ভোপাল জেলা

ভোপাল জেলা হল মধ্য ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের একটি জেলাভোপাল শহরটি জেলার প্রশাসনিক সদর দপ্তর হিসাবে কাজ করে। জেলাটি ভোপাল বিভাগের অন্তর্গত।

ভোপাল জেলা
মধ্যপ্রদেশের জেলা
মধ্যপ্রদেশে ভোপাল জেলার অবস্থান
দেশভারত
রাজ্যমধ্যপ্রদেশ
বিভাগভোপাল
সদর দপ্তরভোপাল
সরকার
   লোকসভা কেন্দ্রভোপাল
আয়তন
  মোট২৭৭২ কিমি (১০৭০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
  মোট২৩,৭১,০৬১[1]
জনসংখ্যার উপাত্ত
  সাক্ষরতা৮২.৩%[2]
  যৌন অনুপাত৯১১[1]
সময় অঞ্চলআইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০)
ওয়েবসাইটhttp://bhopal.nic.in

ইতিহাস

বর্তমান জেলা অঞ্চলটির প্রাথমিক ইতিহাস অজ্ঞাত। একটি কিংবদন্তি অনুসারে, অঞ্চলটি "মহাকৌতার" অংশ ছিল, যেটি উত্তর ভারতকে দক্ষিণ ভারত থেকে পৃথক করে রাখা ঘন বন এবং পাহাড়এর প্রাচীর। খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীর পর থেকে, রাজপুত শাসক মালোবার নাম (ভোজা সহ) ঐতিহাসিক নথিতে পাওয়া গেছে। ইলতুতমিশের অধীনে দিল্লি সুলতানি দ্বারা আক্রমণের পরে এখানে মুসলমানদের সংখ্যা বেড়েছে। ১৪০১ সালে, দিলওয়ার খান ঘোরি (হোসাং শাহের পিতা) ধর অঞ্চল থেকে শাসন করে এই অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন।[3]

১৪শ শতকে, এক গোন্দ যোদ্ধা যাদোরাম একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যার সদর দপ্তর ছিল গড়-মন্দলাতে। ১৫৬১ সালে মুঘলরা মালোবা আক্রমণ করার সময়, অঞ্চলটি চাকলা নামে পরিচিত অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। বর্তমানের ভোপাল জেলা গিন্নোর চাকলার অংশ ছিল, যার মধ্যে ৭৫০ গ্রাম ছিল। গোন্দ সেনাপতি নিজাম শাহ তাঁর গিন্নোরগড় দুর্গ থেকে এই গ্রামগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর, আফগান বেতনভোগী সৈনিক দোস্ত মোহম্মদ খান তাঁর বিধবা কমলাপতির হয়ে এই রাজ্য পরিচালনা করছিলেন। কমলাপতির মৃত্যুর পরে, খান এই অঞ্চল এবং প্রতিবেশী অঞ্চলগুলি দখল করলেন এবং ভোপাল দেশীয় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করলেন। তিনি ইসলামনগর শহরটি এবং আধুনিক ভোপাল শহর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[3] সুলতান মোহাম্মদ খান এবং ফয়েজ মোহাম্মদ খান এর মধ্যে উত্তরাধিকার যুদ্ধ হয়েছিল। তাঁর পুত্র ইয়ার মোহম্মদ খান মারাঠাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর, সুলতান মোহম্মদ খান এবং ফৈজ মোহম্মদ খান এই দুই জনের মধ্যে উত্তরাধিকার দাবী নিয়ে যুদ্ধ হয়েছিল। এই সময় ভোপালের নবাবেরা মারাঠাদের জন্য কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল।। ফৈজ ছিলেন ধর্ম সংস্কারক, এবং তাঁর সৎমা মামোলা বাঈ দক্ষতার সঙ্গে, তাঁর হয়ে, রাজ্য শাসন করেছিলেন তাঁর পরবর্তী শাসকেরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রেখে চলেছিলেন, শেষ পর্যন্ত তারাই ভারতের শাসক হয়ে বসেছিল।[3]

