শেমাস্‌ হীনি

শেমাস্‌ হীনি (জন্ম এপ্রিল ১৩, ১৯৩৯- ৩০ আগস্ট, ২০১৩) (ইং: Seamus Heaney) বিংশ শতাব্দীর সর্বাগ্রগণ্য ইংরেজিভাষী কবিদের একজন যিনি ১৯৯৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। ইয়েট্‌স্‌, জর্জ বার্নার্ড শ ও বেকেটের পর তিনি চতুর্থ আইরিশ সাহিত্যিক যিনি এই পুরস্কার অর্জন করেন। এই প্রথিতযশা আইরিশ কবি ও অনুবাদক ১৯৬৬ সালে ডেথ অফ এ ন্যাচারালিস্ট্‌ কাব্যগ্রন্থটি লিখে প্রথম লোকখ্যাতি অর্জন করেন। তিনি প্রাচীন ইংরেজি মহাকাব্য বেউলফ আধুনিক ইংরেজিতে রূপান্তর করেছেন।ক[]) তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন এবং অক্সফোর্ড প্রফেসর অব পোয়েট্রি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[1]

শেমাস্‌ হীনি
জন্মশেমাস্‌ জাস্টিন হীনি
(১৯৩৯-০৪-১৩)১৩ এপ্রিল ১৯৩৯
কাসলডসন, উত্তর আয়ারল্যান্ড
মৃত্যু৩০ আগস্ট ২০১৩(2013-08-30) (বয়স ৭৪)
ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড
পেশাকবি, নাট্যকার, অনুবাদক
জাতীয়তাআইরিশ
সময়কাল১৯৬৬ – ২০১৩
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি
  • ডেথ অফ এ ন্যাচারালিস্ট (১৯৬৬)
  • ফিল্ড ওয়ার্ক (১৯৭৯)
  • দ্যা স্পিরিট লেভেল (১৯৯৬)
  • বেউলফ (অনুবাদ, ১৯৯৯)
  • ডিস্টিঙ্কট অ্যান্ড সার্কল্ (২০০৬)
  • হিউম্যান চেইন (২০১০)
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার
  • জিওফ্রে ফেবার স্মারক পুরস্কার Memorial Prize, ১৯৬৮
  • ই এম ফর্স্টার পুরস্কার, ১৯৭৫
  • সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার, ১৯৯৫
  • Commandeur de l'Ordre des Arts et Lettres, 1996
  • Saoi of Aosdána, 1997
  • Golden Wreath of Poetry, 2001
  • টি এস এলিয়ট পুরস্কার, ২০০৬
  • The Griffin Trust for Excellence in Poetry Lifetime Recognition Award, 2012
দাম্পত্যসঙ্গীঅ্যান ডেভলিন (১৯৬৫–২০১৩)
সন্তান
  • মাইকেল
  • ক্রিস্টোফার
  • ক্যাথরিন অ্যান

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

শেমাস্‌ হীনির জন্ম ১৯৩৯ সালের ১৩ এপ্রিল উত্তর আয়ারল্যান্ডের লন্ডনডেরি কাউন্টির ছোট শহর টেমনিয়ারনের কৃষিজীবি ক্যাথলিক পরিবারে। তার কৃষক পিতার খামার ছিল মসবন্‌ অঞ্চলে। অনেক ভাইবোনের কলকাকলিতে মুখর একান্নবর্তী পরিবারে তার শৈশব অতিবাহিত হয়েছে আনন্দঘন পরিবেশে। তার মাসী ম্যারি তাকে স্নেহের আঁচলে সযত্নে বড় করেছেন। ক্যাথলিক ধর্মের নানা অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেছেন।

কর্মজীবনে তিনি শিক্ষকতা করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বেলফাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সাহিত্যকর্ম

জলাভূমি (Bogland)
সন্ধ্যার বিশাল সূর্য টুকরো করার

প্রেইরী প্রান্তর কোনো নেই আমাদের
নিরীক্ষণ মেনে নেয় সর্বত্র এখানে
যথেচ্ছ-সীমানা-ভাঙা দিগন্তবিস্তার

চোখ বশ হয় একচক্ষু সাইক্লোপস্‌ দৈত্যের
মতো গিরি পরিবৃত হ্রদে। পাঁচিলহীন এই
দেশ মূলত জলাভূমি। দিনে দিনে শিলাস্তর রৌদ্রাভ দৃশ্যের ফাঁকে ফাঁকে জমা হয়।

ভূগর্ভ জ্বালানি খুঁড়ে ওরা তুলে আনে
অতীত আইরিশ ইল্‌ক্‌ জাতির কঙ্কাল
তুলে এনে রাখে, যেন এই প্রত্নজীব
হাওয়ায় ভরাট এক অত্যাশ্চর্য ঝুড়ি

খুঁড়ে তুলে আনা হলো যে প্রত্নমাখন
ভূতলে প্রচ্ছন্ন ছিল শতবর্ষ আগে
পূর্ববৎ আছে তার নুন ও শুভ্রতা
এ মাটি কেমন দেখ দয়াপরবশ

