স্বাধীনতা স্তম্ভ

স্বাধীনতা স্তম্ভ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মারক হিসেবে নির্মিত একটি স্মৃতিস্তম্ভ।[1] এটি ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরভাগে নির্মাণ করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উত্তর পাশে স্থাপিত শিখা চিরন্তন-এর বরাবর দক্ষিণ দিকে এটির অবস্থান। ভূমি থেকে কিছুটা ওপরভাগে নির্মিত একটি প্রশস্ত চৌকো কংক্রিটের চাতালের দক্ষিণ পাশে এটির অবস্থান। এই চাতালের পশ্চিম পাশে রয়েছে একটি কৃত্রিম জলাধার এবং পূর্ব পাশে রয়েছে টেরাকোটায় আচ্ছাদিত একটি অনতিউচ্চ দেয়াল যার পেছনেই ভূগর্ভস্ত স্বাধীনতা জাদুঘর-এ যাওয়ার সিঁড়ি। সন্ধ্যা বেলায় কাঁচ নির্মিত স্তম্ভটি একটি আলোকস্তম্ভে পরিণত হয়। এ থেকে বিচ্ছুরিত শক্তিশালী বৈদ্যুতিক আলোক রশ্মি চারপাশের আকাশকে আলোময় করে তোলে।

স্বাধীনতা স্তম্ভ
সাধারণ তথ্য
অবস্থাসম্পূর্ণ
ধরনপ্রকাশ্য স্থাপনা
অবস্থানঢাকা, বাংলাদেশ
নির্মাণ শুরু হয়েছে১৯৯৯
সম্পূর্ণ২০১৩
নকশা এবং নির্মান
স্থপতিকাশেফ মাহবুব চৌধুরীমেরিনা তাবাসসুম

স্থপতি

স্বাধীনতা স্তম্ভের নকশা করেছেন আরবানা নামীয় স্থাপত্য সংস্থার দুই স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরীমেরিনা তাবাসসুম[1]

নির্মাণকাল

বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এই স্বাধীনতা স্তম্ভের নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে এবং ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে এটি সম্পূর্ণ হয়। [1] গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে এটি নির্মিত হয়।

নির্মাণশৈলী

এটি মূলত একটি গ্লাস টাওয়ার। টাওয়ারটির কাঠামো ইস্পাত দিয়ে তৈরি। এর উপরিভাগে রয়েছে স্বচ্ছ কাচ। এতে সূর্যের আলোর প্রতিসরণ ও প্রতিফলন হয়। রাতে বৈদ্যুতিক আলোর মাধ্যমে স্তম্ভটি আলোকিত করা হয়। টাওয়ারটি উচ্চতায় ১৫০ ফুট ও প্রস্থ ১৬ ফুট।[1]

পটভূমি

১৯৭১ খিস্টাব্দে পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যূদয় ঘটে। বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের ইতিহাসের সঙ্গে ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যোগসূত্রিতা ধারাবাহিক। ১৯৭১-এর ৭ মার্চ বাঙ্গালী জাতির নেতা শেখ মুজিবুর রহমান এখানে প্রদত্ত ভাষণে বলেছিলেন, ’এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ২৬ শে মার্চ যে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল, ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই যৌথবাহিনীর নিকট পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে তার সফল যবনিকাপাত হয়। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখানেই সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে তার প্রথম ভাষণ দিয়েছিলেন। এখানেই ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বক্তৃতা করেছিলেন। এসব নানা ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যেই সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা সংশ্রয় নির্মাণের পরিকল্পনা করে। স্বাধীনতা স্তম্ভ এই সংশ্রয়েরই অন্যতম আঙ্গিক।

চিত্রশালা

বিকেলে স্বাধীনতা স্তম্ভ ও দর্শনার্থী

তথ্যসূত্র

  1. নাগরিকদের জানা ভাল; মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান; পৃষ্ঠা নম্বর: ১০১; দ্বিতীয় মুদ্রণ: ফেব্রুয়ারী ২০১৫; প্রথমা প্রকাশন
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.