বাগবের গণহত্যা

বাগবের গণহত্যাকাণ্ড হল ২০০০ সালের ২২ মে নিরস্ত্র বাঙালি হিন্দু শরণার্থীদের ওপর এনএলএফটি খ্রিস্টান জঙ্গিদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যাকাণ্ডের ঘটনা। ওই দিন বাঘবের শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ২৫ জন বাঙালি হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছিল।

বাগবের গণহত্যাকান্ড
স্থানবাগবের, ত্রিপুরা, ভারত
তারিখ২০ মে ২০০০ (UTC+৫:৩০)
লক্ষ্যবাঙালি হিন্দু
হামলার ধরনগণহত্যা
ব্যবহৃত অস্ত্ররাইফেল, গ্রেনেড
নিহত২৫
হামলাকারী দলএনএলএফটি জঙ্গিগোষ্ঠী

পটভূমি

ত্রিপুরা রাজ্যের পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার কল্যাণপুর থানার একটি গ্রাম বাগবের। এটি পশ্চিম গিলতলীতে পুলিশ স্টেশন থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।[1] ২০০০ সালের মে মাসে চলমান জাতিগত দাঙ্গার সময় বাগবের একটি শরণার্থী ক্যাম্পে কয়েক হাজার বাঙালি হিন্দু আশ্রয় নেয়। [2] ক্যাম্পটি নিরঞ্জন সরদারপাড়া সিনিয়র বেসিক স্কুল-এ অবস্থিত ছিল।

ঘটনাবলী

২০ মে বিকেলে বিকাল ৫টার দিকে প্রায় ৬০ এনএলএফটি জঙ্গিদের একটি আগ্নেয়অস্ত্রে সশস্ত্র দল বাগবের গ্রামে হামলা চালায়।[3] স্থানীয় সিপিআই (এম) নেতা আজয় ঘোষের বাড়িতে তারা গ্রেনেড ছুড়ে। হামলার খবর শুনে নিরঞ্জন সরদারপাড়া স্কুলের আশেপাশে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীরা কাঞ্চনপুরের দিকে পালিয়ে যেতে শুরু করে। উদ্বাস্তুদের পালিয়ে যাওয়া দেখে, এনএলএফটি জঙ্গিরা তাদের ওপর বন্দুকগুলি ছুড়ে। তিন উদ্বাস্তু অবিলম্বে নিহত হয়। এরপর জঙ্গিরা শরণার্থী ক্যাম্পে বন্দীদের লক্ষ্যবস্তু করেছিল, যেখানে তারা ১৬ জনকে হত্যা করেছিল এবং কয়েকজনকে আহত করেছিল। গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার সময় বাগবের সিআরপিএফ অফিসাররা কোন প্রতিবাদ করেনি। [4] ১৯ জন বাঙালি হিন্দু এই স্থানে নিহত হন এবং অন্যরা গুরুতরভাবে আহত হন। তাদের মধ্যে ছয়জন পরে মারা যান।

পরবর্তী ঘটনা

২১ মে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কল্যাণপুর থানায় রাতিয়া-দুর্গাপুরে তিনটি বাঙালি হিন্দুকে হত্যা করে সন্দেহভাজন এনএলএফটি বিদ্রোহীরা। তারপর বিদ্রোহীরা কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।[1]

গণহত্যার পর কল্যাণপুরের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ৩৩৩ পরিবারকে উত্তর কল্যাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে অমর কলোনিতে স্থানান্তরিত করা হয়। প্রতিটি পরিবারের তাদের বাড়ি নির্মাণের জন্য ২৪ টন এবং ২০০০ রুপি নগদ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। যাইহোক, উত্তর কল্যাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে কোনও ঋণ গ্রহণ করার অধিকার তাদের ছিল না। [5]

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "19 Bengalis killed in Tripura"Hindustan Times। ২২ মে ২০০০। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১২
  2. "SPOs in Tripura give Cong jitters"The Telegraph। ৫ জানুয়ারি ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১২
  3. "19 Killed in Tripura Massacre Rerun"The Telegraph। ২১ মে ২০০০। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১২
  4. Chaudhuri, Kalyan (২৩ মে ২০০০)। "Terror in Tripura"Frontline17। ১৫ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১২
  5. Gupta, Sujay (২ সেপ্টেম্বর ২০০৩)। "Tripura Diary Part III"Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১২
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.