ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি

ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি (ইংরেজি: United States Army) বা মার্কিন সেনাবাহিনী হচ্ছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর স্থল শাখা। এটি হচ্ছে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর সবচেয়ে পুরোনো এবং সর্ববৃহৎ শাখা। একই সাথে এটি যুক্তরাষ্ট্রে সাতটি ইউনিফর্মড বা উর্দি পরিহিত সার্ভিসের একটি। ১৪ জুন ১৭৭৫ সাল গঠিত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতাকামী কন্টিনেন্টাল আর্মির মাধ্যমেই এই বাহিনীর গোড়াপত্তন।[1] মার্কিন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এই কন্টিনেন্টাল আর্মি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ৩ জুন, ১৭৮৪ সালে কংগ্রেস অফ দ্য কনফেডারেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক ভাবে ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে কন্টিনেন্টাল বাহিনীকে বিলুপ্ত করে নতুন সেনাবাহিনী তৈরির পদক্ষেপ হিসেবে এমনটি করা হয়।[2][3] বর্তমান সেনাবাহিনী নিজেও নিজেকে কন্টিনেন্টাল বাহিনী থেকে উদ্ভূত একটি বাহিনী হিসেবে স্বীকার করে।[1]

ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি
ইউনাইটেড স্টেটস আর্মির সীলমোহর
সক্রিয়১৪ জুন, ১৭৭৫ – বর্তমান
দেশমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ধরনসেনাবাহিনী
আকার৫,৪৯,০১৫ জন কর্মরত সদস্য
৫,৬৩,৬৮৮ জন সংরক্ষিত এবং ন্যাশনাল গার্ড সদস্য
অংশীদারডিপার্টমেন্ট অফ ওয়ার
(১৭৮৯-১৯৪৭)
ডিপার্টমেন্ট অফ আর্মি
(১৯৪৭-বর্তমান)
নীতিবাক্যদিস উই উইল ডিফেন্ড
যুদ্ধসমূহমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা যুদ্ধ
ইন্ডিয়ান যুদ্ধ
১৮১২-এর যুদ্ধ
মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধ
ইউটাহ যুদ্ধ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ
স্পেনীয়-মার্কিন যুদ্ধ
ফিলিপাইন-মার্কিন যুদ্ধ
ব্যানানা যুদ্ধ
বক্সার রেবেলিয়ন
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
কোরীয় যুদ্ধ
ভিয়েতনাম যুদ্ধ
উপসাগরীয় যুদ্ধ
সোমালি গৃহযুদ্ধ
কসভো যুদ্ধ
আফগানিস্তান যুদ্ধ
ইরাক যুদ্ধ
কমান্ডার
সেনাপ্রধানজেনারেল জর্জ ডব্লিউ কেসি, জুনিয়র
উপসেনাপ্রধানজেনারেল পিটার ডব্লিউ চিয়ারেলি
সার্জেন্ট মেজরসার্জেন্ট মেজর কেনেথ ও প্রেসটন
প্রতীকসমূহ
সেনানিয়োগ লোগো

মার্কিন সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রয়োজনীয় লোকবল ও সামর্থ্য সহযোগে জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কৌশলাদি প্রয়োগ করা।[4] মার্কিন সেনাবাহিনী ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ দি আর্মির আওতাভুক্ত একটি সামরিক শাখা। একই সাথে এটি ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্স বা মার্কিন প্রতিরক্ষা অধিদপ্তরের অধীন তিনটি সামরিক বিভাগের একটি। এই সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে আছেন সেক্রেটারি অফ দি আর্মি (সেনা সচিব), এবং সেনাপ্রধান বা চিফ অফ স্টাফ অফ দি আর্মি হচ্ছেন এই বাহিনীর সর্বোচ্চ পদমর্যাদাধারী ব্যক্তি। ২০০৯ অর্থবছরের এক প্রতিবেদন অনুসারে এই বাহিনীতে তৎকালীন কর্মরত সদস্য সংখ্যা ৫,৪৯,০১৫ জন, আর্মি ন্যাশনাল গার্ডে কর্মরত সদস্য সংখ্যা ৩,৫৮,৩৯১ জন, এবং সংরক্ষিত সদস্য সংখ্যা ২,০৫,২৯৭ জন। সব মিলিয়ে এই বাহিনীর মোট সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ১১,১২,৭০৩ জন।[5]

ইতিহাস

উৎপত্তি

১৭৭৫ সালের ১৪ জুন আমেরিকার স্বাধীনতাকামী কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস স্বাধীনতা যুদ্ধে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে কন্টিনেন্টাল আর্মি গঠন করে। এই বাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন জর্জ ওয়ার্শিংটন[1] প্রাথমিকভাবে পূর্বতন ব্রিটিশ সেনাবাহনীতে কর্মরত সেনা কর্মকর্তাদের এই বাহিনীর অধিনায়ক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিলো। এর ফলে এই সেনাবাহিনীতে কিছু ব্রিটিশ ঐতিহ্যের চল শুরু হয়েছিলো। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলার সাথে সাথে ফরাসিদের সাহায্য, এবং সামরিক চিন্তাধারা নতুন এই সেনাবাহিনীকে প্রভাবিত করতে শুরু করে। এছাড়া প্রুশীয় সাহায্য ও নির্দেশনাও এই বাহিনীতে প্রভাবান্বিত করে। উদাহরণস্বরূপ, প্রুশীয় সেনানায়ক ফ্রিডরিখ ভিলেম ফন স্টেউবেন এই সেনাবাহিনীর ওপর বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখেছিলেন।

যুদ্ধ পরিচালনায় জর্জ ওয়াশিংটন ফেবিয়ান কৌশল এবং হিট-অ্যান্ড-রান কৌশল গ্রহণ করেন। এভাবে তিনি ব্রিটিশ বাহিনী ও তাদের মদদপুষ্ট হেসিয়ানদের দূর্বলতম স্থানে আঘাত হানা শুরু করেন। ওয়াশিংটন ব্রিটিশদের সাথে ট্রেন্টন ও প্রিন্সটনের যুদ্ধে জয়লাভের পর দক্ষিণের দিকে অগ্রসর হওয়া শুরু করেন। ইয়র্কটাউনের যুদ্ধে ব্রিটিশদের পরাজিত করা ও ফরাসি, স্পেনীয়, ও ওলন্দাজদের মিলিত সহযোগিতায় কন্টিনেন্টাল আর্মি ব্রিটিশদের কোণঠাসা করা শুরু করে। অবশেষে ১৭৮৩ সালে প্যারিস চুক্তির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

তথ্যসূত্র

  1. "14 June: The Birthday of the U.S. Army"। United States Army Center of Military History।, The Continental Army
  2. Library of Congress, Journals of the Continental Congress, Volume 27
  3. Army Birthdays. history.army.mil
  4. 2005 Posture Statement ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ জুলাই ২০০৮ তারিখে. U.S. Army, 6 February 2005
  5. Army FY2009 Demographics brochure ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে. US Army

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.