ধুবড়ী জেলা

ধুবড়ী (ইংরেজি: Dhubri, অসমীয়া: ধুবুরী) ভারতের আসাম রাজ্যের একটি প্রশাসনিক জেলা। এটি জেলা সদর ধুবুড়ী নগরে অবস্থিত। এর পূর্বে গুয়াহাটী মহানগরের দূরত্ব ২৯০ কিঃমিঃ। ধুবুড়ী এর আগে গোয়ালপাড়া জেলার সদর ছিল, যা ১৮৭৬ সনে বৃটিশ সরকারের আমলে স্থাপিত। ১৯৮৩ সনে গোয়ালপাড়া জেলার বিভাজন ঘটিয়ে ধুবুড়ী জেলার সৃষ্টি করা হয়। ধুবুড়ী জেলা ভারতের মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলাসমূহের মধ্যে অন্যতম। এ জেলাতে বাস করা মুসলমান লোকের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৫ শতাংশ। ২০১১ সালে লোকগণনা অনুসারে নগাঁও জেলার পরে ধুবুড়ী জেলা আসামের দ্বিতীয় জনবহুল জেলা [1]

ধুবড়ী জেলা
ধুবুৰী জিলা (ধুবুরী জিলা)
জেলা
(ওপরের পরে ঘড়ীর কাটার দিকে) নেতাই ধুবুনীর ঘাট, ঐতিহাসিক পানবাড়ি মসজিদ, ধুবুড়ী নগরের চিলারাইর প্রতিমূর্তি, শ্রী গুরু তেগবাহাদুর চাহিৱ গুরুদ্বার, আরু ভোলা নাথ মহাবিদ্যালয়
আসামের মানচিত্রে ধুবড়ী জেলার অবস্থান
রাজ্যআসাম
দেশ ভারত
আসনধুবড়ী
আয়তন
  মোট২৮৩৮ কিমি (১০৯৬ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (2011)
  মোট১৯,৪৮,৬৩২
  জনঘনত্ব৬৯০/কিমি (১৮০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলভারতীয় মান সময় (ইউটিসি+0৫:৩০)
আইএসও ৩১৬৬ কোডIN-AS-DB
ওয়েবসাইটhttp://dhubri.gov.in/

ধুবড়ী নামের উৎপত্তি

ধুবড়ী নামটি চাঁদ সওদাগরের আখ্যানের সাথে জড়িত। সাপের দেবী মনসার ভগ্নী নেতাই আছিল একজন ধুবুনী। নেতাইর পরামর্শ মতে কাজ করে সতী বেহুলা তার স্বামী লক্ষীন্দরের জীবন যমের হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল। প্রবাদ আছে যে এই নেতাই ধুবুনীর কাপড় ধোবার ঘাট ছিল বর্তমানের ধুবড়ী নগরের ব্রহ্মপুত্রের তীরে। "নেতাই ধুবুনীর ঘাটে" থাকা একটা প্রকাণ্ড শিলাতে হেনো নেতায়ে কাপড় ধুয়েছিল। এই ধুবুনী শব্দর থেকেই ধুবড়ী শব্দটার উত্পত্তি হয়েছে।

ইতিহাস

ধুবড়ি জেলার যোগমায়া ঘাট থেকে ব্রহ্মপুত্র

ইতিহাসের বিভিন্ন যুগত ধুবড়ী অঞ্চলত আক্রমণকারী, প্রব্রজনকারী আদি নানা রূপে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর আগমন হয়েছে। তারই ফলস্বরূপে এই অঞ্চলত এক সংমিশ্রিত সংস্কৃতির বিকাশ হয়েছে।

১৬৬৯ সনে মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব অম্বররাজ রাম সিংহকে আহোম স্বর্গদেউ চক্রধ্বজ সিংহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পঠিয়াইছিল। কিন্তু অসম ছিল একটি দুর্গম দেশ, যাকে জয় করা সহজসাধ্য ছিল না। তখন রাম সিংহ শিখ গুরু তেগ বাহাদুরকে (পাঞ্জাবী: ਗੁਰੂ ਤੇਗ਼ ਬਹਾਦੁਰ, হিন্দী: गुरू तेग़ बहादुर) তার সাথে আসতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাম সিংহের সেনাবাহিনী অসম এসে পড়ে। রাম সিংহই রাঙামাটিতে শিবির পাতেন এবং শিখ গুরুজনা ধুবড়ীতে থাকেন।

