শবর দাশগুপ্ত
শবর দাশগুপ্ত বাঙালি সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় সৃষ্ট একটি কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র। তার ঋণ উপন্যাসে প্রথম এই পুলিশ গোয়েন্দার আবির্ভাব হয়। অরিন্দম শীলের পরিচালনায় শবরকে নিয়ে এপর্যন্ত তিনটি চলচ্চিত্র হয়েছে: এবার শবর (২০১৫), ঈগলের চোখ (২০১৬), "আসছে আবার শবর" (২০১৮)।[1] তিনটি চলচ্চিত্রই দর্শক-সমালোচকদের কাছে সমাদৃত হয়েছে।
শবর দাশগুপ্ত | |
---|---|
![]() চলচ্চিত্রে শবর চরিত্রে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় | |
প্রথম উপস্থিতি | ঋণ |
শেষ উপস্থিতি | ঈগলের চোখ |
স্রষ্টা | শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় |
চরিত্রায়ণ | শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় |
উচ্চতা | প্রায় সাড়ে ৫ ফুট |
তথ্য | |
লিঙ্গ | পুরুষ |
পেশা | পুলিশ গোয়েন্দা |
শিরোনাম | দাশগুপ্ত |
ধর্ম | হিন্দু ধর্ম |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
চরিত্র বৈশিষ্ট্য
শবর কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা কর্মকর্তা, লালবাজারে অফিস হওয়ায় তাকে 'লালবাজারের গোয়েন্দা'ও বলা হয়। মাঝারি উচ্চতার হলেও সে প্রবল শক্তিশালী এবং ভয়ডরহীন। পুলিশের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, যেমন অস্ত্রচালনা বা নিরস্ত্র যুদ্ধের দক্ষতা তার আছে। সরকারি গোয়েন্দা হওয়ায় বিভিন্ন সূত্র ও মাধ্যমে সহজে সে অনুসন্ধান করতে ও তথ্য-উপাত্ত (সুরতহাল প্রতিবেদন, অপরাধীদের খোঁজখবর) পেতে পারে। সে মূলত পুলিশী তদন্ত ও জেরার মাধ্যমে অপরাধীদেরকে আটকে দেয়। উল্লেখ্য শবর কাহিনীগুলোতে ন্যারেটিভ বা কাহিনীবর্ণনার চেয়ে সংলাপ বেশি থাকে এবং কখনোবা পুরো গল্পই সংলাপ-নির্ভর হয়। অনেক সময় তার সহকারী হিসেবে থাকে নন্দ, গল্পে জানা যায় সে জগবন্ধু ইনস্টিটিউশনের বাংলা মাধ্যমে শিক্ষিত ও ইংরেজিতে কাঁচা।
— শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রহস্য সমগ্র (ভূমিকা)[2]
ব্যক্তিজীবনে শবর অবিবাহিত, মদ খায় না, ধূমপান করে না। লেখকের মতে বাইরে শবরের "পাথুরে চরিত্র, নির্বিকার হাবভাব এবং আবেগহীন আচরণ" দেখা গেলেও ভেতরে সে একজন সংবেদনশীল মানুষ। লেখক "ইচ্ছে করেই তাকে সব ধরনের মানুষী দুর্বলতা থেকে মুক্ত" রেখেছেন।[2]
প্রকাশনা
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজারের শারদীয় সংখ্যায় লেখার অনুরোধ শবর চরিত্রটি সৃষ্টি করেন। প্রথম শবর উপন্যাস ঋণ গ্রন্থাকারে বের করে আনন্দ পাবলিশার্স ১৯৯৫ সালে। পরের কয়েকটি শবর কাহিনীও তারা প্রকাশ করে, কিছু বেরোয় বিভিন্ন সাহিত্য সাময়িকীতে। আনন্দ পাবলিশার্স পরবর্তীতে শীর্ষেন্দুর অন্য দুয়েকটি রহস্যকাহিনী এবং শবরের কাহিনীগুলো একত্রে রহস্য সমগ্র শিরোনামে গ্রন্থিত করে। এতে অন্তর্ভুক্ত শবর কাহিনীগুলো হলো:
|
|
চলচ্চিত্রায়ণ
২০১৫ সালে অরিন্দম শীল প্রথম শবর কাহিনী ঋণ অবলম্বনে তৈরি করেন রহস্য-থ্রিলার চলচ্চিত্র এবার শবর।[3] এতে শবর রূপে অভিনয় করেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এবং প্রধান নারী চরিত্রে ছিলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। চলচ্চিত্রটি দর্শকপ্রিয়তার পাশাপাশি সমালোচকদের কাছেও প্রশংসা লাভ করে।
পরের বছর অরিন্দম শীলেরই পরিচালনায় ঈগলের চোখ উপন্যাস থেকে নির্মিত হয় এর সিক্যুয়েল ঈগলের চোখ।[4] শবর হিসেবে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সাথে এবার প্রধান নারী চরিত্রে ছিলেন বাংলাদেশী অভিনেত্রী জয়া আহসান। ব্যবসাসফল এই চলচ্চিত্রটিও গড়পড়তা ভালো রেটিং পায়।[5]
২০১৮ সালে অরিন্দম শীলেরই পরিচালনায় আরেকটি সিক্যুয়েল "আসছে আবার শবর" মুক্তি পায় ৷শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের প্রজাপতির মৃত্যু ও পুনর্জন্ম নামের গল্প থেকে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র
- "Eagoler Chokh Movie Reviews, Stills & Wallpapers - Sulekha Movies"।
- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ও ২০১৫ p.৬।
- "Ebar Shabor, Arindam Sil's second directorial venture all set for release"। Washington Bangla Radio (Blog)। ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪।
- Mitra, Prithvijit (৯ জানুয়ারি ২০১৫)। "Shabor sequel on the boar"। The Times of India।
- "A New Bengali Detective Is Here To Carry On The Legacy Of Feluda And Byomkesh!"। ১৯ আগস্ট ২০১৬।
- http://timesofindia.indiatimes.com/entertainment/bengali/movies/news/i-have-never-interacted-with-didi-with-a-desire-to-become-a-politician-arindam-sil/articleshow/56598014.cms
আরো পড়ুন
- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (২০১৫)। রহস্য সমগ্র। কলকাতা: আনন্দ পাবলিশার্স। আইএসবিএন 978-93-5040-542₩-0
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য)।