স্যামসন এইচ চৌধুরী
স্যামসন এইচ চৌধুরী (জন্ম: ২৫ সেপ্টেম্বর, ১৯২৫ - মৃত্যু: ৫ জানুয়ারি, ২০১২) বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি ছিলেন। শীর্ষস্থানীয় এ শিল্পোদ্যোক্তা স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন।[3]
স্যামসন এইচ চৌধুরী Samson H. Chowdhury | |
---|---|
![]() মৃত্যুর পর এক জাতীয় পত্রিকায় স্যামসন এইচ চৌধুরীকে নিয়ে প্রতিবেদন | |
জন্ম | গোপালগঞ্জ, ব্রিটিশ ভারত | ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯২৫
মৃত্যু | ৫ জানুয়ারি ২০১২ ৮৫) | (বয়স
যেখানের শিক্ষার্থী | স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়[1] হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়[1] |
পেশা | উদ্যোক্তা |
কার্যকাল | ১৯৫২–২০১২[2] |
জন্ম ও পারিবারিক জীবন
স্যামসন এইচ চৌধুরীর জন্ম ১৯২৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর জেলায়। তার বাবা ই এইচ চৌধুরী ও মা লতিকা চৌধুরী। তার স্ত্রীর নাম অনিতা চৌধুরী। তার তিন ছেলে - অঞ্জন চৌধুরী, তপন চৌধুরী ও স্যামুয়েল চৌধুরী। [4]
শিক্ষাজীবন
১৯৩০-৪০ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতার বিষ্ণুপুর উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এখান থেকেই তিনি সিনিয়র কেমব্রিজ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি স্কুল থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবন
স্যামসন এইচ চৌধুরীর বাবা ছিলেন আউটডোর ডিসপেনসারির মেডিক্যাল অফিসার। বাবার পেশার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই ঔষুধ নিয়ে তিনি নাড়াচাড়া করেছেন। ভারত থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করে ফিরে আসেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পাবনার আতাইকুলা গ্রামে। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে চিন্তাভাবনা করে তিনি 'ফার্মেসি'কেই ব্যবসায় হিসেবে বেছে নিলেন; গ্রামের বাজারে দিলেন ছোট একটি দোকান। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তফ্রন্ট সরকার তখন ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে পেয়ে যান ওষুধ কারখানা স্থাপনের একটা লাইসেন্স। তিনিসহ আরো তিন বন্ধুর সঙ্গে মিলে প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৮০ হাজার টাকায় পাবনায় কারখানা স্থাপন করলেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। স্কয়ারের নামকরণও করা হয়েছিল চার বন্ধুর প্রতিষ্ঠান হিসেবে। তাই এর লোগোও তাই বর্গাকৃতির। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের স্থাপিত প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ৩০ হাজার শ্রমিক কর্মরত।[5] শুধু ঔষুধেই নয়, এই শিল্প গ্রুপের ব্যবসায় সম্প্রসারিত হয়েছে প্রসাধনসামগ্রী, টেক্সটাইল, পোশাক তৈরী, কৃষিপণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা এমনকি মিডিয়াতেও। তিনি দেশের অন্যতম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙার চেয়ারম্যান ছিলেন। স্কয়ার গ্রুপ ২০০৯-১০ অর্থবৎসরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সেরা করাদাতা নির্বাচিত হয়েছিলো।[6]
সম্পৃক্ততা
- চেয়ারম্যান, স্কয়ার গ্রুপ
- চেয়ারম্যান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ[7]
- চেয়ারম্যান, এস্ট্রাস লিমিটেড
- সম্মানিত সদস্য, কুর্মিটোলা গল্ফ ক্লাব
- সাবেক চেয়ারম্যান, মাইক্রো ইন্ড্রাস্ট্রিজ ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস (মাইডাস)
- চেয়ারম্যান, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ চ্যাপ্টার, ২০০৪-২০০৭
- সভাপতি, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি, ঢাকা (১৯৯৬-১৯৯৭)
- সহ-সভাপতি, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স, বাংলাদেশ
- সাবেক পরিচালক, দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)
- সদস্য, নির্বাহী কমিটি, বাংলাদেশ ফ্রান্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি
- পরিচালক, ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ[8]
- চেয়ারম্যান, সেন্ট্রাল ডিপোজিটোরি এজেন্সি অব বাংলাদেশ
- সদস্য, উপদেষ্টা, কমিটি অব দ্য বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ড্রাস্ট্রিস
- প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
দেশের বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, পণ্য উৎপাদন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জাতির আয় বৃদ্ধিসহ সামগ্রিকভাবে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার কারণে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে সরকার ৪২ জন ব্যক্তিকে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সিআইপি (শিল্প) নির্বাচন করে। তন্মধ্যে বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর ১৮ জনের মধ্যে একজন ছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী।[9]
তথ্যসূত্র
- "In Loving Memory of Samson H. Chowdhury,one of the greatest entrepreneurs the world has ever known"। Worldfolio। ১৬ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Star Online Report (১৯২৬-০২-২৫)। "Samson H Chy no more"। Thedailystar.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-০৫।
- সাপ্তাহিক
- স্যামসন চৌধুরী আর নেই প্রথম আলো, ৬ জানুয়ারি ২০১২
- দৈনিক প্রথম আলো
- দৈনিক কালের কন্ঠ
- "মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক"। ১৯ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০১২।
- "ক্র্যাব"। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০১২।
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০১২।