পাহাড়ি তিতির

পাহাড়ি তিতির বা লালগলা বাতাই (বৈজ্ঞানিক নাম: Arborophila rufogularis) (ইংরেজি: Rufous-throated Partridge) ফ্যাজিয়ানিডি (Phasianidae) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত আর্বোরোফাইলা (Arborophila) গণের এক প্রজাতির ছোট তিতির বা বাতাই[1] এরা দক্ষিণদক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় পাখি। আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।[2] বাংলাদেশের ১৯৭৪[3] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[4]

পাহাড়ি তিতির
Arborophila rufogularis
পাহাড়ি তিতির
Arborophila rufogularis

ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত  (আইইউসিএন ৩.১)
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী জগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: পক্ষী
বর্গ: Galliformes
পরিবার: Phasianidae
উপপরিবার: Perdicinae
গণ: Arborophila
প্রজাতি: A. rufogularis
দ্বিপদী নাম
Arborophila rufogularis
(Blyth, 1850)

বিস্তৃতি

বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, চীন, লাওস, থাইল্যান্ডভিয়েতনাম পাহাড়ি তিতিরের প্রধান আবাসস্থল। এসব দেশের চিরসবুজ ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বন এদের পছন্দের আবাস।[2]

উপপ্রজাতি

পাহাড়ি তিতিরের মোট ছয়টি উপপ্রজাতি সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।[5] এরা হচ্ছে-

  1. A. r. annamensis (Robinson & Kloss, 1919): এর মূল বাসস্থান দক্ষিণ ও মধ্য ভিয়েতনাম।
  2. A. r. euroa (Bangs & J. C. Phillips, 1914): এর মূল আবাসস্থল দক্ষিণ চীন (হাইনান প্রদেশ) থেকে উত্তর লাওস পর্যন্ত
  3. A. r. guttata Delacour & Jabouille, 1928: এর মূল আবাসস্থল মধ্য ভিয়েতনাম
  4. A. r. intermedia (Blyth, 1855): আসামে ব্রহ্মপুত্র নদীর দক্ষিণ থেকে উত্তর মিয়ানমার (আরাকান প্রদেশ) পর্যন্ত এদের বিস্তৃতি
  5. A. r. rufogularis (Blyth, 1849): ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকে আসাম, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান এর মূল বাসস্থান
  6. A. r. tickelli (Hume, 1880): দক্ষিণ ও পূর্ব মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও দক্ষিণ-পশ্চিম লাওস।

বিবরণ

দেখতে এরা বটেরার মত, তবে বড়। পিঠ হলদে সবুজাভ ধূসর। পিঠের দিকে একটু লালচে ভাবও রয়েছে। পেট ও পার্শ্বদেশ ধূসর, রক্তিম নয়। চোখ ও পা লালচে। পিঠ আঁশের মত পালক দ্বারা আবৃত। ডানার পালকে দু'টি সাদা ও কালো গোলাকার ফোঁটার ডোরা থাকে। এছাড়া ডানার পালকে সাদা ছোট ছোট ফোঁটা দেখা যায়। গলায় একটু কালো অংশ দেখা যায় যাতে লাল ছোট ছোট ফোঁটা থাকে। চোখ কালো। চোখের চারপাশে হালকা সাদা বর্ণের মোটা দাগ থাকে। এদের দৈর্ঘ্য কমবেশি ২৭ সেন্টিমিটার।[1]

অস্তিত্বের সংকট

ব্যাপকহারে আবাসন ধ্বংস ও বনাঞ্চল কেটে চাষাবাদের ফলে পাহাড়ি তিতিরের অস্তিত্ব সর্বত্রই হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া মাংসের জন্য শিকারও এদের অস্তিত্ব-ঝুঁকির অন্যতম কারণ।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. বাংলাদেশের পাখি, রেজা খান, বাংলা একাডেমী, ঢাকা (২০০৮), পৃ. ৩২৯।
  2. Arborophila rufogularis, The IUCN Red List of Threatened Species এ পাহাড়ি তিতির বিষয়ক পাতা।
  3. জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.), বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: পাখি, খণ্ড: ২৬ (ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০০৯), পৃ. ৭।
  4. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৪৮
  5. Rufous-throated Hill-partridge (Arborophila rufogularis), The Internet Bird Collection এ পাহাড়ি তিতির বিষয়ক পাতা।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.