জর্জ মিলার (পরিচালক)

জর্জ মিলার এও (ইংরেজি: George Miller; জন্ম: ৩রা মার্চ, ১৯৪৫) হলেন অস্ট্রেলীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রাক্তন চিকিৎসক। তিনি তার ম্যাড ম্যাক্স ফ্র্যাঞ্চাইজি - দ্য রোড ওয়ারিয়রফিউরি রোড চলচ্চিত্রের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। ফিউরি রোড চলচ্চিত্রটি সর্বকালের সেরা মারপিঠধর্মী চলচ্চিত্র হিসেবে স্বীকৃত। ম্যাড ম্যাক্স ফ্র্যাঞ্চাইজি ছাড়াও তিনি আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে একাডেমি পুরস্কার-বিজয়ী বেবহ্যাপি ফিট চলচ্চিত্র ধারাবাহিক।

জর্জ মিলার

এও
George Miller
২০১৭ সালে সিডনিতে মিলার
জন্ম (1945-03-03) ৩ মার্চ ১৯৪৫
জাতীয়তাঅস্ট্রেলীয়
যেখানের শিক্ষার্থীনিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাচলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, চিকিৎসক
কার্যকাল১৯৭০–বর্তমান
পরিচিতির কারণম্যাড ম্যাক্স, হ্যাপি ফিট, বেব
দাম্পত্য সঙ্গীস্যান্ডি গোর (বি. ১৯৮৫; বিবাহবিচ্ছেদ ১৯৯২)
মার্গারেট সিক্সেল (বি. ১৯৯৫)
সন্তান
পুরস্কারপূর্ণ তালিকা

মিলার কেনেডি মিলার মিচেল প্রযোজনা কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা। এটি পূর্বে কেনেডি মিলার ও ডক্টর ডি স্টুডিওজ নামে পরিচিত ছিল। তার ছোট ভাই বিল মিলার এবং ডগ মিচেল মিলারের প্রযোজনা সহযোগী বাইরন কেনেডি মারা যাওয়ার পর মিলারের কর্মজীবনের প্রায় সবকয়টি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করে।

২০০৬ সালে মিলার হ্যাপি ফিট চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি আরও পাঁচটি একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। যার মধ্যে রয়েছে ১৯৯২ সালের লরেঞ্জোস ওয়েল চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য, ১৯৯৫ সালের বেব চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রশ্রেষ্ঠ উপযোগকৃত চিত্রনাট্য, এবং ২০১৫ সালের ফিউরি রোড চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও শ্রেষ্ঠ পরিচালনার পুরস্কার।

প্রারম্ভিক জীবন

মিলার ১৯৪৫ সালের ৩রা মার্চ কুইন্সল্যান্ডের ব্রিসবেনে এক গ্রিক অভিবাসী পিতামাতার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা দিমিত্রি (জিম) কাস্ত্রিসিওস এবং মাতা এঞ্জেলা বালসন। দিমিত্রি গ্রিক দ্বীপ কাইথিরা থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন এবং অ্যাঞ্জেলিক ধর্ম গ্রহণ করে তার উপনাম মিলিওটিস থেকে মিলারে পরিবর্তন করে অস্ট্রেলিয়া আসেন। বালসনের পরিবার ছিল আনাতোলিয়ার গ্রিক শরণার্থী, ১৯২৩ সালের আদমশুমারিতে তাদের নাম বাদ পড়ে।[1] জিম ও এঞ্জেলা দম্পতি বিয়ে করে কুইন্সল্যান্ডের চিনশিলিয়ায় বসবাস শুরু করেন। তাদের চার পুত্র: দুই জমজ জর্জ ও জন, এবং ক্রিস ও বিল মিলার