১৮১৯ এবং ১৯২৬ সালের মধ্যে, ভোপালে চারজন মহিলা শাসক শাসন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন শাহ জাহান বেগম এবং সুলতান জাহান, ভোপালের বেগম। ভারতের স্বাধীনতার পর, তাঁর পুত্র হামিদুল্লা খান চেয়েছিলেন ভোপালকে স্বাধীন অংশ হিসাবে ধরে রাখতে, কিন্তু এই সিদ্ধান্তে জন প্রতিবাদ শুরু হয়। ১৯৪৯ সালের ৩০শে এপ্রিল, নবাব পশ্চাদপসরণ করলেন এবং ভারত অধিরাজ্যে প্রবেশের অঙ্গীকার করে স্বাক্ষর করলেন।[4] ভারত সরকার ১লা জুন ১৯৫৯ সালে, রাজ্যটি অধিগ্রহণ করে এবং ভোপাল রাজ্য (১৯৪৯–৫৬) তৈরি হয়।

১৯৫৬ সালে রাজ্য পুনর্গঠন আইন বলবৎ হবার পর, ভোপাল রাজ্যটি নবগঠিত মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের সেহোর জেলায় অধিভুক্ত হয়। ভোপাল শহরটিকে মধ্য প্রদেশের রাজধানী হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ২৬শে জানুয়ারী ১৯৭২ সালে, মধ্যপ্রদেশ সরকার ঘোষণা করেছিল যে ভোপালকে একটি পৃথক জেলা করা হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে, ২৬শে নভেম্বর ১৯৭২ সালে, সেহোর জেলা থেকে ভেঙ্গে ভোপাল জেলা তৈরি হয়েছিল।[3]

জনসংখ্যার উপাত্ত

২০১১ আদমশুমারি অনুসারে, ভোপাল জেলার জনসংখ্যা ২,৩৭১,০৬১ জন,[1] লাতভিয়া[5] বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর জনসংখ্যার প্রায় সমান।[6] জনসংখ্যার ভিত্তিতে এটি ভারতে ১৮৯ তম স্থান পেয়েছে (মোট ৬৪০ জেলার মধ্যে)।

এই জেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব ৮৫৫ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (২,২১০ জন/বর্গমাইল)। এর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২০০১ - ২০১১ এর দশকে ২৮.৪৬% ছিল। ভোপালে প্রতি এক হাজার পুরুষের জন্য ৯১৮ জন মহিলা (যৌন অনুপাত রয়েছে, এবং সাক্ষরতার হার ৮০.৩৭%।[1]

২০১১ সালে ভারতের আদমশুমারি অনুসারে, জেলার ৮৫.৫৪% জনগণ হিন্দিতে, ৬.৭৬% উর্দুতে, ২.৬১% মারাঠিতে, ২.২৩% সিন্ধিতে, ০.৬০% মালয়ালমে, ০.৫৪% পাঞ্জাবীতে এবং ০.৫২% বাংলাতে, তাদের প্রথম ভাষা হিসাবে কথা বলে।[7]

ঐতিহাসিক জনসংখ্যা
বছরজন.ব.প্র. ±%
১৯০১১,৪৩,৯৫৮    
১৯১১১,৫৬,৩৫৪+০.৮৩%
১৯২১১,৪০,৩০০−১.০৮%
১৯৩১১,৬৩,৭৪৭+১.৫৬%
১৯৪১১,৮৮,৬০৮+১.৪২%
১৯৫১২,৩৫,৬৬৫+২.২৫%
১৯৬১৩,৭১,৭১৫+৪.৬৬%
১৯৭১৫,৭২,১৬৯+৪.৪১%
১৯৮১৮,৯৪,৭৩৯+৪.৫৭%
১৯৯১১৩,৫১,৪৭৯+৪.২১%
২০০১১৮,৪৩,৫১০+৩.১৫%
২০১১২৩,৭১,০৬১+২.৫৫%
সূত্র:[8]

তথ্যসূত্র

  1. "Bhopal District Census 2011 Handbook" (PDF)। Office of The Registrar General & Census Commissioner, Government of India। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৬
  2. "Total Population, child population in the age group 0-6, literates and literacy rates by sex: 2011"। Office of The Registrar General & Census Commissioner, Government of India। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১১
  3. 2011 District Census Handbook: Bhopal
  4. S.R. Bakshi and O.P. Ralhan (২০০৭)। Madhya Pradesh Through the Ages। Sarup & Sons। পৃষ্ঠা 360। আইএসবিএন 978-81-7625-806-7।
  5. US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-০১Latvia 22,04,708 July 2011 est.
  6. "2010 Resident Population Data"। U. S. Census Bureau। ১৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০New Mexico - 2,059,179
  7. 2011 Census of India, Population By Mother Tongue
  8. Decadal Variation In Population Since 1901

বহিসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.