রবিউল হুসাইন

রবিউল হুসাইন (৩১ জানুয়ারি ১৯৪৩ - ২৬ নভেম্বর ২০১৯) ছিলেন একজন বাংলাদেশি স্থপতি ও কবি। ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তিনি ২০১৮ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।[1] এছাড়া, তিনি ২০০৯ সালে কবিতায় অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।[2] তিনি শিল্প-সমালোচক, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক ও সংস্কৃতিকর্মী হিসেবেও পরিচিত। ১৯৭১ সালে সংগঠিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

রবিউল হুসাইন
জন্ম(১৯৪৩-০১-৩১)৩১ জানুয়ারি ১৯৪৩
মৃত্যু২৬ নভেম্বর ২০১৯(2019-11-26) (বয়স ৭৬)
জাতীয়তাবাংলাদেশি
যেখানের শিক্ষার্থীবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
পুরস্কারবাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (২০০৯)
একুশে পদক (২০১৮)

তিনি বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সদস্য ছিলেন।[3][4]

প্রারম্ভিক জীবন

রবিউল ১৯৪৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার রতিডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[5] মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক কুষ্টিয়া জেলায় সম্পন্ন করে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বর্তমান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। ১৯৬৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থপত্য বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।[5]

কর্মজীবন

রবিউল স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর স্থপতি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি নিয়মিত লেখালেখিও করতেন। কর্মজীবনে তিনি বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্যসহ শিশু-কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর, ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্রিটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন।

তার নকশায় তৈরি উল্লেখযোগ্য স্থাপনার মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা পরিষদ ভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তি ও স্বাধীনতা তোরণ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ফটক, ভাসানী হল, বঙ্গবন্ধু হল, শেখ হাসিনা হল, খালেদা জিয়া হল, ওয়াজেদ মিয়া সায়েন্স কমপ্লেক্স, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম ও একাডেমিক ভবন কমপ্লেক্স।[6]

উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ

রবিউলের কবিতা, উপন্যাস, শিশুতোষ ও প্রবন্ধ সম্পর্কিত ২৫টির বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।[7] তার লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ হলো:

  • কী আছে এই অন্ধকারের গভীরে
  • আরও উনত্রিশটি চাঁদ
  • স্থিরবিন্দুর মোহন সংকট
  • কর্পূরের ডানাঅলা পাখি
  • আমগ্ন কাটাকুটি খেলা
  • বিষুবরেখা
  • দুর্দান্ত
  • অমনিবাস
  • কবিতাপুঞ্জ
  • স্বপ্নের সাহসী মানুষেরা
  • যে নদী রাত্রির
  • এইসব নীল অপমান
  • অপ্রয়োজনীয় প্রবন্ধ
  • দুরন্ত কিশোর
  • বাংলাদেশের স্থাপত্য সংস্কৃতি
  • নির্বাচিত কবিতা
  • গল্পগাথা
  • ছড়িয়ে দিলাম ছড়াগুলি

মৃত্যু

রবিউল ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ৭৬ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।[5] এরপূর্বে তিনি রক্তের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেন এবং তার পরিবারের সাথে দেখা করেন।[4]

তথ্যসূত্র

  1. "21 named for Ekushey Padak"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৯
  2. "বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার"বাংলা একাডেমি। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৯
  3. "Board of Trustees - Liberation War Museum"liberationwarmuseumbd.org। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৯
  4. প্রতিবেদক, নিজস্ব; ডটকম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "রবিউল হুসাইনের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর সান্ত্বনা"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৯
  5. "কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন আর নেই"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৯
  6. "কবি, স্থপতি রবিউল হুসাইন আর নেই"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৯
  7. "চলে গেলেন কবি রবিউল হুসাইন"ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৯
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.