ভাষা

ধুবড়ী জেলায় প্রচলিত ভাষাসমূহের পাইচিত্র তালিকা নিম্নরূপ -

২০১১ অনুযায়ী ধুবড়ী জেলার ভাষাসমূহ[2]

  অসমীয়া (৬৯.১৭%)
  বাংলা (২৫.৫৪%)
  হিন্দি (৩.০৭%)
  সিন্ধি (১.২১%)
  অন্যান্য (১.০১%)

বিশিষ্ট ব্যক্তি

দর্শনীয় স্থান

পানবাড়ী মসজিদের অভ্যন্তরভাগ
নেতাই ধুবুনীর ঘাট

পানবাড়ী মসজিদ
ঐতিহাসিক পানবাড়ী মসজিদ ধুবুরী থেকে ২৫ কিঃমিঃ পূবে পানবাড়ী এবং রঙামাটির নিকট, ১৩ নং রাষ্ট্রীয় রাজপথের পাশে অবস্থিত।[3] এই মসজিদকে অসমের আটাইতকৈ পুরনো মছজিদ বলে বিবেচনা করা হয়। এটি বঙ্গের শাসক হুসেন শাহের ১৪৯৩- ১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দর সময়চোৱাত নির্মাণ করেছিল। মসজিদটোক ইচলামধর্মী মোগল সেনাসকলে প্রার্থনা-গৃহরূপে ব্যবহার করেছিল। মছজিদটির সাথে থাকা ইদগাহ মাঠ এবং কুয়োটিও উল্লিখিত সময়ে সম্ভবতঃ নির্মাণ করা হয়েছিল। পঞ্চপীর দরগাহ
পঞ্চপীর দরগাহ হলো পাঁচগরাকী সুফী সন্তর মাজার সরিফ। এই পন্যগুলো আহোম রাজ্য আক্রমণ করতে আসা মোগল সেনাপতি রামসিংহের সাথে অসমে এসেছিল।[4]

মহামায়া থান
ধুবড়ী জিলার বগরীবারীর একটি ছটো পাহারের ওপরে এই থানটি অবস্থিত। ঘন জংঘল আবৃত এই থানের নৈসর্গিক শোভা আকর্ষণীয়। মহামায়া থান নামনি অসমের একটি প্রখ্যাত শক্তিপীঠ।[4]

রামরায়কুটী সত্র
এই সত্রখন ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমা এবং অসম-পশ্চিমবঙ্গ আন্তঃরাজ্যিক সীমার নিকট ছত্রশাল নামে জায়গায় অবস্থিত। সত্রটি স্থাপন করেছিল মহাপুরুষ শ্রীমন্তশঙ্করদেবে। এখানে গুরু শংকরের সম্পর্কীয় ভাতৃ রামরায়ের কন্যা ভূবনেশ্বরীর সাথে কোঁচ সেনাপতি চিলারায়ের বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পিতলেরে নির্মিত একটি ঐতিহাসিক রথ এখানে সংরক্ষিত হয়ে আছে।[4]

ধুবড়ী নগরের গুরুদ্বার
এই গুরুদ্বারটিকে 'শ্রীগুরু তেগ বাহাদুর চাহিব' নামে জানা যায়। সোতর শতিকাত নবম শিখগুরু তেগবাহাদুর (Punjabi: ਗੁਰੂ ਤੇਗ਼ ਬਹਾਦੁਰ, Hindi: गुरू तेग़ बहादुर) এই গুরুদ্বারটির প্রতিষ্ঠা করেছিল।[4]

চক্রশিলা বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য
হচ্ছে ভারতের অসম রাজ্যের ধুবড়ী ও কোকড়াঝাড় জেলায় অবস্থিত একটি বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য[5]

তথ্যসূত্র

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.