মুন্নী বেগম

মুন্নী বেগম বাংলার নবাব মীর জাফরের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন।[1]

মুন্নী বেগম
বাংলার নবাবের বেগম
বাংলা, বিহার এবং ওড়িশার নবাবের স্ত্রী
কার্যকালে২ জুন ১৭৫৭ - ২০ অক্টবর ১৭৬০ ২৫ জুলাই ১৭৭৩ - ১৭ জানুয়ারি ১৭৬৫
জন্ম১৭২০
বালকুন্দা, উত্তর প্রদেশ
মৃত্যু১০ জানুয়ারি ১৮১৩
মুর্শিদাবাদ, ভারত
সমাধিজাফরগঞ্জ সমাধিক্ষেত্র, মুর্শিদাবাদ
দাম্পত্য সঙ্গীমীর জাফর
বংশধরনাজিম উদ্দীন আলী খান
নাজাবত আলী খান
ধর্মশিয়া ইসলাম

প্রাথমিক জীবন

মুন্নী বেগম বালুকুন্দা,সিকান্দা,উত্তর প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন।তার মা তাকে ছোট বয়সেই বিশু নামক এক নর্তকীর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।বিশু তাকে নাচ শিখিয়ে তাকে নিজের নর্তকী দলের সদস্য করে নেয়।নর্তকীর দলটি ভারতের বিভিন্ন রাজপ্রাসাদে নৃত্য দেখাতো।তিনি তার সৌন্দর্যের জন্য খুব সহজেই সকলের নজর কাড়তে সক্ষম ছিলেন।[2]

পরবর্তী জীবন

বাংলার নবাব পরিবারের সদস্য ঘসেটি বেগম নওয়াজিস মোহাম্মদ খানের পালকপুত্র একরামুদ্দৌলার বিবাহ অনুষ্ঠানে মুন্নী বেগমদের নর্তকী দল আসে।বিয়ের আরো সুযোগের আশায় দলটি মুর্শিদাবাদেই থেকে যায়।মুন্নী বেগম সবচেয়ে সুন্দরী হওয়ার কারণে আলীবর্দি খানের প্রধান সেনাপতি মীর জাফরের নজর কাড়ে।মীর জাফর তাকে তার হারেমে নিয়ে যায়।চতুর মুন্নী বেগম খুব তাড়াতাড়ি হারেমের প্রধান হয়ে ওঠে।মীর জাফরের কাছে তার প্রথম স্ত্রী শাহ খানমের থেকেও প্রিয় হয়ে ওঠে।পলাশীর যুদ্ধে রবার্ট ক্লাইভ সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করলে মীর বাংলার নবাব হয় এবং মুন্নী বেগম নবাব-স্ত্রী হন।৫ ফেব্রুয়ারি ১৭৬৫ তারিখে মীর জাফর মারা গেলে তিনি বিধবা হন। মুন্নী বেগমের রবার্ট ক্লাইভের সাথে সুসম্পর্ক ছিলো।রবার্ট ক্লাইভ ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে সাহায্য করার ওয়াদা করেন।টাকা দেয়ার ফলে তার পুত্রদের মসনদে বসা নিশ্চিত হয়।তিনি নবাব পরিবারের সবচেয়ে প্রভাবশালী মহিলা সদস্য হন।তিনি সম্পত্তি ও রাজপ্রাসাদের সবকিছু দেখভাল করতেন।তার পুত্র নাজিম উদ্দিন আলী খান নবাব হলে তার প্রভাব আরো বেড়ে যায়।১৭৬৬ সালে সে মারা গেলে আরেকপুত্র নজাবত আলী খান নবাব হয়।১৭৭০ সালে সেও মারা গেলে বাব্বু বেগমের পুত্র আশরাফ আলী খান নবাব হয়।যার ফলে রাজবাড়িতে তার প্রভাব কমে বাব্বু বেগমের প্রভাব বেড়ে যায়।তারপর তিনি নায়েব নাজিম ও রেজা খানকে দুর্নীতির অভিযোগে সরিয়ে দিতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে সাহায্য করেন।রাণী ভবাণী তাকে পালকি উপহার দেয় যা বহন করতে ত্রিশ জন লোক লাগে।ত্রিশজন চাকরের খরচ দিতে একটি জমিও দেন।[3][4][5]

মৃত্যু

১০ জানুয়ারি ১৮১৩ সালে ৯৩ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।তার মৃত্যুর জন্য ফোর্ট উইলিয়ামে ইউনিয়ন জ্যাক অর্ধ উত্তোলন এবং ৯০ টিটি গুলি চালানো হয় হয়।তাকে তার স্বামী মীর জাফরের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে কবর দেয়া হয়।[6]

তথ্যসূত্র

  1. Aftab, Tahera (১৯ অক্টোবর ২০১৮)। "Inscribing South Asian Muslim Women: An Annotated Bibliography & Research Guide"। BRILL Google Books-এর মাধ্যমে।
  2. "Munni Begum - Banglapedia"en.banglapedia.org
  3. Khan, Abdul Majed (৩ ডিসেম্বর ২০০৭)। "The Transition in Bengal, 1756-75: A Study of Saiyid Muhammad Reza Khan"। Cambridge University Press Google Books-এর মাধ্যমে।
  4. Banerjee, A. C. (১৯ অক্টোবর ১৯৮৩)। "English Law in India"। Abhinav Publications Google Books-এর মাধ্যমে।
  5. McLane, John R. (২৫ জুলাই ২০০২)। "Land and Local Kingship in Eighteenth-Century Bengal"। Cambridge University Press Google Books-এর মাধ্যমে।
  6. "The Tombs of Murshidabad"। ৮ মার্চ ২০০৮।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.