শাহাদাত হোসেন খান
শাহাদাত হোসেন খান (জন্মঃ ৬ জুলাই, ১৯৫৮) হলেন একজন বাংলাদেশী উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সরোদ বাদক ও সুরকার। উপমহাদেশের অন্যতম এক সঙ্গীত পরিবারে তার জন্ম হয়। ১৯৭২ সালে তিনি ও তার চাচা বাহাদুর হোসেন খান যুগলবন্দি হয়ে আলাউদ্দিন সঙ্গীত সম্মেলনে সরোদ পরিবেশন করে প্রশংসিত হন। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একুশে পদক লাভ করেন।[1]
শাহাদাত হোসেন খান | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
শিক্ষা | ইতিহাস |
যেখানের শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সরোদ বাদক, সুরকার |
কার্যকাল | ১৯৭২-বর্তমান |
সন্তান | আফসানা খান (কন্যা) রুখসানা খান (কন্যা) |
পিতা-মাতা | ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান (পিতা) |
আত্মীয় | আয়েত আলী খাঁ (দাদা) বাহাদুর হোসেন খান (চাচা) মোবারক হোসেন খান (চাচা) |
পুরস্কার | একুশে পদক (১৯৯৪) |
প্রাথমিক জীবন
শাহাদাত হোসেন খান ১৯৫৮ সালের ৬ জুলাই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) কুমিল্লা জেলার এক সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[2] তার পিতা ওস্তাদ আবেদ হোসেন খান একজন প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী ও সেতার বাদক।[3] তার দাদা ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ এবং ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ছোট ভাই। তার দুই চাচা প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ বাহাদুর হোসেন খান এবং সঙ্গীত গবেষক ও লেখক মোবারক হোসেন খান।[4]
সাত বছর বয়সে পিতার কাছে শাহাদাত হোসেনের তবলা ও সরোদের হাতেখড়ি হয়। পরে তিনি তার চাচা বাহাদুর হোসেন খানের কাছে সরোদের তালিম গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে আলাউদ্দিন সঙ্গীত সম্মেলনে বাহাদুর হোসেনের সাথে যুগলবন্দি হয়ে সরোদ পরিবেশন করেন। ১৯৮১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ১৯৮৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার আলী আকবর কলেজ অব মিউজিক থেকে সঙ্গীত বিষয়ে স্নাতক সমমানের 'বাদ্যলংকার' ডিগ্রি লাভ করেন।[2]
কর্মজীবন
তিনি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গীতের শিক্ষক ও প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সরকারী সঙ্গীত কলেজের ডেমোনেস্ট্রেশন-কাম-লেকচারার, সংগীত বিষয়ক বক্তা ও প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উচ্চতর প্রশিক্ষণ কোর্সে সেতার, সরোদ, বেহালা, বাঁশি ও গিটারের প্রশিক্ষক এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সঙ্গীত একাডেমিতে কণ্ঠ ও যন্ত্রসঙ্গীতের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।[2]
তিনি মৃত্যুহীন প্রাণ ও মিট বাংলাদেশ[5] নামক দুটি প্রামাণ্য চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। ২০০০ সালে যুক্তরাজ্য থেকে একটি সিডি প্রকাশিত হয়। পরে সেখান থেকে আরেকটি এবং বাংলাদেশ থেকে তিনটি সিডি ও ক্যাসেট প্রকাশিত হয়, যার মধ্যে রিপলস ইন মেডোস্ সিডিটি প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে।[1]
সম্মাননা
- উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত একুশে পদক, ১৯৯৪।
- কলকাতার রাজ্য সংগীত একাডেমি কর্তৃক সংবর্ধনা, ১৯৯৯।
- লন্ডনে অবস্থিত উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও বাংলাদেশ এসোসিয়েশন কর্তৃক সংবর্ধনা, ২০০০।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- Charanji, Kavita (২৭ এপ্রিল ২০০৬)। "Ustad Shahadat Hossain Khan: Upholding a legacy in music"। দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৭।
- নাথ, অরুণ (৩০ এপ্রিল ২০১৫)। "উপমহাদেশের সঙ্গীতজ্ঞ উস্তাদ শাহাদাত হোসেন খান"। দৈনিক আজাদী। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৭।
- মোবারক হোসেন খান (৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩)। "খান, ওস্তাদ আবেদ হোসেন"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৭।
- সারওয়ার, সাবিত (৭ জানুয়ারি ২০১৪)। "মোবারক হোসেন খান: তিতাস তীরের সঙ্গীতবিশারদ"। যায়যায়দিন। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৭।
- "Meet Bangladesh"। Discovery Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৭।
- "সরোদের সুরে অন্যরকম কবিতাসন্ধ্যা"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৫ মে ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৭।
- "আঙুলের ডগায় সুরমূর্ছনা"। দৈনিক যুগান্তর। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৭।