শুক্তো
শুক্তো অথবা শুক্তুনি তিক্ত রসের এক ধরনের বাঙ্গালী খাবার যা সাধারনত আহারের শুরুতে মুখসুদ্ধি হিসাবে খাওয়া হয়ে থাকে। পদ্মপুরাণে বেহুলার বিয়ের নিরামিষ খাবারের মধ্যে শুক্তোর উল্লেখ পাওয়া যায়। ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গলেও বাইশ রকমের নিরামিষ পদের মধ্যে শুক্তুনিকে পাওয়া যায়।[1]
![]() শুক্তো | |
প্রকার | সহযোগী - পরিবেশন পদ |
---|---|
উৎপত্তিস্থল | ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশ |
অঞ্চল বা রাজ্য | বাংলা |
পরিবেশন | ঘরের তাপমাত্রা |
প্রধান উপকরণ | উচ্ছে, করলা, পল্তা, নালতে, নিম |
![]() ![]() |
ইতিহাস
মঙ্গলকাব্য ও বৈষ্ণবসাহিত্যে এই রান্নাটির বহুবার উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে 'শুক্তো' বলতে যেমন উচ্ছে, করলা, পল্তা, নিম, সিম, বেগুন প্রভৃতি সবজির তিক্ত ব্যঞ্জনকে বোঝায়, প্রাচীনকালে তা ছিল না। একালের শুক্তোকে সেকালে 'তিতো' বলা হত।[2]
সেকালে 'শুক্তা' রান্না করা হত- বেগুন, কাঁচা কুমড়ো, কাঁচকলা, মোচা এই সবজিগুলি গুঁড়ো বা বাটা মসলা অথবা বেসমের সঙ্গে বেশ ভালো করে মেখে বা নেড়ে নিয়ে ঘন 'পিঠালি' মিশিয়ে রান্না করা হত। পরে হিং, জিরা ও মেথি দিয়ে ঘিয়ে সাঁতলিয়ে নামাতে হত।[2]
কিন্তু 'চৈতন্যচরিতামৃতে' সুকুতা, শুকুতা বা সুক্তা বলতে একধরনের শুকনো পাতাকে বলা হয়েছে। এটি ছিল আম-নাশক। সম্ভবত এটি ছিল শুকনো তিতো পাটপাতা। রাঘব পণ্ডিত মহাপ্রভুর জন্য নীলাচলে যেসব জিনিস নিয়ে গিয়েছিলেন তার মধ্যে এই দ্রব্যটিও ছিল।[3]
আবার 'সুকুতা' বলতে সেই সময় শুকনো শাকের ব্যঞ্জনকেও বোঝাত।[3]
উপকরণ
শুক্তো যে যে সব উপকরন দিয়ে তৈরী হয় সেগুলি স্বাস্থ্যের পক্ষ্যে উপকারী। তিক্ত রসে রুচী বাড়ে। পলতা, নালতে, উচ্ছে, করলা, কচি নিম পাতা ইত্যাদি শুক্তোর তিক্ত রসের জন্যে ব্যবহার করা হয়।[4] পর্তুগিজরা বাংলায় আলুর ব্যবহার চালু করবার পর থেকে এটি শুক্তোর একটি উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়।[5]
তথ্যসূত্র
- রায়, প্রণব (জুলাই, ১৯৮৭)। বাংলার খাবার। কলকাতা: সাহিত্যলোক। পৃষ্ঠা ১০-২৩। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - রায়, প্রণব (জুলাই, ১৯৮৭)। বাংলার খাবার। কলকাতা: সাহিত্যলোক। পৃষ্ঠা ১২২। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - রায়, প্রণব (জুলাই, ১৯৮৭)। বাংলার খাবার। কলকাতা: সাহিত্যলোক। পৃষ্ঠা ১২৩। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - মুখোপাধ্যায়, বিপ্রদাস। পাক প্রনালী। কলকাতা: গুরুদাস চট্টপাধ্যায় এন্ড সন্স। পৃষ্ঠা ৫৮।
- দত্তরায়, সুনন্দ (৪ জুন ২০১৬)। "A window on history - Remains of Portuguese days"। The Telegraph, Calcutta, India। এবিপি গ্রুপ।