সূরা আন-নাযিয়াত

সূরা আন নাযিয়াত‌ (আরবি ভাষায়: النّزعت‎) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৭৯ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ৪৬ এবং রূকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ২। সূরা আন নাযিয়াত মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।

আন নাযিয়াত
النّزعت
শ্রেণীমাক্কী সূরা
নামের অর্থপ্রচেষ্টাকারী
পরিসংখ্যান
সূরার ক্রম৭৯
আয়াতের সংখ্যা৪৬
পারার ক্রম৩০
রুকুর সংখ্যা
সিজদাহ্‌র সংখ্যানেই
শব্দের সংখ্যা১৭৯
অক্ষরের সংখ্যা৭৬২
← পূর্ববর্তী সূরাসূরা আন-নাবা
পরবর্তী সূরা →সূরা আবাসা
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ

নামকরণ

এই সূরাটির প্রথম শব্দ وَالنَاِزعَاتْ থেকে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, যে সূরাটি وَالنَاِزعَاتْ (‘আন নাযিয়াত‌’) শব্দটি দ্বারা শুরু হয়েছে এটি সেই সূরা।[1]

নাযিল হওয়ার সময় ও স্থান

শানে নুযূল

বিষয়বস্তুর বিবরণ

আয়াত সমূহ

وَالنَّازِعَاتِ غَرْقًا

শপথ সেই ফেরেশতাগণের, যারা ডুব দিয়ে আত্মা উৎপাটন করে,

وَالنَّاشِطَاتِ نَشْطًا

শপথ তাদের, যারা আত্মার বাঁধন খুলে দেয় মৃদুভাবে;

وَالسَّابِحَاتِ سَبْحًا

শপথ তাদের, যারা সন্তরণ করে দ্রুতগতিতে,

فَالسَّابِقَاتِ سَبْقًا

শপথ তাদের, যারা দ্রুতগতিতে অগ্রসর হয় এবং

فَالْمُدَبِّرَاتِ أَمْرًا

শপথ তাদের, যারা সকল কর্মনির্বাহ করে, কেয়ামত অবশ্যই হবে।

يَوْمَ تَرْجُفُ الرَّاجِفَةُ

যেদিন প্রকম্পিত করবে প্রকম্পিতকারী,

تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ

অতঃপর পশ্চাতে আসবে পশ্চাদগামী;

قُلُوبٌ يَوْمَئِذٍ وَاجِفَةٌ

সেদিন অনেক হৃদয় ভীত-বিহবল হবে।

أَبْصَارُهَا خَاشِعَةٌ

তাদের দৃষ্টি নত হবে।

يَقُولُونَ أَئِنَّا لَمَرْدُودُونَ فِي الْحَافِرَةِ

তারা বলেঃ আমরা কি উলটো পায়ে প্রত্যাবর্তিত হবই-

أَئِذَا كُنَّا عِظَامًا نَّخِرَةً

গলিত অস্থি হয়ে যাওয়ার পরও?

قَالُوا تِلْكَ إِذًا كَرَّةٌ خَاسِرَةٌ

তবে তো এ প্রত্যাবর্তন সর্বনাশা হবে!

فَإِنَّمَا هِيَ زَجْرَةٌ وَاحِدَةٌ

অতএব, এটা তো কেবল এক মহা-নাদ,

فَإِذَا هُم بِالسَّاهِرَةِ

তখনই তারা ময়দানে আবির্ভূত হবে।

هَلْ أتَاكَ حَدِيثُ مُوسَى

মূসার বৃত্তান্ত আপনার কাছে পৌছেছে কি?

إِذْ نَادَاهُ رَبُّهُ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى

যখন তার পালনকর্তা তাকে পবিত্র তুয়া উপ্যকায় আহবান করেছিলেন,

اذْهَبْ إِلَى فِرْعَوْنَ إِنَّهُ طَغَى

ফেরাউনের কাছে যাও, নিশ্চয় সে সীমালংঘন করেছে।

فَقُلْ هَل لَّكَ إِلَى أَن تَزَكَّى

অতঃপর বলঃ তোমার পবিত্র হওয়ার আগ্রহ আছে কি?

