ভূত
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, ভূত, প্রেতাত্মা বা অশরীরী হল মৃত ব্যক্তির আত্মা যা জীবিত ব্যক্তিদের সামনে দৃশ্য, আকার গ্রহণ বা অন্য কোনো উপায়ে আত্মপ্রকাশ করতে সক্ষম। ভৌতিক অভিজ্ঞতার গল্প প্রায়শই শোনা যায়। এই সকল বিবরণীতে ভূতকে নানাভাবে বর্ণনা করা হয়েছে: কখন অদৃশ্য বা অস্বচ্ছ বায়বীয় সত্ত্বায়, কখনও বা বাস্তবসম্মত সপ্রাণ মানুষ বা জীবের আকারে। প্রেতাত্মার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে ভবিষ্যদ্বাণী করার বিদ্যাকে নেক্রোম্যান্সি বা কালো জাদু বলা হয়ে থাকে।

প্রাক-শিক্ষিত সংস্কৃতিগুলোর সর্বপ্রাণবাদ ও পূর্বপুরুষ পূজার মধ্যে ভূতের প্রথম বিবরণ পাওয়া যায়। সেযুগে কিছু নির্দিষ্ট ধর্মীয় প্রথা, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, ভূত-তাড়ানো অনুষ্ঠান ও জাদু অনুষ্ঠান আয়োজিত হত মৃতের আত্মাকে তুষ্ট করার জন্য। প্রচলিত বর্ণনা অনুযায়ী, ভূতেরা একা থাকে, তারা নির্দিষ্ট কিছু স্থানে ঘুরে বেড়ায়, জীবদ্দশায় যেসকল বস্তু বা ব্যক্তির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিল সেগুলিকে বা তাদের তাড়া করে ফেরে। তবে ভূত বাহিনী, ভৌতিক ট্রেন, ভৌতিক জাহাজ এমনকি ভৌতিক জীবজন্তুর কথাও শোনা যায়।[1][2]
মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আত্মা দেহত্যাগ করে। জীবাত্মা অবিনশ্বর। তবে কখনো কখনো জীবিত মানুষের সামনে আকার ধারন করে। এটি পূরাণভিত্তিক একটি আধিভৌতিক বা অতিলৌকিক জনবিশ্বাস। প্রেতাত্মা বলতে মৃত ব্যক্তির প্রেরিত আত্মাকে বোঝায় ।
সাধারণের বিশ্বাস কোনো ব্যক্তির যদি খুন বা অপমৃত্যু(যেমন: সড়ক দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা ইত্যাদি) হয় তবে মৃত্যুর পরে তার হত্যার প্রতিশোধের জন্য প্রেতাত্মা প্রেরিত হয় । বিভিন্ন ধরনের বই ও প্রবন্ধ ও রয়েছে এ সম্পর্কে । এসব বই বা গল্প কে বলা হয় ভৌতিক বই বা ভৌতিক গল্প ।
বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতিতে ভূতের অস্তিত্ব বিশ্বাস করা হয়। আবার কিছু ধর্মে করা হয় না, যেমন ইসলাম বা ইহুদী ধর্মে। এসব ধর্মাবলম্বীদের মতে মানুষের মৃত্যুর পর তার আত্মা চিরস্থায়ীভাবে পরলোকগমন করে আর ইহলোকে ফিরে আসে না।
তথ্যসূত্র
- Hole, pp. 150-163
- Daniel Cohen (1994) Encyclopedia of Ghosts. London, Michael O' Mara Books: 8