ভবদেব ভট্ট

ভবদেব ভট্ট প্রাচীন বঙ্গদেশের একজন সুবিখ্যাত ধর্মশাস্ত্র রচয়িতা ছিলেন। তিনি অর্থশাস্ত্র, আয়ুর্বেদ, অস্ত্রবেদ, গণিতসিদ্ধান্ত, জ্যোতিষ ফলসংহিতা, ব্রহ্মাদ্বৈত দর্শন প্রভৃতি বিষয়ে সুপন্ডিত ছিলেন।

পরিবার ও পেশা

ভবদেব ভট্টের পিতামহ আদিদেব বঙ্গদেশের রাজার সন্ধিবিগ্রহিক ছিলেন। ভবদেব ভট্টের পিতার নাম ছিল গোবর্ধন এবং মাতার নাম ছিল সাঙ্গোকা। তিনি বর্মণরাজ হরিবর্মার মহাসন্ধিবিগ্রহিক মন্ত্রী ছিলেন। তিনি রাঢ় অঞ্চলের সিদ্ধল গ্রামের অধিবাসী একজন সাবর্ণ গোত্রের ব্রাহ্মণ ছিলেন।[1]:৬১৪

রচনা

বাচস্পতি রচিত ভবদেব প্রশস্তি অনুসারে ভবদেব ভট্ট হোরাশাস্ত্র ও ধর্মশাস্ত্র সম্বন্ধে একটি করে গ্রন্থ রচনা করেন এবং ভট্টোক্ত বা কুমারিলোপ্ত নীতি অনুসরণ করে মীমাংসা সম্বন্ধে তৌতাতিতমততিলক নামে একখানি গ্রন্থ রচনা করেন। কিন্তু পরবর্তীকালে ধর্মশাস্ত্র সম্বন্ধে ব্যবহারতিলক, প্রায়শ্চিত্তপ্রকরণ ও ছান্দোগ্যপ্রকরণ নামক তার তিনখানা রচিত গ্রন্থ সম্বন্ধে জানা গেছে। এর মধ্যে ব্যবহারতিলক গ্রন্থের কোন পুঁথি খুঁজে পাওয়া যায়নি, কিন্তু রঘুনন্দন, মিত্রমিশ্র ও বর্ধমান নামক তিন স্মার্তের রচনায় এই গ্রন্থ থেকে আলোচনা করা হয়েছে। প্রায়শ্চিত্তপ্রকরণ গ্রন্থে ভবদেব ভট্ট তিনি ছয় প্রকার অপরাধ ও তার প্রায়শ্চিত্ত সম্বন্ধে আলোচনা করেছেন ও এই গ্রন্থ সম্বন্ধে বেদাচার্য, নারায়ণভট্ট ও গোবিন্দানন্দের মত বিখ্যাত ধর্মশাস্ত্ররচয়িতারা আলোচনা করেছেন। ছান্দোগ্যপ্রকরণ গ্রন্থে সামবেদীয় ব্রাহ্মণদের গর্ভাধান, পুংসবন, সীমান্তোন্নয়ন প্রভৃতি ষোল প্রকার সংস্কার সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে। ভবদেব ভট্ট রচিত হোরাশাস্ত্র সম্বন্ধে কোন গ্রন্থ এখনো পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।[1]:৬১৫

তথ্যসূত্র

  1. নীহাররঞ্জন রায়, বাঙ্গালীর ইতিহাস – আদি পর্ব, ষষ্ঠ সংস্করণ, মাঘ ১৪১৪, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা-৭০০০৭৩ আইএসবিএন ৮১-৭০৭৯-২৭০-৩
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.