আফগানিস্তান আমিরাত

আফগানিস্তান আমিরাত বা আফগান আমিরাত (পশতু: د افغانستان امارت দ্য আফগানিস্তান আমারাত) ছিল বর্তমানে আফগানিস্তানে অবস্থিত একটি আমিরাতদুররানি সাম্রাজ্য থেকে এই আমিরাত জন্মলাভ করে। মধ্য এশিয়ায় আধিপত্যের জন্য রুশ সাম্রাজ্যযুক্তরাজ্যের মধ্যে সংঘটিত গ্রেট গেম রাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রভাব বিস্তার করেছে। এই যুগে দক্ষিণ এশিয়ায় ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক স্বার্থ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমিরাতের সাথে শিখ সাম্রাজ্যের যুদ্ধ হয়। পরে ব্রিটেনের সাথে প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এতে ব্রিটিশরা জয়ী হলেও যুদ্ধে তাদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি। দ্বিতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধের সময় ব্রিটিশরা আফগানদের পরাজিত করে এবং আফগানিস্তানের বৈদেশিক বিষয়াদির নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়। তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধের পর স্বাক্ষরিত ইঙ্গ-আফগান চুক্তির পর আমির আমানউল্লাহ খান খান এসকল বিষয় আফগানিস্তানের হাতে তুলে নিতে সক্ষম হন।

আফগানিস্তান আমিরাত
د افغانستان امارت
দ্য আফগানিস্তান আমারাত
ব্রিটেন কর্তৃক অধিকৃত (১৮৩৯-১৮৪২)
ব্রিটিশ আশ্রিত রাজ্য (১৮৭৯–১৯১৯)

১৮২৩–১৯২৬
 

পতাকা প্রতীক
আফগানিস্তানের অবস্থান
ডুরান্ড লাইন সমঝোতা-র পূর্বে আফগানিস্তান, ১৮৯৩
রাজধানী কাবুল
ভাষাসমূহ পশতু, ফার্সি
ধর্ম ইসলাম (সুন্নি)
সরকার রাজতন্ত্র
আমির
 -  ১৮২৩–১৮২৯ (প্রথম) দোস্ত মুহাম্মদ খান
 - ১৯১৯-১৯২৬ (শেষ) আমানউল্লাহ খান
আইন-সভা লয়া জেরগা
ঐতিহাসিক যুগ ১৯শ শতাব্দী
 - সংস্থাপিত ১৮২৩
 - ভাঙ্গিয়া দেত্তয়া হয়েছে ১৯২৬
আয়তন
 - ১৮৯৩ ৬,৫২,২২৫ বর্গ কি.মি. (২,৫১,৮২৫ বর্গ মাইল)
মুদ্রা আফগান রুপি

ইতিহাস

প্রতিষ্ঠার কয়েকবছর পর ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধ ১৮৩৯ থেকে ১৮৪২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চলেছে। যুদ্ধের সময় ব্রিটেন আফগানিস্তানের উপর আধিপত্য স্থাপন করতে সক্ষম হয়। ফলে রুশরা এই অঞ্চলে অগ্রসর হতে পারেনি। যুদ্ধে ব্রিটিশরা সাময়িকভাবে বিজয় লাভ করেছিল। পরে ব্রিটিশরা ফিরে আসে এবং দোস্ত মুহাম্মদ খান আমির হন।

১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে দোস্ত মুহাম্মদ খান মারা যাওয়ার পর তার পুত্র শের আলি খান তার উত্তরসুরি হন। তিন বছর পর তার বড় ভাই মুহাম্মদ আফজাল খান তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। ১৮৬৮ খ্রিষ্টাব্দে শের আলি খান পুনরায় ক্ষমতায় আসেন। ক্ষমতা পাওয়ার পূর্বে তিনি কিছুকাল রাশিয়ায় নির্বাসনে ছিলেন। তার আমির হওয়ার পর ব্রিটিশদের সাথে দ্বন্দ্ব্ব বৃদ্ধি পায় এবং দ্বিতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধ শুরু হয়। তিনি কাবুল ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মাজারে শরিফে মারা যান। তার উত্তরসুরি মুহাম্মদ ইয়াকুব খান ব্রিটিশদের সাথে গান্দমাকের সন্ধি স্বাক্ষর করেছিলেন। এর ফলে আফগানিস্তানের বৈদেশিক বিষয়াদিতে ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণ স্থাপিত হয়। ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে আবদুর রহমান খানের শাসনামলে ডুরান্ড লাইন প্রতিষ্ঠা হয় যার মাধ্যমে প্রভাবাধীন অঞ্চল নির্ধারিত হয়েছিল। এই লাইনটি এখনো কার্যকর রয়েছে।

আবদুর রহমান খান কয়েকটি রাজনৈতিক উত্থান দমন করেছেন। ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে তার মৃত্যুর পর তার পুত্র হাবিবউল্লাহ খান আমির হন। তিনি আফগানিস্তানের আধুনিকায়ন করতে চেয়েছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মান ও তুর্কি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তিনি আফগানিস্তানকে নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে বজায় রেখেছিলেন। ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নিহত হন।

হাবিবউল্লাহ খানের পর নাসরুল্লাহ খান আমির হন। হাবিবউল্লাহ খানের পুত্র আমানউল্লাহ খান তার বিপক্ষে দাঁড়ান এবং ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধের পরে রাওয়ালপিন্ডির সন্ধি স্বাক্ষরিত। এরপর ব্রিটিশরা আফগানিস্তানকে স্বাধীন হিসেবে মেনে নেয়। আমানউল্লাহ খান দেশের সংস্কার চালু রাখেন। ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে তাকে বাদশাহ ঘোষণা করা হয় এবং আফগানিস্তান রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।[1]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "Afghanistan" (English ভাষায়)। World Statesmen। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৫

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.