সুহাসিনী দাস
সুহাসিনী দাস (জন্ম ১লা ভাদ্র ১৩২২ (বঙ্গাব্ধ) - মৃত্যু মে ২৫, ২০০৯) বাংলাদেশী নারী সংগঠক যিনি বৃটিশ বিরোধী এবং ভারতের স্বাধীনতা অন্দোলনের পূর্ব বাংলায় বিপ্লবী ভূমিকা পালন করেন।[2]

সুহাসিনী দাস সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম প্যারীমোহন রায় ও মায়ের নাম শোভা রায়। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। মাত্র ১৬ বছর বয়সে সিলেট শহরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী কুমুদ চন্দ্র দাসের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের চার বছরের মধ্যেই তার স্বামীর মৃত্যু হয়। এর কিছুদিন পরই তিনি প্রথমে সমাজসেবা ও পরে রাজনীতিতে সক্রিয় হোন। শ্বশুড়ের পরিবার থেকে প্রাপ্ত অঢেল সম্পত্তির খুব সামান্য নিজের খরচের জন্য রেখে বাকি সব সম্পত্তি জণকল্যাণমূলক কাজে বিলিয়ে দিয়েছেন।[3]
‘ভারত ছাড়’ আন্দোলন শুরু হলে ১৯৪২ সালে সুহাসিনী দাসকে কারাগারে যেতে হয়। তিনি ১৯৪৬ সালে সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেন। সুহাসিনী দাস বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেরও সংগঠক। ১৯৪৭ সালে কুলাউড়ার রঙ্গিরকুল পাহাড়ে কংগ্রেস কর্মীরা একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিশেষ করে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দুর্যোগময় দিনগুলোতে তিনি তার বিচক্ষণতা দিয়ে আশ্রমটিকে রক্ষা করেন। পাকবাহিনী যখন গণহত্যা চালাচ্ছিল তখন সুহাসিনী দাস রঙ্গিরকুল আশ্রমে থেকে মানুষের সেবা করেন। বেশ কয়েকবার পাকবাহিনী আশ্রমে হামলা চালালেও প্রতিবারই তিনি আশ্রম ও নিজেকে রক্ষা করেন। স্বাধীনতার পর তিনি সক্রিয় রাজনীতি ছেড়ে যুক্ত হন সমাজসেবায়। বিশেষ করে নারীদের স্বাবলম্বী করার ক্ষেত্রে পালন করেন বিশেষ ভূমিকা। ১৯৭৩ সালে তিনি ভারতের রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে সংবর্ধিত হন। সমাজসেবায় গুরুত্ত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৬ সালে সুহাসিনী দাসকে রাষ্ট্রীয় ‘সমাজসেবা’ পুরস্কার দেওয়া হয়।
তথ্যসুত্র
- সিলেটবাসীর কাছে 'মাসিমা' হিসেবে পরিচিত মহীয়সী নারী সুহাসিনী দাস, দৈনিক কালের কণ্ঠ।
- সিলেট জেলা তথ্য বাতায়নে সুহাসিনী দাস ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ জুন ২০১১ তারিখে, সংগ্রহের তারিখ: নভেম্বর ২৫, ২০১১।
- মনোনীত গুণীজন পাতায় সুহাসিনী দাস, Gunijan.org.bd, সংগ্রহের তারিখ: ২৫ নভেম্বর ২০১১।