বুনসেন বার্নার

বুনসেন বার্নার (ইংরেজি: Bunsen burner) গবেষণাগারে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে রক্ষিত একখণ্ড সাধারণ উপকরণ। মূলতঃ রসায়ন বিষয়ে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানের দহনক্রিয়া সংঘটন, জীবাণু ধ্বংস সাধনের লক্ষ্যে যথোপযুক্ত উত্তাপের জন্যে বুনসেন বার্নার বা জ্বলন্ত স্টোভজাতীয় যন্ত্রের প্রয়োজন পড়ে।[1][2][3][4][5] আগুনের সাহায্যে প্রজ্জ্বলিত গ্যাসে যন্ত্রটি কাজ করে। যন্ত্রটি বিভিন্ন ধরনের শিখার জন্ম দেয় এবং প্রত্যেকটি শিখাই স্বতন্ত্র রঙের হয়ে থাকে। এটি প্রচণ্ড উত্তাপের পরিবেশ সৃষ্টি করে। এর তাপ প্রদানের সক্ষমতা ১৩০০° সে. থেকে ১৬০০° সে. এর মধ্যে হয়ে থাকে।[6] প্রাকৃতিক গ্যাস বিশেষ করে মিথেন কিংবা প্রোপেন, বিউটেন অথবা উভয়ের সংমিশ্রণে গঠিত এলপিজি বা তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস এ যন্ত্রের প্রধান উপকরণ।

বুনসেন বার্নার
ব্যবহারউত্তাপ
জীবাণু ধ্বংস
দহনক্রিয়া
সম্পর্কযুক্তHot plate
Heating mantle
Meker-Fisher burner
Teclu burner

ইতিহাস

রবার্ট ভিলহেল্ম বুনসেন নামীয় জার্মান রসায়নবিদের নামানুসারে যন্ত্রটির নামকরণ করা হয়েছে। তিনি যন্ত্রটির আবিষ্কারক নন, কিন্তু যন্ত্রের মানোন্নয়ন ঘটিয়েছেন মাত্র। ১৮৫২ সালে হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রবার্ট বুনসেনকে নতুন একটি গবেষণাগার স্থাপনের উদ্দেশ্যে নিয়োগ করেন। ১৮৫৪ সালের শেষদিকে ভবনের নির্মাণ কাজ চলা অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রপ্রকৌশলী পিটার দেসাগাকে নিয়ে যন্ত্রের মানোন্নয়নে আত্মনিয়োগ করেন। ১৮৫৫ সালে তিনি ও দেসাগা গ্যাস-বাতাসের সংমিশ্রণে আগুন জ্বালানোর ধারণা গ্রহণ করে এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। গবেষণাগারটি ১৮৫৫ সালের শুরুতে উদ্বোধন করা হয় এবং দেসাগা বুনসেনের ছাত্রদের ব্যবহারের জন্যে পঞ্চাশটি যন্ত্র তৈরী করেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে বুনসেন দুই বছর পর বিস্তারিত প্রকাশ করেন। তার অনেক সহকর্মী যন্ত্রের নতুন নকশাটিকে খুব দ্রুত গ্রহণ করেন। প্রকৃতপক্ষে মাইকেল ফ্যারাডে বুনসেন যন্ত্রের আবিষ্কারক। প্রয়োজনীয় উত্তাপ, স্থিরতা, ধোঁয়াবিহীন শিখার জন্যে এটি বিশ্বের সকল গবেষণাগারে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।[7] দহন যন্ত্রটি বহনযোগ্য ও ক্ষুদ্রাকৃতির হয়ে থাকে। উলম্বভাবে সাজানো ধাতব নলের সাথে গ্যাসের উৎসস্থলের সংযোগ থাকে ও নীচ দিকের ছিদ্র দিয়ে বাতাস প্রবেশ করানো হয়। বাতাসের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য টিউবে ছোট্ট একটি চাকতি থাকে।

তথ্যসূত্র

  1. Lockemann, G. (১৯৫৬)। "The Centenary of the Bunsen Burner"। J. Chem. Ed.33: 20–21। doi:10.1021/ed033p20বিবকোড:1956JChEd..33...20L
  2. Rocke, A. J. (২০০২)। "Bunsen Burner"। Oxford Companion to the History of Modern Science। পৃষ্ঠা 114।
  3. William B. Jensen (২০০৫)। "The Origin of the Bunsen Burner" (PDF)J. Chem. Ed.82 (4): 518। doi:10.1021/ed082p518বিবকোড:2005JChEd..82..518J। জুলাই ২০, ২০১১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা।
  4. Griffith, J. J. (১৮৩৮)। Chemical Reactions – A compendium of experimental chemistry (8th সংস্করণ)। Glasgow: R Griffin and Co.।
  5. Kohn, Moritz (১৯৫০)। "Remarks on the history of laboratory burners"। J. Chem. Educ.27 (9): 514। doi:10.1021/ed027p514বিবকোড:1950JChEd..27..514K
  6. "Flame Temperatures"
  7. Ihde (১৯৮৪-০৪-০১)। The development of modern chemistry। Courier Dover Publications। পৃষ্ঠা 233–236। আইএসবিএন 978-0-486-64235-2। একের অধিক |লেখক= এবং |শেষাংশ= উল্লেখ করা হয়েছে (সাহায্য)

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Fuel gas

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.