সৈয়দ মোস্তফা কামাল
সৈয়দ মোস্তফা কামাল (জন্ম: ২৫ জানুয়ারি ১৯৪৩ - মৃত্যু: ২০ ডিসেম্বর ২০১৩) একজন বাংলাদেশি লেখক, ঔপন্যাসিক, গবেষক, ঐতিহাসিক।[1][2]
শেকড় সন্ধানী লেখক, গবেষক সৈয়দ মোস্তফা কামাল | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ২৫ জানুয়ারি ১৯৪৩ মসাজান, হবিগঞ্জ ব্রিটিশ ভারত। (বর্তমান বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ২০ ডিসেম্বর ২০১৩ |
পেশা | লেখক, ঔপন্যাসিক, গবেষক, ঐতিহাসিক। |
ভাষা | বাংলা |
বাসস্থান | সিলেট |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
শিক্ষা | বি এড |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | মুরারিচাঁদ কলেজ |
সময়কাল | ১৯৫৯-২০১৩ |
উল্লেখযোগ্য রচনা | জিহাদে পাকিস্থান গ্রন্থ প্রকাশ (তখন ভারত পাকিস্থান যুদ্ধ চলছিল) ইসলামী বিশ্বকোষ (ইসলামিক ফাউন্ডেশ বাংলাদেশ প্রকাশিত) |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার |
|
সক্রিয় বছর | ১৯৬৫-২০১৩ |
দাম্পত্যসঙ্গী | বেগম ফাতেমা |
সন্তান |
|
আত্মীয় | জামাতা- এডভোকেট মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী (সাবেক এমপি) |
জন্ম ও পরিচিতি
সৈয়দ মোস্তফা কামালের জন্ম ২৫ শে জানুয়ারি ১৯৪৩ ইংরেজি সনে, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার মসাজান গ্রামে। তার পিতা সৈয়দ মসদ্দর আলী, মাতা সৈয়দা খোদেজা খাতুন। হযরত শাহ জালালের সঙ্গী-অনুসারী তরফ বিজয়ী সিপাহসালার সৈয়দ নাসিরুদ্দীনের বংশধর তিনি। কথিত আছে, সিপাহসালার সৈয়দ নাসিরুদ্দীনের বংশে অনেক কীর্তিমান পুরুষদের জন্ম হয়। যাঁদের মধ্যে বাংলা সাহিত্য বিষয়ে পরিচিত: সৈয়দ মুসা, মধ্যযুগের মহাকবি সৈয়দ সুলতান, ঐতিহাসিক সৈয়দ মুজতবা আলী, সৈয়দ মোস্তফা আলী, সৈয়দ মুর্তাজা আলী সৈয়দ মোস্তফা কামাল বিশেষ উল্লেখযোগ্য [3][4][5]
শিক্ষাজীবন
১৯৪৮ সালে মসাজান মসজিদে সকাল বেলার মক্তবে পড়া শুনার সূচনা। ১৯৫০সালে স্থানীয় রাধানন্দ প্রাইমারী স্কুলে। ১৯৫৪ সালে স্থানীয় রাধানন্দ প্রাইমারী স্কুল থেকে থেকে পঞ্চম শ্রেণীর পরীায় উত্তীর্ণ হন। সিলেটের দাড়িয়াপাড়াস্থ রসময় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে এস এস সি পরীায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৩ সালে সিলেট এম সি কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হন ও বি এ পাশ করেন। ১৯৭৫ সালে কুমিল্লা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বি এড ডিগ্রী অর্জন করেন। [6]
কর্মজীবন
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মাধ্যমে তিনি কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’র সিলেট সংস্কৃতিক কেন্দ্রে ডেপুটেশনে সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন (১৯৮২-২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ) পর্যন্ত। এবং ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন ৯ মে ১৯৯৫ সাল থেকে ৯ মে ১৯৯৯ পর্যন্ত। [4][6]
রাজনৈতিক জীবন