কর্মজীবন

মিলারে প্রথম কাজ হল স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ভায়োলেন্স ইন সিনেমা: পার্ট ওয়ান (১৯৭১)। সমালোচক, দর্শক ও পরিবেশকেরা এই চলচ্চিত্রটির এতো প্রশংসা করেন যে চলচ্চিত্রে সহিংসতা দেখানোর পরও এটি ১৯৭২ সালে সিডনি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রামাণ্যচিত্র বিভাগে সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করে।[2] ১৯৭৯ সালে তিনি ম্যাড ম্যাক্স চলচ্চিত্র দিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। ১৯৭৫ সালে মিলার এবং জেমস ম্যাককসল্যান্ড এই ছবির পাণ্ডুলিপি রচনা করেন। কেনেডি মিলার প্রডাকশন্স ছবিটি স্বাধীনভাবে অর্থায়ন করে এবং ছবিটি মুক্তির পর তা আন্তর্জাতিক সফলতা অর্জন করে।[3] ফলে তিনি ছবিটির আরও অনুবর্তী পর্ব নির্মাণ করে। ১৯৮০-এর দশকে নির্মিত দুটি অনুবর্তী পর্ব দি রোড ওয়ারিয়র (১৯৮১) ও ম্যাড ম্যাক্স: বিয়ন্ড থান্ডারডোম (১৯৮৫) ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন মেল গিবসন এবং ৩০ বছর পর ২০১৫ সালে ম্যাড ম্যাক্স: ফিউরি রোড ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন টম হার্ডি

ম্যাড ম্যাক্স চলচ্চিত্র ধারাবাহিকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণের মাঝামাঝি সময় মিলার টোয়ালাইট জোন: দ্য মুভি (১৯৮৩) চলচ্চিত্রের অংশ নাইটমেয়ার অ্যাট টোয়েন্টি থাউজেন্ড ফিট পরিচালনা করেন।[4] এছাড়া তিনি অস্ট্রেলীয় টেলিভিশন মিনি ধারাবাহিক দ্য ডিসমিসাল (১৯৮৩) ও দ্য কোরা ব্রেকআউট (১৯৮৪) সহ-প্রযোজনা ও সহ-পরিচালনা করেন।

মিলার লরেঞ্জোস ওয়েল (১৯৯২) দিয়ে পুনরায় পরিচালনায় ফিরে আসেন। নিক এনরাইটের সাথে তিনি যৌথভাবে এর চিত্রনাট্য রচনা করেন[5] এবং শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ১৯৯৩ সালে কার্ল স্যাগান ও অ্যান ড্রুয়ান রচিত গল্প অবলম্বনে কনট্যাক্ট চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন।[6] এক বছর কাজ করার পর ওয়ার্নার ব্রস. ও মিলারের যৌথ সম্মতিক্রমে তারা এই চুক্তি থেকে বের হয়ে যান এবং বাকি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন রবার্ট জেমেকিস[7] ১৯৯৫ সালে মিলার হাস্যরসাত্মক-নাট্যধর্মী বেব চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য রচনা করেন এবং ১৯৯৮ সালে এর অনুবর্তী পর্ব বেব: পিগ ইন দ্য সিটি রচনা ও পরিচালনা করেন।[8] বেব চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য রচনার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ উপযোগকৃত চিত্রনাট্য বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

মিলার অ্যান্টার্কটিকার পেঙ্গুইনদের জীবন নিয়ে সঙ্গীতধর্মী মহাকাব্যিক অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র হ্যাপি ফিট নির্মাণ করেন।[9] ওয়ার্নার ব্রস. প্রযোজিত চলচ্চিত্রটি ২০০৬ সালের নভেম্বরে মুক্তি পায় এবং বক্স অফিসে সফলতা লাভ করে। এই চলচ্চিত্রটি মিলারকে তার চতুর্থ একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন এনে দেয় এবং শ্রেষ্ঠ অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র বিভাগে মিলার তার প্রথম একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।

