আদম সুরত
আদম সুরত বাংলাদেশী আধুনিক চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত ১৯৮৯ সালের প্রামাণ্যচিত্র;[2][3] যোটির চিত্রনাট্য রচনা এবং পরিচালনা করেছেন তারেক মাসুদ।[1] সুলতানের দৈনন্দিন কর্ম ও শিল্পজীবন চিত্রায়নের পাশাপাশি বাংলার সংস্কৃতি এবং কৃষিচিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে এই প্রামাণ্যচিত্রে।[4]
আদম সুরত | |
---|---|
![]() সুলতানের চিত্রকর্ম প্রথম বৃক্ষ রোপণ অনুসারে চলচ্চিত্রের পোস্টার | |
পরিচালক | তারেক মাসুদ |
প্রযোজক | ক্যাথরিন মাসুদ |
চিত্রনাট্যকার | তারেক মাসুদ |
কাহিনীকার | তারেক মাসুদ |
উৎস | এস এম সুলতানের জীবন |
শ্রেষ্ঠাংশে | এস এম সুলতান |
বর্ণনাকারী |
|
সুরকার | পুলক গুপ্ত |
চিত্রগ্রাহক | মিশুক মুনীর |
সম্পাদক | নজরুল ইসলাম |
প্রযোজনা কোম্পানি | অডিওভিশন |
পরিবেশক | অডিওভিশন |
মুক্তি |
|
দৈর্ঘ্য | ৪৭ মিনিট[1] |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা |
প্রামাণ্যচিত্রে নির্বাহী প্রযোজনা করেছেন ক্যাথরিন মাসুদ। চিত্রগ্রহণ করেছেন মিশুক মুনীর এবং সম্পাদনা করেছেন নজরুল ইসলাম। এছাড়াও বাংলা ও ইংরেজি ধারাবর্ণনা করেছেন যথাক্রমে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় এবং আলমগীর কবির।
প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণের সময় তারেক মাসুদের পরিচয় ঘটে ক্যাথরিন শেপিয়ারের সাথে এবং পরবর্তীতে তারা বিয়ে করেন।[5] এটি মাসুদের প্রথম প্রামাণ্যচিত্র।[6][7]
পটভূমি
মূলত শিল্পী এস এম সুলতান বিষয়ক আহমদ ছফা রচিত একটি লেখা ১৯৮২ সালে তারেক মাসুদকে এই প্রামাণ্যচিত্র নির্মানে উদ্বুদ্ধ করে।[8] এরপর টানা সাত বছর ধরে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত মাসুদ প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করেন।[9] প্রাথমিক অবস্থায় শিল্পী এস এম সুলতান স্বভাববশত গণমাধ্যম বা ক্যামেরার সামনে আসতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন:
“ | আমি বরং নিমিত্ত, আমাকে উপলক্ষ করে আপনারা বাংলার কৃষকের ওপর ছবি বানান। আমি আপনাদের সঙ্গে ক্যাটালিস্ট হিসেবে থাকব। | ” |
— এস এম সুলতান, [4] |
চিত্রগ্রাহক হিসেবে আনোয়ার হোসেনের কাজ করার কথা থাকলেও চুড়ান্তকালে মিশুক মুনীর চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন।[10]
সঙ্গীত
নং. | শিরোনাম | লেখক | শিল্পী | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|---|
১. | "যদি মনে পড়ে সে দিনের কথা" | মেঘদূত | ||
২. | "যাদু ভারে নায়না" | আবদুল করিম খাঁন | ||
৩. | "নাইন্থ সিম্ফনি" | লুডভিগ ফান বেটোফেন | ||
৪. | "নবীজির খাস মহলে" | শাহ আলম দেওয়ান, নাসিমা বয়াতি | ||
৫. | "সৃজন ছন্দে নাচে আনন্দে" | কাজী নজরুল ইসলাম | তানভীর আলম সজীব |
মুক্তি
১৯৮৯ সালে প্রামাণ্যচিত্রের প্রথম প্রদর্শনী হয় মার্কিন যৃক্তরাষ্ট্রে। বাণিজ্যিকভাবে প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শন না করা হলেও ১৯৮০-এর দশকে দেশে এবং দেশের বাইরে টেলিবিশন মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল। সে সময়ে ১৬ মিলিমিটার প্রযুক্তিতে প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছিল[11] এবং এর ফলে প্রযুক্তিগত বিভিন্ন কারণেই তা প্রদর্শন করা সম্ভব হয় নি।[12]
ডিভিডি
২০১৪ সালের বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত "তারেক মাসুদ উৎসবে" আদম সুরত চলচ্চিত্রের ডিভিডি সংস্করণ প্রকাশ করা হয়। এই ডিভিডি সুলতানের ওপর নির্মিত এক সমৃদ্ধ দলিল। দুটি ডিস্ক ও একটি বই সমৃদ্ধ এই সংকলনে অর্ন্তভূক্ত রয়েছে চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার, শিল্পী সুলতানের আঁকা চিত্রসমগ্র, অডিও সম্মেলন, চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের আলোকচিত্র এবং সুলতানকে নিয়ে রচিত বিভিন্ন লেখা।[6]
ডিজিটাল রুপান্তর
১৬ মিলিমিটার প্রযুক্তিতে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রটি ২০০৯ সালে এটি ডিজিটাল প্রযুক্তিতে রূপান্তর করা হয়।[6][13]
আরো দেখুন
- তারেক মাসুদের চলচ্চিত্র তালিকা
তথ্যসূত্র
- চলচ্চিত্রলেখা ২০১৩, পৃ. ১৪।
- "আদম সুরত (১৯৮৯)"। bfi.org.uk (ইংরেজি ভাষায়)। বিএফআই। ১৯৮৯। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৮।
Documentary on the life and art of the Bangladeshi painter S.M. Sultan.
