বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের একমাত্র ক্রীড়া শিক্ষাকেন্দ্র; যা সংক্ষেপে বিকেএসপি (BKSP - Bangladesh Krira Shikkha Pratisthan) নামে পরিচিত। ঢাকার অদূরে সাভারে এ প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। তবে সাভারের প্রধান কেন্দ্র ছাড়াও চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেটদিনাজপুরে রয়েছে বিকেএসপির আঞ্চলিক কেন্দ্র। বিকেএসপি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৬ সালে। বিকেএসপির মূল শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত। তবে স্নাতক (পাস) ও বিভিন্ন বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রিতেও কিছু শিক্ষাথীর ভর্তি করানো হয়।[1]

ইতিহাস

১৯৭৪ সালে ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিআইএস (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব স্পোর্টস) প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৭ সালে বিআইএস বাংলাদেশ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি সংস্থা হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ‘বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিকেএসপি’ নাম ধারণ করে। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে বাংলাদেশ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্বে থাকা মন্ত্রীকে প্রধান করে ১০ সদস্যের বোর্ড দ্বারা এটা পরিচালিত হয়। সেনাবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এই প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[2]

বিভাগসমূহ

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৭টি বিষয়ে ক্রীড়া বিষযে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। বিভাগগুলো হলো ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, শ্যুটিং, আর্চারি, জুডো, উশু, তায়কোয়ান্দো, অ্যাথলেটিকস, বাস্কেটবল, সাঁতার, জিমন্যাস্টিকস, বক্সিং, টেনিস, ভলিবল, কারাতেটেবিল টেনিস

ভর্তি যোগ্যতা

বিকেএসপিতে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় সপ্তম শ্রেণিতে। সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ রয়েছে ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, শ্যুটিং, আর্চারি, জুডো, উশু, তায়কোয়ান্দোঅ্যাথলেটিকসে। এ ছাড়া চতুর্থ ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয় সাঁতার, জিমন্যাস্টিকস, বক্সিংটেনিসে। শুধু বাস্কেটবল বিভাগে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। তবে বিশেষ ক্রীড়া যোগ্যতাসম্পন্ন খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে বয়স ও উচ্চতা শিথিল করা হয়।[3]

নির্বাচনপদ্ধতি

ভর্তি ইচ্ছুকদের প্রথমে বাছাই করা হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর তাদের নিয়ে সাত দিনের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা। আর সবশেষে নেওয়া হয় লিখিত পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষার বিষয় হলো: বাংলা, ইংরেজি ও গণিত। মানবণ্টন ক​​রলে দেখা যায়– শতকরা হিসাবে ৭০ ভাগ শারীরিক যোগ্যতা ও ক্রীড়া নৈপুণ্য, ১০ ভাগ ক্রীড়াবিজ্ঞান-সংক্রান্ত ব্যবহারিক পরীক্ষা, আর বাকি ২০ ভাগ লিখিত পরীক্ষা।[4]

স্নাতক ও ডিপ্লোমা কোর্স

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় প্রতিবছর ৬০ জন শিক্ষার্থী স্নাতক (পাস) এবং ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থী ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বিষয়ে ১০ মাসের ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। ক্রীড়াবিজ্ঞানের চারটি বিষয়ের ওপর এই ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এগুলো হলো এক্সারসাইজ ফিজিওলজি, স্পোর্টস সাইকোলজি, স্পোর্টস বায়োমেকানিকস ও সায়েন্স অব স্পোর্টস ট্রেনিং। ভর্তির যোগ্যতা চাওয়া হয় যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা সমমান ডিগ্রি। তবে এক্সারসাইজ ফিজিওলজি ও স্পোর্টস বায়োমেকানিকস বিষয়ে ভর্তির জন্য বিজ্ঞানে স্নাতক হতে হবে। আর স্পোর্টস সাইকোলজি বিষয়ে ভর্তি হতে চাইলে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। সায়েন্স অব স্পোর্টস ট্রেনিং বিষয়ে ভর্তি হতে চাইলে আবেদনকারীকে বিপিএড বা এমপিএড ডিগ্রিধারী হতে হবে।[5]

প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রম

বিকেএসপি’র আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হলো দেশজুড়ে প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রম পরিচালনা। এ লক্ষ্যে ট্যালেন্ট হান্ট কার্যক্রম পরিচালনা করে বিকেএসপি। এর মাধ্যমে সারাদেশ থেকে খুঁজে বের করা হয় সেরা খেলোয়াড়দের। এসব খেলোয়াড়দের আবার বিভিন্ন মেয়াদি প্রশিক্ষণ শেষে তাদের বিকেএসপিতে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়।

খ্যতিমান শিক্ষার্থী

তথ্যসূত্র

  1. Administrator। "::. Bangladesh Krira Shikkha Protishtan .::"bksp-bd.org
  2. Administrator। "::. Bangladesh Krira Shikkha Protishtan .::"bksp-bd.org
  3. http://www.bksp-bd.org/circullars/press.png
  4. "গন্তব্য এখন বিকেএসপি"প্রথম আলো। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
  5. "ক্রীড়াবিজ্ঞানে ডিপ্লোমা"প্রথম আলো। ২৪ মে ২০১৪।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.