চলচ্চিত্রপঞ্জী

চলচ্চিত্র

বছর চলচ্চিত্র ভূমিকা টীকা
পরিচালক লেখক প্রযোজক অন্যান্য
১৯৭৯ ম্যাড ম্যাক্স হ্যাঁ হ্যাঁ না না
১৯৮০ দ্য চেইন রিয়্যাকশন না না হ্যাঁ হ্যাঁ গাড়ি পিছু নেওয়া দৃশ্যের পরিচালক (অনুল্লেখ্য)
১৯৮১ দি রোড ওয়ারিয়র হ্যাঁ হ্যাঁ না হ্যাঁ অতিরিক্ত সম্পাদক
১৯৮৩ টোয়ালাইট জোন: দ্য মুভি হ্যাঁ না না না নাইটমেয়ার অ্যাট ২০,০০০ ফিট অংশ
১৯৮৫ ম্যাড ম্যাক্স বিয়ন্ড থান্ডারডোম হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ না জর্জ অজিলভির সাথে সহ-পরিচালনা
১৯৮৭ দ্য উইচেস অব ইস্টউইক হ্যাঁ না না না
দ্য ইয়ার মাই ভয়েস ব্রোক না না হ্যাঁ না
১৯৮৯ ডেড কাম না না হ্যাঁ হ্যাঁ ২য় ইউনিট পরিচালক
১৯৯১ ফ্লার্টিং না না হ্যাঁ না
১৯৯২ লরেঞ্জোস ওয়েল হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ না
১৯৯৫ বেব না হ্যাঁ হ্যাঁ না
১৯৯৬ ভিডিও ফুল ফর লাভ না না হ্যাঁ না প্রামাণ্যচিত্র
১৯৯৭ ফোর থাউজেন্ড ইয়ার্স অব ড্রিমিং হ্যাঁ হ্যাঁ না হ্যাঁ প্রামাণ্যচিত্র; উপস্থাপক
১৯৯৮ বেব: পিগ ইন দ্য সিটি হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ না
২০০৬ হ্যাপি ফিট হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ না
২০১১ হ্যাপি ফিট টু হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ না
২০১৫ ম্যাড ম্যাক্স: ফিউরি রোড হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ না
নির্ধারিত
হয়নি
ম্যাড ম্যাক্স: দ্য ওয়েস্টল্যান্ড হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ না

টেলিভিশন

বছর টিভি অনুষ্ঠান ভূমিকা টীকা
পরিচালক লেখক প্রযোজক
১৯৮৩ দ্য ডিসমিসাল হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ টিভি মিনি ধারাবাহিক
১৯৮৪ দ্য লাস্ট ব্যাস্টিওন হ্যাঁ না না টিভি মিনি ধারাবাহিক
বডিলাইন না হ্যাঁ হ্যাঁ টিভি মিনি ধারাবাহিক
১৯৮৯ ব্যাংকক হিল্টন না না হ্যাঁ টিভি মিনি ধারাবাহিক

তথ্যসূত্র

  1. "George Miller" (ইংরেজি ভাষায়)। Kythera-Family.net। ২২ মে ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১৮
  2. Film Ink Magazine, Geoff Stanton, November 2008, page 60
  3. Canby, Vincent (২৪ জুন ১৯৮৩)। "'Twilight Zone' is Adapted to the Big Screen" (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৮
  4. Pender, Anne; Lever, Susan (৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৮)। Nick Enright: An Actor's Playwright (ইংরেজি ভাষায়)। Amsterdam: Rodopi। পৃষ্ঠা 23। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৮
  5. Head, Tom (৫ জানুয়ারি ২০০৬)। Conversations with Carl Sagan (ইংরেজি ভাষায়)। Jackson, Mississippi: University Press of Mississippi। পৃষ্ঠা 89।
  6. Chitwood, Adam (৮ মে ২০১৫)। "George Miller Talks His Version of CONTACT; Likens It to INTERSTELLAR"Collider.com (ইংরেজি ভাষায়)। কমপ্লেক্স। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৮
  7. Cox, Dan (১২ নভেম্বর ১৯৯৭)। "U turns production corne"ভ্যারাইটি (ইংরেজি ভাষায়)। Penske Media Corporation। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৮
  8. "The penguin suite"দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ২ ডিসেম্বর ২০০৬।

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:জর্জ মিলার

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.