১৯৬৩ সালে ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ছাত্রলীগ থেকে ৬৫-৬৬ মেয়াদের জন্য সিলেট এম সি কলেজ ছাত্র সংসদের জি,এস নির্বাচিত হন। ১৯৬৬ ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান বিরোধী গণ আন্দোলনে যুক্ত হন। ৮ আগস্ট সিলেট সার্কিট হাউজের মার্চ পোষ্টে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানকে গার্ড অব অনার প্রদান অবস্থায় কিং ব্রীজের উপর থেকে জুতা নিপে করেন এবং তৎকালীণ সরকারের রোষানলে পড়ে ফেরারি হয়ে যান। ১৯৬৯ এর গণ আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে মরহুম কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীর নির্বাচনী প্রচারনায় ভূমিকা রাখেন। [4][6]
সম্মাননা ও স্বীকৃতি
সাহিত্য ও গবেষণার জন্য ১৯৮৯ সালে মৌলভীবাজার পৌরসভা সাহিত্য পুরস্কার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল স্টুডেন্ট এওয়াড, লন্ডন সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮৯ খ্রিঃ, রাগীব-রাবেয়া সাহিত্য পুরস্কার ২০০২ খ্রিঃ এবং ২০০৮ সালে বাংলাদেশ লেখক ফোরাম ঢাকা কর্তৃকঃ শহীদ তিতুমীর জাতীয় পুরস্কার (স্বর্ণ পদক) লাভ, জালালাবাদ যুব ফোরাম অমর একুশে পদক ১৯৯১ খ্রিঃ ও ২০০৯ সালে ভাষাসৈনিক সাহিত্যিক মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘর, সিলেটঃ সার্টিফিকেট অব এপ্রিসিয়েশন লাভা করেন। এছাড়া ১৯৯৬ সালে দি আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইন্সটিটিউশন রিসার্চ এসোসিয়েশন কর্তৃকঃ মানপত্র ১৯৯৬ পেয়েছেন[3] । সৈয়দ মোস্তফা কামালের জীবন ও সাহিত্য কর্মের উপর 'মুল্যায়নের মানদণ্ডে' সৈয়দ মোস্তফা কামাল শিরোনামে প্রবন্ধ ও গ্রন্থ লিখেছেন মোহাম্মদ জুবায়ের, সাংবাদিক আহমদ ফারুক, গবেষক হারুন আকবর সহ ৩০ জন কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক[2]
মৃত্যু এবং উত্তরাধিকার
শুক্রবার ২১ ডিসেম্বর ২০১৩ মারা যান। পরদিন শনিবার দরগাহে হযরত শাহজালাল মাজার মসজিদে জানাজার পর দরগাহ সংলগ্ন গোরস্তানে লাশ দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে গেছেন। [5]
প্রকাশনা
এযাবৎ তার রচিত ও প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৬৩ টি। যার মধ্যে গবেষণা বিষয়ে ২২ টি, নবী জীবনী ২ টি, নাটক ২ টি, রম্য রচনা ২টি, পুথিঁকাব্য ৩টি, আত্মজৈবনিক ২টি, বিবিধ ৮টি। পুরষ্কার, সম্মাননা, সংবর্ধনা ও স্বীকৃতি ৩৮ টি।
গবেষনা গ্রন্থঃ
|
ইসলামি গ্রন্থ
|
আত্মজৈবনিক ও জীবনী গ্রন্থ
নাটক ও রম্যরচনা
শিক্ষা বিষয় গ্রন্থ
|
তথ্যসূত্র
- সিলেটের সাহিত্য সিলেটের মনীষা, হারূন আকবর, প্রকাশক- সিলেট: জালালাবাদ লোক সাহিত্য পরিষদ, ২০০৫।
- 'সৈয়দ মোস্তফা কামালের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাহিত্য-সংকৃতি চিন্তা', বই লিখেছেন - ডঃ মোহাম্মদ মুমিনুল হক, প্রকাশক - নাবিল মুমিন, সেন্টার ফর বাংলাদেশ রিসার্চ ইউ কে, জুলাই ২০০৫।
- অতীত দিনের সিলেট, সৈয়দ মোস্তফা কামাল, প্রকাশনায় - রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশন সিলেট, ২০০৫
- জাহেদুর রহমান চৌধুরী (১৭ জানুয়ারি ২০১৪)। "সৈয়দ মোস্তফা কামালঃ প্রেরণার অভিভাবক"। দৈনিক সংগ্রাম। ২৬ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৯।
- BanglaNews24.com। "গবেষক ও রম্য লেখক সৈয়দ মোস্তফা কামাল'র মৃত্যু"। banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-২৬।
- শাহ নজরুল ইসলাম (২৮ অক্টোবর ২০১৩)। "শেকড় সন্ধানী লেখক গবেষক সৈয়দ মোস্তফা কামাল জীবনের শেষ বাঁকে"। আঞ্জুমানে তা’লীমুল কুরআন বাংলাদেশ। ২৬ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৯।
- তরফের সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত