চিনা তিতির

চিনা তিতির (বৈজ্ঞানিক নাম: Francolinus pintadeanus) (ইংরেজি: Chinese Francolin) ফ্যাসিয়ানিডি গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত ফ্র্যাঙ্কোলিনাসগণের এক প্রজাতির বুনো তিতির। দক্ষিণদক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে এদের বিস্তৃতি। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস, প্রায় ২০ লাখ ৭০ হাজার বর্গ কিলোমিটার।[1] গত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা বাড়েনি আবার কমেও যায়নি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা ন্যুনতম বিপদযুক্ত বলে ঘোষণা করেছে।[2] সমগ্র পৃথিবীতে আনুমানিক ১০ হাজার থেকে ১ লাখ চিনা তিতির রয়েছে। চিনা তিতির বহু জায়গায়ই দেখা গেলেও খুব লাজুক আর লুকিয়ে পড়ায় ওস্তাদ বলে এদের সংখ্যা সম্বন্ধে খুব ভালভাবে নিশ্চিত হওয়া যায় নি।[2]

চিনা তিতির
Francolinus pintadeanus
চিনা তিতির
Francolinus pintadeanus

ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত  (আইইউসিএন ৩.১)
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী জগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: পক্ষী
বর্গ: Galliformes
পরিবার: Phasianidae
উপপরিবার: Perdicinae
গণ: Francolinus
প্রজাতি: F. pintadeanus
দ্বিপদী নাম
Francolinus pintadeanus
(Scopoli, 1786)
প্রতিশব্দ

Tetrao Pintadeanus

বিস্তৃতি

ভারত (প্রধানত মণিপুর রাজ্যে), মায়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, হংকংচীন চিনা তিতিরের প্রধান আবাস।[2] বাংলাদেশে এদের অস্তিত্ব অনিশ্চিত। কেবলমাত্র একটি তালিকায় এদের বাংলাদেশের পাখি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[3] কিন্তু এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন প্রমাণ মেলে নি।[4]

উপপ্রজাতি

এ পর্যন্ত চিনা তিতিরের দুটি উপপ্রজাতি সনাক্ত করা গিয়েছে।[5] উপপ্রজাতিগুলো হল:

  • F. p. phayrei (Blyth, 1843) - উত্তর-পূর্ব ভারত (মণিপুর) থেকে মায়ানমার হয়ে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া পর্যন্ত।
  • F. p. pintadeanus (Scopoli, 1786) - দক্ষিণ-পূর্ব চীন (ইউন্নান থেকে গুয়াংজি হয়ে হাইনান দ্বীপ, কুয়াংতুংচচিয়াং পর্যন্ত)।

বিবরণ

তিতির প্রজাতিগুলোর মধ্যে কালো তিতির আর চিনা তিতির সৌন্দর্যের দিক থেকে অগ্রগণ্য। চিনা তিতির ছোট মুরগির আকারের। এর থুতনি ও গাল সাদা এবং এই দুই অংশ একটি কালো দাগ দিয়ে বিভক্ত থাকে। ভ্রু ও ভ্রু-রেখা কালো। মাথার চাঁদি লালচে-বাদামি রঙের। সারা শরীর কালো-সাদা ফোঁটাযুক্ত। বগল বাদামি রঙের। সাদা পিঠে অসংখ্য কালো চিকন দাগ থাকে। লেজ ছোট ও কালো। দেহতল ফ্যাকাসে মেটে রঙের। ঠোঁট সীসা বর্ণের, ঠোঁটের আগা ফ্যাকাসে। চোখ কালো। পা হলদে-কমলা রঙের। পুরুষ ও স্ত্রী তিতিরের মধ্যে চেহারা ও আকারের দিক থেকে তেমন একটা পার্থক্য নেই। কেবল স্ত্রী তিতির দেখতে একটু ফ্যাকাসে হয়, আর পায়ের পেছনে গজালের মত নখর থাকে না।

তথ্যসূত্র

  1. Francolinus pintadeanus, BirdLife International এ চিনা তিতির বিষয়ক পাতা।
  2. Francolinus pintadeanus, The IUCN Red List of Threatened Species এ চিনা তিতির বিষয়ক পাতা।
  3. Rashid, H. Systematic list of the birds of East Pakistan (Dacca: The Asiatic Society of Pakistan, 1967), Publication no. 20.
  4. জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.), বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: পাখি, খণ্ড: ২৬ (ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০০৯), পৃ. ৫৭২।
  5. Chinese Francolin, The Internet Bird Collection এ চিনা তিতির বিষয়ক পাতা।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.