وَأَهْدِيَكَ إِلَى رَبِّكَ فَتَخْشَى

আমি তোমাকে তোমার পালনকর্তার দিকে পথ দেখাব, যাতে তুমি তাকে ভয় কর।

فَأَرَاهُ الْآيَةَ الْكُبْرَى

অতঃপর সে তাকে মহা-নিদর্শন দেখাল।

فَكَذَّبَ وَعَصَى

কিন্তু সে মিথ্যারোপ করল এবং অমান্য করল।

ثُمَّ أَدْبَرَ يَسْعَى

অতঃপর সে প্রতিকার চেষ্টায় প্রস্থান করল।

فَحَشَرَ فَنَادَى

সে সকলকে সমবেত করল এবং সজোরে আহবান করল,

فَقَالَ أَنَا رَبُّكُمُ الْأَعْلَى

এবং বললঃ আমিই তোমাদের সেরা পালনকর্তা।

فَأَخَذَهُ اللَّهُ نَكَالَ الْآخِرَةِ وَالْأُولَى

অতঃপর আল্লাহ তাকে পরকালের ও ইহকালের শাস্তি দিলেন।

إِنَّ فِي ذَلِكَ لَعِبْرَةً لِّمَن يَخْشَى

যে ভয় করে তার জন্যে অবশ্যই এতে শিক্ষা রয়েছে।

أَأَنتُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمِ السَّمَاء بَنَاهَا

তোমাদের সৃষ্টি অধিক কঠিন না আকাশের, যা তিনি নির্মাণ করেছেন?

رَفَعَ سَمْكَهَا فَسَوَّاهَا

তিনি একে উচ্চ করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন।

وَأَغْطَشَ لَيْلَهَا وَأَخْرَجَ ضُحَاهَا

তিনি এর রাত্রিকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং এর সূর্যোলোক প্রকাশ করেছেন।

وَالْأَرْضَ بَعْدَ ذَلِكَ دَحَاهَا

পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।

أَخْرَجَ مِنْهَا مَاءهَا وَمَرْعَاهَا

তিনি এর মধ্য থেকে এর পানি ও ঘাম নির্গত করেছেন,

وَالْجِبَالَ أَرْسَاهَا

পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন,

مَتَاعًا لَّكُمْ وَلِأَنْعَامِكُمْ

তোমাদের ও তোমাদের চতুস্পদ জন্তুদের উপকারার্থে।

فَإِذَا جَاءتِ الطَّامَّةُ الْكُبْرَى

অতঃপর যখন মহাসংকট এসে যাবে।

يَوْمَ يَتَذَكَّرُ الْإِنسَانُ مَا سَعَى

অর্থাৎ যেদিন মানুষ তার কৃতকর্ম স্মরণ করবে

وَبُرِّزَتِ الْجَحِيمُ لِمَن يَرَى

এবং দর্শকদের জন্যে জাহান্নাম প্রকাশ করা হবে,

فَأَمَّا مَن طَغَى

তখন যে ব্যক্তি সীমালংঘন করেছে;

وَآثَرَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا

এবং পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে,

فَإِنَّ الْجَحِيمَ هِيَ الْمَأْوَى

তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম।

وَأَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ وَنَهَى النَّفْسَ عَنِ الْهَوَى

পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশী থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে,

فَإِنَّ الْجَنَّةَ هِيَ الْمَأْوَى

তার ঠিকানা হবে জান্নাত।

يَسْأَلُونَكَ عَنِ السَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَاهَا

তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, কেয়ামত কখন হবে?

فِيمَ أَنتَ مِن ذِكْرَاهَا

এর বর্ণনার সাথে আপনার কি সম্পর্ক ?

إِلَى رَبِّكَ مُنتَهَاهَا

এর চরম জ্ঞান আপনার পালনকর্তার কাছে।

إِنَّمَا أَنتَ مُنذِرُ مَن يَخْشَاهَا

যে একে ভয় করে, আপনি তো কেবল তাকেই সতর্ক করবেন।

كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَهَا لَمْ يَلْبَثُوا إِلَّا عَشِيَّةً أَوْ ضُحَاهَا

যেদিন তারা একে দেখবে, সেদিন মনে হবে যেন তারা দুনিয়াতে মাত্র এক সন্ধ্যা অথবা এক সকাল অবস্থান করেছে।

তথ্যসূত্র

  1. "সূরার নামকরণ"www.banglatafheem.comতাফহীমুল কোরআন, ২০ অক্টোবর ২০১০। ১২ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ : ২৭ জুলাই ২০১৫ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.