বেগুন ভর্তা
বেগুন ভর্তা হল একপ্রকার বাঙালি খাবার। এতে বেগুন আগুনের আঁচে পুড়িয়ে তেল, লবণ, পেয়াজ, মরিচ সহ অন্যন্য উপদান সহযোগে তৈরি একশ্রেণীর খাদ্য।[1] বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানে বেগুন ভর্তা খাওয়া হয় তবে অঞ্চলভেদে এটা তৈরির পদ্ধতি এবং খাওয়ার রীতি কিছুটা ভিন্ন হয়। এটা প্রাথমিকভাবে বেগুন মিনমিনে মিহি করে প্রস্তুত করা একটি নিরামিষ খাবার। এটি কাঠকয়লা বা সরাসরি আগুনের ওপরে ভাজা হয়। এর ফলে এই ভর্তায় ধোঁয়াটে গন্ধ থাকে। প্রথাগতভাবে, এ খাবার প্রায়ই একটি দেশীয় খাবারের সঙ্গে খাওয়া হয়( বিশেষ করে পান্তা ও রুটি)। পাকিস্তান ও বাংলাদেশে বেগুন ভর্তা একটি জনপ্রিয় রন্ধনপ্রণালীর অংশ। তবে ভারতে এটা বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ওড়িশাসহ অনেক রাজ্যের জনপ্রিয় খাদ্য। এ খাবারের স্থানীয় ভাষা উপর নির্ভর করে অনেক নাম আছে (হিন্দি: "बैंगन का भरता", গুজরাটি: odo, মারাঠি: wangyacha bharit)।
বেগুন ভর্তা | |
উৎপত্তিস্থল | ![]() ![]() ![]() |
---|---|
পরিবেশন | গরম ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয় |
প্রধান উপকরণ | বেগুন, তেল, পেঁয়াজ, মরিচ, লবণ |
![]() ![]() |
উপকরনসমূহ
বেগুন ভর্তা করতে প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো হলঃ
- বেগুন
- সরিষার তেল
- পেঁয়াজ কুচি
- কাঁচা মরিচ/পাকা মরিচ
- ধনে পাতা
- লবণ
- অন্যান্য উপকরণ
প্রস্তুতপ্রণালী
প্রথমে চুলা জ্বালিয়ে দিয়ে গোটা বেগুন আগুনের উপর ধরতে হয়। এসময় বেগুনকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পোঁড়াতে হয় যেন সমভাবে পুড়তে পারে। বেগুন পোঁড়াতে গেলে দেখা যাবে উপরের ত্বক কালচে হয়ে বেগুন নরম হয়ে গেলে চুলা বন্ধ করতে হয়। এবার কালো ত্বক তুলে ফেলতে হয়। এপর্যায়ে কাঁচা মরিচ কুচি ও পেঁয়াজ কুচি তেলে হালকা আঁচে ভাজা ভাজা করে নিতে হয়। এছাড়া পাকা মরিচও ব্যবহার করা হয়। এবার একটি বাটিতে মরিচ, পেঁয়াজ চটকে নিয়ে পোঁড়া বেগুন মাখাতে হবে। অনেকে বেগুন ভর্তায় ধনিয়া পাতা, সিদ্ধ ডিম, টমেটো ইত্যাদি ব্যবহার করেন।
পরিবেশন প্রক্রিয়া
বাঙালিরা সাধারণত খাবারের সাথে তরকারী হিসাবে এটি ব্যবহার করে। এছাড়া পহেলা বৈশাখ সহ অন্যন্য কিছু বাঙালি উৎসবে বেগুন ভর্তা পরিবেশিত হয়।
বিভিন্নতা
- রুটি ও ডাল দিয়ে বেগুন ভর্তা
- লিট্টি চোকা, লিট্টি সাথে বেগুন ভর্তা , একটি উত্তর ভারতীয় খাবার
- নাগপুর এর বেগুন ভর্তা
তামিল নাড়ু দক্ষিণ রাজ্য, তামিলদের তৈরি এই খাবারকে kathrikai thayir kothsu নামে ডাকা হয়। তার এ ভর্তা বানাতে বেগুন এবং সরিষা, লাল মরিচ এবং তিলের তেলের সঙ্গে মাখানো হয়। রেসিপির অন্তিম ধাপে মিশ্রণের সাথে দই (অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান দই) যোগ করা হয় এবং ধনে পাতার সাথে সস দিয়ে পরিবেশিত হয়।
ভোজপুরী ভাষী অঞ্চলে এ ধরনের উত্তরপ্রদেশের পূর্ব অংশে এবং পশ্চিমে বিহারে এটা বেইগান কা চোখা নামে পরিচিত।
গ্যালারী
- বেগুন ভর্তা
- বেগুন পোঁড়া ভর্তা
তথ্যসূত্র
- Jaffrey, M. – World of the East Vegetarian Cooking – Knopf (1983) আইএসবিএন ০-৩৯৪-৪০২৭১-৫