গ’লে উন্মোচিত হচ্ছে পদতলে
প্রাচীন মাখন কালো লক্ষ বছরের
প্রাচীনতা মুছে দেয় শেষ তার নাম।
কয়লা কখনো ওরা খুঁড়বে না এখানে।

খুঁড়বে নরম যার শাঁস, ফারগাছ
জলবন্দী সুবিশাল, তাদেরই নিমগ্ন আধোভাগ
ভেঙ্গে চলে আমাদের পূর্বপুরুষ
ভিতরে, ভূতলে, নিরন্তর

যত স্তর করে ওরা অবারিত
আগেই বসতি ছিল তাঁবুবাসীদের
আটলান্টিক ক্ষরণে সিঞ্চিত জলাভূমিময় কূপগুলো

সজল কেন্দ্রের মূলে অতল গহ্বর্।

কবিতার প্রতি তার অনুরাগ কবি টেড হিউজ এর চোখে পড়ে। হিনির কবিতায় বিশেষভাবে প্রতিফলিত হয়েছে মাতৃভূমির প্রতি গভীর মমতা। সমকালীন সমাজ বাস্তবতা, সমাজ সংলগ্ন মানুষ, নিজস্ব সংস্কৃতি, রাজনীতি, জাতিবিদ্বেষের প্রতি তীব্র ঘৃণা, উপনিবেশ বিরোধিতা এইসব প্রসঙ্গও এসেছে মানবিক মূল্যবোধে এবং সমাজ ও রাজনীতি সচেতনতায়। তাই স্থানিক হলেও তিনি সার্বজনীন কবি হিসেবে পরিচিত পেয়েছেন। উদার বৈশ্বিকতার আলোকপ্রাপ্ত কবি হিসেবেও তিনি অনেকর কাছে সমাদৃত।

গ্রন্থ

  • ডেথ অফ এ ন্যাচারালিস্ট
  • ডোর ইন টু দ্য ডার্ক
  • উইন্টারিং আউট
  • স্টেশন আইল্যান্ড
  • দ্য স্কুল ব্যাগ

নাটক

  • দ্য কিউর অ্যাট ট্রয়
  • বেরিয়াল অ্যাট থিবস
  • দ্য মিডনাইট ভারডিক্ট

গদ্য

  • প্রিঅকুপেশন
  • দ্য গভর্নমেন্ট অব দ্য টাং
  • ফাইন্ডার্স কিপার্স

সিমাস হিনি প্রফেসরশিপ

১৯৭০ সালে হিনি

ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজ এর অনারারি ফেলো ছিলেন তিনি। ২০১২ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আইরিশ লেখকদের জন্য সিমাস হিনি প্রফেসরশিপ প্রবর্তন করা হয়। হিনির মতে এটি তার জীবনের অন্যাতম সম্মান।

মৃত্যু

২০১৩ সালের ৩০ আগষ্ট চুয়াত্তর বছর বয়সে প্রয়াত হন সিমাস হিনি।[2][3]

পাদটীকা

  • ^ ক:  বেউলফ (/ˈb.[অসমর্থিত ইনপুট: 'ɵ']wʊlf/ প্রাচীন ইংরেজি ভাষায় রচিত একটি মহাকাব্য। এটি ৩১৮২ চরণের একটি অনুপ্রাসযুক্ত দীর্ঘ কবিতা। সম্ভবত এটিই প্রাচীন ইংরেজিতে রচিত সবচেয়ে পুরনো কবিতা যেটি অদ্যাবধি টিকে আছে। এটিকে সাধারণভাবে প্রাচীন ইংরেজি সাহিত্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রচনা বলে অভিহিত করা হয়।[4] ইংল্যান্ডে খ্রিস্টীয় ৮ম[5][6] থেকে ১১শ শতাব্দীর প্রথম ভাগের মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ে এটি রচিত হয়।[7] এই মহাকাব্যের রচয়িতা কোনো এক অজ্ঞাতনামা অ্যাংলো-স্যাক্সন কবি। গবেষকরা এঁকে ‘বেউলফের কবি’ নামে চিহ্নিত করেন।[8]

তথ্যসূত্র

  1. "Seamus Heaney"Poetry Foundation (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  2. "Poet Seamus Heaney dies aged 74"BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। ৩০ আগস্ট ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  3. Bury, Liz (৩০ আগস্ট ২০১৩)। "Seamus Heaney dies aged 74"the Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  4. "Beowulf – What You Need to Know about the Epic Poem"। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
  5. Tolkien 1958, পৃ. 127টেমপ্লেট:Cnf
  6. Hieatt, A. Kent (১৯৮৩)। Beowulf and Other Old English Poems। New York: Bantam Books। পৃষ্ঠা xi–xiii।
  7. Chase, Colin. (1997). The dating of Beowulf. pp. 9–22. University of Toronto Press
  8. Robinson 2001, ?: 'The name of the poet who assembled from tradition the materials of his story and put them in their final form is not known to us.'
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.