দুয়ার মহাবিদ্যালয়
  7. বিশ্বনাথ মহাবিদ্যালয়
  8. ত্যাগবীর হেম বড়ুয়া মহাবিদ্যালয়
  9. বিশ্বনাথ কৃষি মহাবিদ্যালয়

উচ্চ মাধ্যমিক/উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়:

  1. তেজপুর সরকারি উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়
  2. তেজপুর সরকারি উচ্চতর মাধ্যমিক বহুমূখী কন্যা বিদ্যালয়
  3. তেজপুর একাডেমি
  4. তেজপুর সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বেংগলী বালক বিদ্যালয়
  5. তেজপুর সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বেংগলী কন্যা বিদ্যালয়
  6. চারিআলি উচ্চতর মাধ্যমিক আরু বহুমুখী বিদ্যালয়
  7. চারিআলি আদর্শ বিদ্যাপীঠ
  8. চারিআলি বালিকা উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়

কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান :

  1. আই টি আই
  2. গিরিজানন্দ চৌধুরী ইনষ্টিটিউট অব মেনেজমেণ্ট এণ্ড টেকন’লজী, তেজপুর
  3. ফার্ম মেশিনারী প্রশিক্ষণ এবং পরীক্ষণ প্রতিষ্ঠান

অনান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান :

  1. জ্যোতিকলা কেন্দ্র
  2. লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলৈ আঞ্চলিক মানসিক স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি ।[4]

তথ্যসূত্র

  1. http://www.census2011.co.in/district.php District Census 2011
  2. http://sonitpur.nic.in/ Sonitpur District Official WebSite
  3. Swati Mitra (২০১১)। Assam Travel Guide। Goodearth Publications। পৃষ্ঠা 83–। আইএসবিএন 978-93-80262-04-8। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
  4. বিশ্বনাথ কলেজ অব এডুকেশন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.