- মালিক, জামাল, সম্পাদক (২৭ নভেম্বর ২০০৭)। "Madrasas, Masud and The Clay Bird: Bangladeshi art cinema towards heterogenizing Islam"। Madrasas in South Asia: Teaching Terror? [মাদ্রাসা, মাসুদ এবং দ্য ক্লে বার্ড: বাংলাদেশের শিল্পী চলচ্চিত্র ইসলাম হেটারোজেনাইজিংয়ের (heterogenizing) দিকে এগুচ্ছে] (ইংরেজি ভাষায়)। নিউ ইয়র্ক: রুটলেজ। আইএসবিএন 9781134107629। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৫।
- চলচ্চিত্রযাত্রা ২০১২, পৃ. ১৪: তার (এস এম সুলতান) ওপর আহমদ ছফার একটি লেখা সুলতানের ওপর চলচ্চিত্র নির্মাণে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে।।
- বার্গান, রোনাল্ড (১৫ আগস্ট ২০১১)। "Tareque Masud obituary" [তারেক মাসুদের মৃত্যুসম্বন্ধীয়]। দ্য গার্ডিয়ান। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৮।
By that time, he had met and married the Chicago-born Catherine Shapere, with whom he formed a close working relationship.
- মাসুদ, ক্যাথরিন (১১ ডিসেম্বর ২০১৪)। "আদম সুরত ও তারেক মাসুদ"। samakal.com। দৈনিক সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৮।
- দেয়া (১৩ আগস্ট ২০১৩)। "অকাল প্রয়াত নক্ষত্র স্মরণে"। priyo.com। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৫, ২০১৫।
১৯৮২ সালে নির্মাণ শুরু করা ও ১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া "আদম সুরত" ছিল তার প্রথম তথ্যচিত্র।
- চলচ্চিত্রযাত্রা ২০১২, পৃ. ১১।
- চলচ্চিত্রযাত্রা ২০১২, পৃ. ১৫।
- চলচ্চিত্রযাত্রা ২০১২, পৃ. ১৩: মূলত তাঁরই ক্যামেরাম্যান হিসেবে ছবিতে কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু ওই সময়ে তিনি ইউনেসকোর স্টিল ফটোগ্রাফির একটা অ্যাসাইনমেন্টে আফ্রিকায় চলে গেলেন। ফলে সহকারী চিত্রগ্রাহক হিসেবে যাঁর কাজ করার কথা ছিল, সেই মিশুক মুনীর মূল দ্বায়িত্ব পালন করলেন।।
- রহমান, পাভেল। "আদম সুরত থেকে রানওয়ে"। রাইজিংবিডি.কম। ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২, ২০১৫।
- "২২ বছর পর 'আদম সুরত'"। প্রিয়.কম। ৬ ডিসেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৯।
- বিনোদন প্রতিবেদক (৬ ডিসেম্বর ২০১৩)। "২২ বছর পর 'আদম সুরত'" (প্রিন্ট সংস্করণ)। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৮।
উৎস
- মাসুদ, তারেক (ডিসেম্বর ২০১৩)। "আদম সুরত"। চলচ্চিত্রলেখা: চিত্রনাট্য ও গান (ডিসেম্বর ২০১৩ সংস্করণ)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশ। আইএসবিএন 978-984-90659-1-3।
- মাসুদ, তারেক (ফেব্রুয়ারি ২০১২)। "যেভাবে 'আদম সুরত'"। চলচ্চিত্রযাত্রা (ফেব্রুয়ারি ২০১২ সংস্করণ)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশ। আইএসবিএন 978-984-33-3886-0।
- মাসুদ, তারেক (ডিসেম্বর ২০১৩)। "আদম সুরত"। চলচ্চিত্রলেখা: চিত্রনাট্য ও গান (ডিসেম্বর ২০১৩ সংস্করণ)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশ। আইএসবিএন 978-984-90659-1-3।
বহিঃসংযোগ
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে আদম সুরত
(ইংরেজি) - গ্রন্থাগারে আদম সুরত সম্পর্কিত বা কর্তৃক কাজ (ওয়ার্ল্ডক্যাট ক্যাটালগ) (ইংরেজি)
- এস এম সুলতান ও আদম সুরত: তারেক মাসুদের টেলিফোন ইন্টারভিউ ১৯৯২ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নাসির আলী মামুন