পরীক্ষাগার

পরীক্ষাগার বা গবেষণাগার (/ləˈbɒrətəri/ বা /ˈlæbərətri/); (ইংরেজি: Laboratory, Lab) একটি কর্ম স্থান, যেখানে বৈজ্ঞানিক গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা অথবা পরিমাপ কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়। ল্যাবরেটরিকে সংক্ষেপে ল্যাব বলা হয়। পরীক্ষাগার একটি নির্দিষ্ট জায়গা হিসেবে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সহযোগে যথাযথ প্রক্রিয়া ও নির্দেশনাবলী অনুসরণে কার্য সম্পাদন করা হয়। বৈজ্ঞানিক গবেষণাগারের মধ্যে রয়েছে -

  • ফিল্ম ল্যাবর‌্যাটরি বা ফটোগ্রাফিক ল্যাবর‌্যাটরি বা ডার্করুম
  • কম্পিউটার ল্যাব
  • মিডিয়া ল্যাব
  • মেডিক্যাল ল্যাব
  • জনস্বাস্থ্য ল্যাব
  • গোপনীয় ল্যাব যেখানে অবৈধ পন্থায় মাদকদ্রব্য প্রস্তুত করা হয়।
অষ্টাদশ শতকের রসায়ন গবেষণাগার

কর্ম পরিধি

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো আবিষ্কারের জন্যে শিক্ষণ, নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন এবং সাংগঠনিক দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে ল্যাব গঠন করছে। এতে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে গবেষণালদ্ধ জ্ঞান তাদের কর্মকর্তাদের মাঝে বিস্তার লাভ করে। বিভিন্ন বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় বৈজ্ঞানিক গবেষণাগার দেখা যায়। এছাড়াও, সরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা সামরিক বাহিনীসহ জাহাজ এবং মহাশূন্যযানেও গবেষণাগার রয়েছে। গবেষণাগারে সচরাচর এক থেকে অনধিক ত্রিশজন গবেষক কাজ করার সুযোগ পান। অবশ্য তা নির্ভর করে গবেষণাগারের আকার, আয়তন ও উদ্দেশ্যের উপর।

বৈজ্ঞানিক গবেষণাগার

মূলতঃ ল্যাব ব্যবহার করা হয় বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্যে। নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বা দক্ষতা অর্জনে এ ধরনের গবেষণাগার বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। তন্মধ্যে - পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যার জন্যে পৃথক গবেষণাগার রয়েছে। শুকনো আবহাওয়ার উপযোগী করে রসায়নবিদ্যা ও জীববিদ্যার গবেষণাগার তৈরী করা হয়। এছাড়া, মনোবিদ্যাবিষয়ক গবেষণাগারের এক প্রান্তে আয়নাসহ গোপন ক্যামেরা রাখা হয় আচরণ পর্যবেক্ষণের জন্যে।

কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা কম্পিউটার কিংবা সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করে ডাটা সংগ্রহপূর্বক বিশ্লেষণের জন্য গবেষণাগার ব্যবহার করেন। অন্যান্য বিষয়ের বিজ্ঞানীরাও তাঁদের উপযোগী করে গবেষণাগারে কর্মরত থাকেন। বিভিন্ন গবেষণাগারের মধ্যে বিরাট ধরনের পার্থক্য থাকলেও প্রায় প্রত্যেকটি গবেষণাগারেই কার্যোপযোগী বেঞ্চ বা ওয়ার্কবেঞ্চ থাকে। এ ধরনের বেঞ্চ মূলতঃ স্বাচ্ছন্দ্যে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে কাজ করার নিশ্চয়তা বিধানের জন্যে তৈরী করা হয়। কেননা, একজন বিজ্ঞানী বা গবেষক দিনের অধিকাংশ সময় গবেষণাগারে ব্যয় করে থাকেন।

গবেষণাগারের জন্যে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও যন্ত্রাংশ সংরক্ষণের জন্যে ছোট ছোট প্রকোষ্ঠের ব্যবস্থা রাখা হয়। সনাতনী পন্থায় বিজ্ঞানীরা পরীক্ষণের উন্নতি কিংবা অবনতির জন্যে ল্যাবরেটরী নোটবুক ব্যবহার করেন। কিন্তু আধুনিককালের গবেষণাগারগুলোয় কমপক্ষে একটি কম্পিউটার ওয়ার্কস্টেশন থাকে, যাতে করে উপাত্ত সংগ্রহ ও তথ্য বিশ্লেষণের জন্যে রাখা হয়।

নিরাপত্তা

কিছু গবেষণাগারে অন্যান্য কক্ষের তুলনায় সাধারণতঃ তেমন বিপদজনক পরিবেশ সৃষ্টি করা হয় না। কিন্তু অধিকাংশ ল্যাবেই ক্ষতিকর পদার্থ বিরাজমান থাকে। ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি নির্ভর করে শিক্ষা বিষয়ের উপর। বিষাক্ত দ্রব্য, সংক্রামক জীবাণু, অগ্নিশিখা, বিস্ফোরক, তেজস্ক্রিয় পদার্থ, যন্ত্রপাতি নড়াচড়া, উচ্চ তাপমাত্রা, লেজার, শক্তিশালী চৌম্বক শক্তি, উচ্চ ভোল্ট, এসিড ইত্যাদি ক্ষতিকর পদার্থ ও উপকরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যে-সকল গবেষণাগারে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সম্মুখীনের সম্ভাবনা প্রবল সেখানে অতি অবশ্যই প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে। ব্যবহারকারীর ঝুঁকিকে সহনীয় মাত্রায় আনতে আঘাতপ্রাপ্তিজরুরী সেবার ব্যবস্থা রাখা উচিত।

গ্যালরি

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.