বেলুন
বেলুন (ইংরেজি: Balloon) হচ্ছে গ্যাস যেমন হিলিয়াম, হাইড্রোজেন, নাইট্রাস অক্সাইড অথবা বাতাস ভর্তি একটি ব্যাগ বা থলে। আধুনিক বেলুন যদিও রাবার, ল্যাটেক্স, পলিক্লোরোফেরেন, নাইলন দিয়ে তৈরি হয়, তবে পূর্বে বেলুন তৈরি হতো পশু যেমন শুকরের মূত্রথলী থেকে। বহুকাল ধরে বেলুনকে মানুষ তার আকাশযান হিসেবে ব্যবহার করছে। আধুনিক যুগে বেলুনে আকাশ ভ্রমণ একপ্রকার প্রমোদভ্রমণ হিসেবে উপভোগ্য। তবে বিভিন্ন গবেষণা, জরিপ কিংবা সহজসাধ্য আকাশ ভ্রমণে বেলুনযান গুরুত্বের সাথেই ব্যবহৃত হয়।


খেলনা বেলুন
শিশুরা খেলনা হিসেবে যে বেলুন ব্যবহার করে থাকে, তা সাধারণত ল্যাটেক্সের তৈরি হয়। সাধারণত মুখ দিয়ে জোরে ফু দিয়ে ফুলিয়ে এজাতীয় বেলুন ব্যবহৃত হয়। তবে ভিতরে কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহৃত হয় বলে বেলুন, বাতাসের তুলনায় ভারি হয়ে যায় এবং বাতাসে ভাসতে পারে না। রঙ-বেরঙের বেলুন দিয়ে জন্মদিনের উৎসবে ঘর সাজানোর রেওয়াজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখা যায়।
গ্যাস বেলুন
সাধারণ বেলুনে হাইড্রোজেন গ্যাস ভরা হলে তা বাতাসে ভাসে। তখন বেলুনের মুখ সুতায় বেঁধে সে সুতা হাতে ধরে রাখতে হয়। হাইড্রোজেন গ্যাস বাতাসের চেয়ে হালকা বিধায় এরকম বেলুন বাতাসে ভাসে। শান্তির প্রতীক কবুতর উড়িয়ে যেমন অনেক অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয় তেমনি একগুচ্ছ গ্যাস বেলুন অবমুক্ত করে অনুষ্ঠান উদ্বোধনের রেওয়াজ চালু হয়েছে। গ্যাস বেলুন ছেড়ে দিলে ভাসতে ভাসতে তা ক্রমশ: আকশে উঠে যায়। তবে সুতায় মুখ বাঁধা হলেও গ্যাস ‘লিক’ হয়ে যেতে থাকে এবং একসময় বেলুন নিচে নামতে শুরু করে।
বেলুনযান
বেলুন যখন যান হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তখন তার আকৃতি হয় যথেষ্ট বড় এবং তা ভর্তি করা হয় সাধারণ বাতাসের থেকে হালকা কোনো গ্যাস দিয়ে —সাধারণত হিলিয়াম দিয়ে। বেলুনের নিচের দিকে একটা বাঁশ কিংবা বেতের ঝুড়ি রশি দিয়ে লাগানো থাকে। বেলুনকে গ্যাস পুরে ফুলিয়ে নিলে তা উর্ধ্বমুখী হয়, তখন তার নিচে ঝুড়িটা ঝুলে থাকে এবং মানুষ বা বেলুন যাত্রী এই ঝুড়িতে অবস্থান করেন। অতীতে বেলুনের উচ্চতা নিয়ন্ত্রণের জন্য ঝুড়িতে রাখা হতো বালির বস্তা। পরবর্তিতে বেলুনের উপরিভাগে আলগা পরিচলনক্ষম পর্দা লাগানোর মাধ্যমে বেলুনের ভিতরকার বাতাস প্রয়োজনমতো বের করে দেয়া ও ধরে রাখার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে বেলুনের নিয়ন্ত্রণকে সহজ করা হয়।