প্রমথনাথ বসু

প্রমথনাথ বসু (১২ মে, ১৮৫৫ - ২৭ এপ্রিল, ১৯৩৫) একজন বাঙালি ভুতত্ববিদ, বিজ্ঞানী ও সমাজকর্মী। তিনি অভিনেতা ও নাট্যব্যক্তিত্ব মধু বসুর পিতা।

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা

অবিভক্ত ২৪ পরগনার গোবরডাঙার নিকট গৈপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতার নাম তারাপ্রসন্ন বসু। প্রাথমিক শিক্ষা খাঁটুরা আদর্শ বংগ বিদ্যালয়ে। কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজ থেকে এন্ট্রান্স ও এফ এ পাশ করে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন। গিলক্রাইস্ট বৃত্তি পেয়ে লন্ডন যান ১৮৭৪ সালে। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক হন এবং ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে রয়াল স্কুল মাইনসে'র পরীক্ষায় পাশ করেন।[1]

কর্মজীবন

প্রমথনাথ ১৮৮০ সালে দেশে ফিরে আসেন ও জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ায় কাজ করতে থাকেন। বিলেতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদী নেতাদের সাহায্য করতেন ও তাদের আশ্রয় দিতেন ইত্যাদি রাজনৈতিক কারনে কর্মক্ষেত্রে তার পদোন্নতি হয়নি। ১৯০৩ সালে তিনি পদত্যাগ করেন। কিছুদিন প্রেসিডেন্সি কলেজে ভূবিদ্যার অধ্যাপনা করেন। চাকরি জীবনে মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে ডাল্লি রাজহারা লৌহ খনি আবিষ্কার করে সুখ্যাতি পেয়েছিলেন। এই লৌহখনিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে ভিলাই কারখানা। ময়ূরভঞ্জ জেলায় লৌহখনির আবিষ্কার তার শ্রেষ্ঠ কীর্তি যার ফলে গড়ে ওঠে জামশেদপুর টাটা ইস্পাত কারখানা। জামশেদজি টাটাকে তিনিই পরামর্শ দেন ইস্পাত কারখানা স্থাপনে। রানীগঞ্জ, দার্জিলিং, আসামে কয়লা এবং সিকিমে তামার খনির অনুসন্ধান করেন। বর্মাতেও খনিজ অনুসন্ধান চালিয়েছেন। রাজনীতির ক্ষেত্রে গঠনমূলক কাজে অগ্রনী ছিলেন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে যোগদান করেছিলেন তিনি। বেঙ্গল টেকনিকাল ইনস্টিটিউটের (অধুনা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যক্ষ ও পরে পরিদর্শক হন। ভারতীয় শিল্প, বাণিজ্য বিস্তার, বাংলায় বিজ্ঞান চেতনা প্রসারে চেষ্টা করেছেন। তিনি কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটিরও সদস্য ছিলেন।[1]

রচনা

তিনি সারা জীবনে বহু প্রবন্ধ রচনা করেছেন। প্রমথনাথ বসু, 'বেঙ্গল একাডেমী অব লিটারেচার’ স্থাপন করেন যা পরবর্তীকালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সাথে সংযুক্ত হয়। এই সংস্থার লক্ষ্য ছিল পাঠ্যপুস্তকের বিষয় নির্বাচনে সহায়তা করা।[1] তার সাহিত্যচর্চার বিষয়বস্তু ছিল বিজ্ঞান শিক্ষা, সংস্কৃতি ও হিন্দু সভ্যতা। শেষ জীবনে ১৯৩২ থেকে ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি অমৃতবাজার পত্রিকায় নিজের জীবনস্মৃতিমূলক ধারাবাহিক প্রবন্ধ রচনা করেন।[2]

মৃত্যু

১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ এপ্রিল মারা যান প্রমথনাথ বসু

তথ্যসূত্র

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু, প্রথম খন্ড (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৩০৭, ৩০৮।
  2. "বসু, প্রমথনাথ"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০১৭
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.