মুকুল দে
মুকুল চন্দ্র দে (২৩ জুলাই ১৮৯৫ - ১ মার্চ ১৯৮৯) ছিলেন পূর্ণেশশী দেবী এবং কুুলচন্দ্র দের পাঁচ সন্তানের মধ্যে একজন।[1] তিনি শান্তিনিকেতনের ছাত্র ছিলেন এবং ভারতের শুষ্কপৃষ্ঠা-নকশার অগ্রদূত হিসেবে বিবেচিত। মুকুল দের সমগ্র পরিবার শিল্পী প্রতিভায় ভরা ছিল; তার ভাই মনিশি দে একজন সুপরিচিত চিত্রশিল্পী ছিলেন, এবং তাদেরর দুই বোন- অন্নাপুরা এবং রানী, উনারাও কলা এবং কারুশিল্পে সুদক্ষ ছিলেন।[2]
মুকুল দে | |
---|---|
![]() মুকুল দে ( একদম বামদিকে) সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, "কিও-সান" এবং অন্য এক জাপানি মহিলা,টমিটোড়া হারার
বাসভবন সানকেই-এন ইয়োকোহামা, জাপান; ১ অগাস্ট ১৯১৬। | |
জন্ম | মুকুলচন্দ্র দে ২৩ জুলাই ১৮৯৫ শ্রীধরখোলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত |
মৃত্যু | ১ মার্চ ১৯৮৯ ৯৩) | (বয়স
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পরিচিতির কারণ | নকশাকাটা |
দাম্পত্য সঙ্গী | বিনা রায় |
মুকুল দে বিবাহ করেন বীণা রায়কে, যিনি বেঙ্গলের (খানাকুল) অধিবাসী ছিলেন। তাদের একটি মাত্র কন্যা ছিল, নাম মঞ্জুরি। তারা তাকে আদর করে বুখুমা বলে ডাকত। এবং পরবর্তীতে তাদের কন্যা মঞ্জুরি বঙ্গ স্কুল অফ আর্টের মুখ্য চিত্রশিল্পী শান্তনু উকিলের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।[3]
প্রাথমিক জীবন
মুকুল দে প্রথম ভারতীয় শিল্পী ছিলেন যিনি একটি শিল্প হিসেবে মুদ্রণযন্ত্রের অধ্যয়ন করার উদ্দেশ্যে বিদেশে ভ্রমণ করেন।[4] ১৯১৬ সালে,টোকিও ও ইয়োকোহামাতে,তিনি ইয়োকয়ামা তাইকান ও কানজান শিমোমুরার অধীন অধ্যয়ন করেন। ইয়োকোহামাতে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মুকুল দে, জাপানি রেশম-ব্যবসায়ী তমিতারো হারার বিখ্যাত গেস্ট হাউস সানচেইনে বসবাস করতেন, এবং ক্লাসিক্যাল চীনদেশীয় ভাষা এবং নিহোঙ্গা স্টাইলের জাপানি পেইন্টিং অধ্যয়ন করার বিরল সুযোগ উপভোগ করেন, বিশেষ করে সেশু তয়ওর সেরা শিল্পকর্ম।
তিনি তার প্রথম প্রশিক্ষণ শান্তিনিকেতনে গ্রহণ করেন।১৯১৬ সালে তিনি জাপান থেকে আমেরিকা ভ্রমণ করেন, এবং শিকাগোতে জেমস ব্লানডিঙ স্লয়ান এবং বর্থা জ্যাকস এর অধীনে নকশার কৌশল শিখতে যান, আমেরিকান শিল্পী রই পারট্রিডজ এবং তার স্ত্রী ইমজেন কানিংহামের সৌজন্যে। মুকেল দে আহমেদ শিকাগো সোসাইটি অব এ্যাচার্সের আজীবন সদস্য ছিলেন।১৯১৭ সালে ভারতে ফিরে আসেন এবং নকশার তৈরি,একটি চমৎকার শিল্প হিসেবে মনোনিবেশ করেন। তিনি সমৃদ্ধ এবং বিখ্যাত পোর্ট্রেট অঙ্কন তৈরীর মাধ্যমকে সমর্থন করেন এবং এগুলি শিল্পচর্চায় পরিণত করেন।১৯২০ সালে আবার তিনি অধ্যয়নের উদ্দেশ্যে বিদেশে ভ্রমণ করেন,এই সময় ফ্রাঙ্ক শর্ট এবং মুইরহেড বোনের অধীনে নকশা এবং খোদাই শিখতে যান।তিনি লন্ডনে স্ল্যাড স্কুল অব ফাইন আর্ট এবং রয়্যাল কলেজ অব আর্ট উভয়তেই অধ্যয়ন করেন। স্ল্যাড স্কুল অফ আর্টে,তার অধ্যাপক ছিলেন হেনরি তঙ্কস।[5]
কর্মজীবন
১৯২৪ সালে মুকুল দে,গভর্নমেন্ট স্কুল অফ আর্টস,কলকাতার প্রথম ভারতীয় প্রিন্সিপাল নিযুক্ত হন।যেহেতু তিনি ব্রিটিশদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত শিল্প প্রতিষ্ঠানে ভারতীয় পরিচয় প্রকাশ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন,তিনি দ্রুত কোম্পানী স্কুলের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানের বাইরে নিক্ষেপ করেন।[6] তিনি স্কুল অফ আর্টে একটি মহিলা অধ্যায় শুরু করান। তার সময়ের আগে শুধুমাত্র পুরুষ ছাত্ররা এই প্রতিষ্ঠান যোগ দিতে পারতেন। বিভিন্ন ভারতীয় ব্যক্তিত্বের প্রতিকৃতির জন্য মুকুল দেকে স্মরণ করা হয় যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও টাটার পরিবার, আলবার্ট আইনস্টাইন এবং মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী।[5]
প্রদর্শশালা
মুকুল দে এর কৃতকর্ম ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজিয়াম, লন্ডন, ইন্ডিয়ান মিউজআন,কলকাতা, দ্যা ন্যাশনাল গ্যালারী অফ মডার্ন আর্ট এনজিএমএ,মুম্বাই এবং দ্যা ন্যাশনাল গ্যালারী অফ আর্ট,নিউ দিল্লিতে সংগ্রহ রাখা আছে।তার সংরক্ষণাগার শান্তিনিকেতনে চিত্রেলখা নামক, তার প্রাক্তন গৃহে অবস্থিত।[5]
তথ্যসূত্র
- The International Who's Who 1943–44. George Allen & Unwin, 8th edition, London, 1943, p. 197.
- Satyasri Ukil: "Manishi Dey: The Elusive Bohemian." art etc. news & views, February 2012
- Satyasri Ukil: "Shantanu Ukil: Profile of the Painter." Mukul Dey Archives, undated - retrieved 03.Oct.2015
- Bhavna Kakar, Mark, Etch and Print, Art and Deal / Art Konsult, 2006
- Mukul Dey Archives
- Partha Mitter, The Triumph of Modernism, Oxford University Press, 2007
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে মুকুল দে সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |