শুভেচ্ছা দূত

শুভেচ্ছা দূত সাধারণতঃ কোন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা, বাণী অথবা মতাদর্শ, চিন্তাধারা একজন থেকে আরেকজনের কাছে কিংবা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দিয়ে থাকেন। কখনো কখনো এটি সমষ্টিবাচক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মূলতঃ সম্মানীয় পদবীধারী ব্যক্তিত্বগণই শুভেচ্ছা দূতের মর্যাদার অধিকারী। এটি ব্যক্তির সাথে প্রতিষ্ঠানের পারস্পরিক চুক্তি কিংবা চাকুরীর সমস্তর পর্যায়ের হয়ে থাকে।

জাতিসংঘ শুভেচ্ছা দূত

জাতিসংঘ তার সদস্যভূক্ত দেশগুলোর মাঝে নির্দিষ্ট লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুভেচ্ছা দূত নিয়োগ করে থাকে। শুভেচ্ছা দূতের মধ্যে - বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নেতা, খেলোয়াড়, চলচ্চিত্র তারকা প্রমূখ পেশাজীবিদেরকে সম্পৃক্ত করা হয়।

জাতিসংঘ শান্তি বার্তাবাহক, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, এইচআইভি ও এইডস্‌ কর্মসূচী, পরিবেশ কার্যক্রম, ইউএনডিপি, ইউনেস্কো, ইউনোডিসি, ইউএনএফপিএ, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, ইউনিসেফ, ইউনিডো, ইউনিফেম, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রমূখ প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য শুভেচ্ছা দূত হিসেবে সময়ে সময়ে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদেরকে নিয়োগ করে থাকে।

শরণার্থীবিষয়ক শুভেচ্ছাদূত

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি'র তারকা খ্যাতিকে উপজীব্য করে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক কমিশন তাকে সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে শুভেচ্ছাদূতের মর্যাদা দেয়। এরফলে জোলি বিশ্বব্যাপী মানুষকে মানবতার স্বপক্ষে কাজ করার জন্য নিজেকে প্রচারকার্য্যে সম্পৃক্ত করেন। এছাড়াও সংস্থার শুভেচ্ছা বার্তা বহনের জন্য - অসভাল্ডো লেপোর্ট, জর্জ ডালার্স, খালেদ হোসেইনি, ক্রিস এক্যুইনো প্রমূখ ব্যক্তিত্বদেরকে মনোনীত করা হয়েছিল।

মধ্যস্থতাকারী

একজন শুভেচ্ছা দূত সাধারণতঃ ব্যক্তিগতভাবে অন্য দেশ থেকে নিযুক্ত হয়ে থাকেন। তিনি একাকী এক দেশ থেকে অন্য দেশে কূটনৈতিক মিশনে কিংবা আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃত্বরক্ষার মিশনে সমমর্যাদার অধিকারী ব্যক্তি হিসেবে দেশে-দেশে, রাজ্যে-রাজ্যে, নগরে-নগরে ভ্রমণ করে জনগণের সম্মুখে সংস্থা কিংবা সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করেন।

সরকারী পর্যায়ে

বিল ক্লিনটন জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে হাইতি গমন করেন

সরকারের অংশ হিসেবে শুভেচ্ছা দূত আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। তিনি কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার দক্ষতা প্রদর্শন করেন; উপহারসামগ্রী বিতরণ করেন; আর্তদের জন্য পণ্যসামগ্রী বণ্টন করেন কিংবা নির্মাণসামগ্রী প্রদান করে থাকেন। শুভেচ্ছা দূত হিসেবে - তারকা, বিজ্ঞানী, লেখক, ভিন্নমতাবলম্বী এবং অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের সমাজসেবক-সহ জনপ্রিয় ও বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ নিয়োগ পান।

দেশ পর্যায়েও শুভেচ্ছা সফরে বিশেষ দূত হিসেবে রাষ্ট্রপ্রধানকে মনোনয়ন দেয়া হয়। তিনি সাধারণতঃ নির্দিষ্ট বার্তা ব্যতীত কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হন না। অধিকন্তু, কয়েকটি দেশ নিজেদের স্বার্থ বজায় রাখার লক্ষ্যে কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে শুভেচ্ছা দূত প্রেরণ করেছে। তেমনি একটি উদাহরণ হচ্ছে - সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে সাথে নিয়ে হাইতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের শুভেচ্ছা সফর।[1]

পণ্যের বিজ্ঞাপন

কোম্পানী বিশেষতঃ বহুজাতিক কোম্পানীগুলো তাদের পণ্যদ্রব্যের প্রচার কার্যক্রমকে আরো গ্রহণযোগ্য, ব্যাপক বিক্রয় ও সুনাম বৃদ্ধিকল্পে সর্বসাধারণকে লক্ষ্য করে পুরস্কারপ্রাপ্ত কিংবা অতি জনপ্রিয় ব্যক্তির সাথে চুক্তিপূর্বক ব্রাণ্ড এম্বাসেডর হিসেবে বিজ্ঞাপন চিত্রে অংশগ্রহণ করায়।

জার্মানির এডিডাস কোম্পানী বিখ্যাত ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারের সাথে চুক্তিপূর্বক বিজ্ঞাপন চিত্র তৈরী করে গণমাধ্যমে তাদের পণ্যের প্রচার কার্যক্রম চালায়।[2]

ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান

হকি খেলার প্রচারণায় শুভেচ্ছা দূত হলেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান অভিনেতা রিয়াজ

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১২ তারিখে বাংলাদেশের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র তারকা রিয়াজ বাংলাদেশে হকি খেলাকে জনপ্রিয় করে তোলার লক্ষ্যে চুক্তিবদ্ধ হন। এতে তিনি শুভেচ্ছা দূত হিসেবে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাথে একযোগে কাজ করবেন।[3]

তথ্যসূত্র

  1. Wyclef Jean, Ban Ki-Moon and Bill Clinton visits Haiti
  2. সচিন তেন্ডুলকারকে ব্রান্ড এ্যাম্বাসেডর করলো এডিডাস
  3. দ্য ডেইলী স্টার, স্পোর্ট, পৃষ্ঠাঃ ১৭, মুদ্রিত সংস্করণ, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১২ইং

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.