ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় বাংলাদেশের ভোলা জেলার ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিষ্ঠান, যা ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। ভোলা শহরের উওর কেন্দ্রস্থলে নতুন বাজার সংলগ্ন কাকচক্ষু পুকুরের সামনে শতবর্ষ পুরানো ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থান। বর্তমানে বিদ্যালয়টির অধীনে তৃতীয় শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়। মূলত মূল ব্যবস্থাপনায় ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পরিচালিত হয় বলে বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক স্কুল হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ। বিদ্যালয়টি প্রভাতি এবং দিবা -এই দুই শাখায় পরিচালিত হয়।

ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
অবস্থান
নতুন বাজার, ভোলা
বাংলাদেশ
তথ্য
ধরনসরকারি
প্রতিষ্ঠাকাল১৯১৮ খ্রিস্টাব্দ
বিদ্যালয় বোর্ডবরিশাল বোর্ড
শিক্ষাবিষয়ক কর্তৃপক্ষমাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর
শ্রেণীপ্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল
শ্রেণী৩য়-১০ম
লিঙ্গবালক
ভাষার মাধ্যমবাংলা
ডাকনামসরকারি স্কুল
ওয়েবসাইটhttp://www.bholaghs.gov.bd

ইতিহাস

ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ১৯০৬ সালে ভোলার নতুন বাজারে স্থাপিত হয়। তখন স্কুলটি ছিল টিনের ঘরের এবং সাথে বোর্ডিংও ছিল। স্বদেশী আন্দোলন এর সময় সন্ত্রাসবাদীরা তৎকালীন সরকারি স্কুলটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তখন ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান স্থানে স্কুলটি স্থাপিত হয়। এটি ভোলা জেলার সবচেয়ে পুরাতন এবং ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়।

বিবরণ

পোষাক

বিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য পোষাকের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম হলো সাদা রঙের শার্টপ্যান্ট। এছাড়া পোষাক হিসেবে সাদা কেড্‌স বা জুতা পরতে হয়। কোমরে কালো বেল্ট পরার অনুমতি রয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয় থেকে বুকে ধারণ করার জন্য প্লাস্টিকের ব্যাজ কিংবা কাপড়ের ব্যাজ দেয়া হয়।

বিদ্যালয় পরিক্রমা

বিদ্যালয়ের প্রাত্যহিক সমাবেশের জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে প্রাত্যহিক কার্যক্রমের শুরু হয়। সমাবেশের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয় এবং সমাবেশ তাতে সম্মান প্রদর্শন করে। সমাবেশের শিক্ষার্থীরা দেশ ও জাতির সেবা করার শপথ নেয়। সমাবেশ শেষে ক্লাস শুরু হয় স্ব স্ব শ্রেণীকক্ষে। শ্রেণী কার্যক্রম দুই শিফটে, রুটিন অনুযায়ী পরিচালিত হয়। শিক্ষার্থীদের থেকে নির্ধারিত ফি'র বিনিময়ে সপ্তাহের পাঁচদিন টিফিন দেয়া হয়, এই ফান্ড পরিচালনার দায়িত্ব থাকে একজন শিক্ষকের উপর। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রদের ব্যবহারিক পাঠদানের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণসহ বিদ্যালয়ের রয়েছে একটি ঐতিহ্যবাহী বিজ্ঞানাগার। এছাড়া রয়েছে বিদ্যালয় গ্রন্থাগার। তাছাড়া রয়েছে একটি বিশাল কম্পিউটার ল্যাব।

শিক্ষাসহায়ক কার্যক্রম

সাধারণ পাঠ্যপুস্তকের শিক্ষার বাইরে সাহিত্য ও সংস্কৄতি অঙ্গনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেমন- সাধারণ জ্ঞান, উপস্থিত ও নির্ধারিত বক্তৃতা, বিতর্ক, সংগীত, আবৃত্তি, হামদ্, নাত-এ-রাসূ্ল ইত্যাদি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতি বছরই বিদ্যালয়ে বার্ষিক মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়ে থাকে। বিদ্যালয়ের হিন্দু ছাত্রগণ বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবছর সরস্বতী পূজাও উদযাপন করে আসছে। বিদ্যালয়ের আন্তঃসংগঠনের মধ্যে স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট এবং বিএনসিসি'র কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য। এই তিন সংগঠন, বিশেষ করে বিএনসিসি কোরের সদস্যবৃন্দ প্রতি বছর বিজয় দিবসে কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করে থাকে। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বহুবিধ অনুষ্ঠানে স্কাউটদল অংশগ্রহণ করে থাকে তারা। তাছাড়া বিএনসিসি প্লাটুনটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ক্যাডেটদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। এই স্কুলের বিএনসিসি স্কুল ভরতি কারযক্রমে নিরাপত্তার দায়িত্ত সফলতার সাথে পালন করে আসছে।

ফলাফল

বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে প্রায় প্রতি বছরই সাফল্য পরিলক্ষিত হয়। প্রতিবছরই মাধ্যমিক ও সমমানের পরিক্ষায় ভালো ফলাফল করে আসছে এবং বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে সেরা দশের তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে। ২০১২ সালের মাধ্যমিক পরিক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১৪০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫২ জন। পাশের হার শতকরা ১০০%। ২০১২ সালে বিদ্যালয়টি বরিশাল বোর্ডে ৬ষ্ঠ এবং জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে নেয়।[1] ২০১৩ সালের মাধ্যমিক পরিক্ষায় ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভোলা জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। [2]। ২০১৩ সালে মাধ্যমিক পরিক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১৫৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬২ জন। পাশের হার শতকরা ৯৯.৩৭। এছাড়াও জে,এস,সি এবং প্রাথমিক সমাপনী পরিক্ষায়ও বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের মধ্য দিয়ে বিদ্যালয়টি এর সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে আসছে।

পাদটীকা

  • বিদ্যালয় বার্ষিকী'০৯ (অনুধ্যান), ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাহিত্য পত্রিকা; প্রকাশকাল: ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ; সংগ্রহের তারিখ: ০২ মে ২০১০।
  • স্মরণিকা (শিকড়ের সন্ধানে) , ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকা; প্রকাশকাল: ২৯ জানুয়ারি ২০১১ খ্রিস্টাব্দ (১৪১৭ বঙ্গাব্দ); সংগ্রহের তারিখ: ২৫ সেপ্টেবর ২০১১।

উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী

তথ্যসূত্র

  1. মাধ্যমিক পরীহ্মায় বরিশালের সেরা ২০টি শিহ্মা প্রতিষ্ঠান, আমাদের বরিশাল ওয়েবসাইট, প্রকাশিত হয়েছে ৭ই মে, ২০১২।
  2. ভোলায় মাধ্যমিক পরীক্ষায় সরকারি বালক বিদ্যালয় জেলার শীর্ষে ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে, bd24live.com, প্রকাশিত হয়েছে ৯ই মে, ২০১৩।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.