বীচ ভলিবল
বীচ ভলিবল (ইংরেজি: Beach volleyball, Sand volleyball) আধুনিক অলিম্পিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অন্তর্ভুক্ত দলগত ক্রীড়াবিশেষ। এতে দু'টি দল খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। বালুকাময় মাঠে প্রতি দলে দুইজন খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণে চতুর্ভূজ আকৃতির কোর্টটি একটি জাল দ্বারা সমান দুই অংশে বিভক্ত।
বীচ ভলিবল | |
---|---|
![]() ফিনল্যান্ডের বীচ ভলিবল খেলোয়াড় রিক্কা লেতোনেন ও তাঁর প্রতিপক্ষ | |
ক্রীড়া পরিচালনা সংস্থা | এফআইভিবি |
প্রথম খেলেছেন | ১৯১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসিফিক পালিসেডস |
বৈশিষ্ট্যসমূহ | |
শারীরিক সংস্পর্শ | না |
দলের সদস্য | ২ |
মিশ্রিত লিঙ্গ | একক ও মিশ্র |
বিভাগ | আউটডোর |
সরঞ্জাম | বীচ ভলিবল |
অলিম্পিক | ১৯৯৬ থেকে চলমান |
নিয়ম-কানুন
ভলিবল খেলার ন্যায় বীচ ভলিবল খেলারও প্রধান উদ্দেশ্য থাকে বলকে জালের উপর দিয়ে বিপক্ষের সীমানাস্থিত ভূমি স্পর্শ করা। প্রতিপক্ষও আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে বলকে ভূমির স্পর্শ থেকে রুখতে। একটি দল বলকে নিজ সীমানায় সর্বাধিক তিনবার স্পর্শ করে প্রতিপক্ষের সীমানায় প্রেরণ করতে পারে। কোর্টের পেছনের অংশে সীমানার বাইরে থেকে সার্ভারের মাধ্যমে বলে আঘাতের মাধ্যমে খেলা শুরু হয়। উভয় দল কর্তৃক বল প্রতিপক্ষের সীমানায় প্রেরণ করে কাবু করার চেষ্টারত থাকে। কোন কারণে বল ভূমিতে স্পর্শ কিংবা সীমানার বাইরে প্রেরণের মাধ্যমে অথবা সঠিকভাবে ফেরত না পাঠালে তা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে।[1] বীচ ভলিবলের মৌলিক নিয়ম-কানুনগুলো ইনডোর ভলিবলের ন্যায়। বল ভূমিতে স্পর্শের ফলে প্রতিপক্ষ এক পয়েন্ট লাভ করে এবং অপর খেলোয়াড় বলে আঘাতের মাধ্যমে খেলা চালু করবে। এভাবে চারজন খেলোয়াড়ই বলে আঘাতের সুযোগ পায়।
বীচ ভলিবল এবং ইনডোর ভলিবলে কিছু প্রধান পার্থক্য রয়েছে যা নিম্নরূপ[2]:-
- খেলার স্থান হিসেবে বালুময় এলাকা হতে হবে।
- দলীয় সদস্য হবে দুই জন; কোন অতিরিক্ত খেলোয়াড় থাকবে না।
- পয়েন্ট পদ্ধতিতে ৩টি সেট থাকবে। প্রত্যেক সেটে ২১ পয়েন্ট থাকবে। সিদ্ধান্তমূলক সেটে ১৫ পয়েন্ট থাকবে।
- খেলা চলাকালীন কোনরূপ পরামর্শ প্রদান করা যাবে না।
- স্থান পরিবর্তন সংক্রান্ত কোনরূপ ভুল-ভ্রান্তি বীচ ভলিবলে নেই। ইচ্ছেমাফিক খেলোয়াড়েরা স্থান পরিবর্তন করতে পারবে।
- দলীয় স্থান পরিবর্তন প্রতি সাত পয়েন্ট অন্তর পরিবর্তনযোগ্য।
উৎপত্তি

১৯২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা মনিকায় বৃহৎ বালুকাময় এলাকায় নির্মল আনন্দলাভের উদ্দেশ্যে বীচ ভলিবল খেলার উৎপত্তি হয়েছে। একটি স্থায়ী জালের ব্যবস্থা করা হয় এবং জনগণও বিনোদনমূলক খেলা হিসেবে এতে অংশগ্রহণ করে। ফলশ্রুতিতে ব্যক্তি উদ্যোগে ক্লাব গড়ে উঠে। ১৯২২ সালের শেষদিকে এগারটি এ ধরনের ক্লাব দেখা যায়। ১৯২৪ সালে প্রথমবারের মতো আন্তঃক্লাব প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
ইনডোর ভলিবলের ন্যায় শুরুর দিকে বীচ ভলিবল খেলায়ও প্রতি দলে কমপক্ষে ছয়জন খেলোয়াড় থাকতো। বর্তমান কালের দুইজন-খেলোয়াড়বিশিষ্ট বীচ ভলিবল খেলার ধারনাটির বুৎপত্তি ঘটে পল পাবলো জনসন নামীয় সান্তা মনিকা এথলেটিক ক্লাবের একজন খেলোয়াড়ের মাধ্যমে।[3] ১৯৩০ সালের গ্রীষ্মকালে তিনি ছয়-জন খেলোয়াড়বিশিষ্ট দলের সদস্যদের উপস্থিতির জন্যে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু তারা আসতে বিলম্ব করায় দুইজন ব্যক্তির উপস্থিতিতেই খেলার সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীকালে খেলাটি পরিবর্তিত হয়। চিত্তবিনোদনমূলক খেলা হিসেবে এতে আরো খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ ঘটে। বিশ্বব্যাপী খেলার উপযোগী করে নতুন সংস্করণ তৈরী হয়েছে এবং একমাত্র শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতায় প্রতি দলে দুইজন খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ থাকে। বর্তমানে এ খেলাটি বিশ্বের সর্বত্র জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা
আন্তর্জাতিক ভলিবল সংস্থা বা এফআইভিবি বীচ ভলিবলসহ ইনডোর ভলিবল এবং ঘাষপূর্ণ মাঠে ভলিবল খেলার আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণকারী ক্রীড়া পরিচালনাকারী সংস্থা হিসেবে পরিচিত।[4] এর সদর দফতর সুইজারল্যান্ডের লৌজানে অবস্থিত। বর্তমানে এর সভাপতি হিসেবে রয়েছেন চীনের উই জিঝং।[5]