বদরুদ্দীন উমর
বদরুদ্দীন উমর (জন্ম: ২০ ডিসেম্বর ১৯৩১) একজন বাংলাদেশি মার্কসবাদী–লেনিনবাদী তাত্ত্বিক, রাজনৈতিক সক্রিয়তাবাদী, ইতিহাসবিদ, লেখক, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) (উমর)-এর নেতা। তিন খণ্ডে উমর রচিত পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি (১৯৭০, ১৯৭৬, ১৯৮১) বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস রচনায় পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত।[1] তার পিতা আবুল হাশিম ভারতীয় উপমহাদেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ছিলেন।[2]
বদরুদ্দীন উমর | |
---|---|
জন্ম | বদরুদ্দীন উমর ২০ ডিসেম্বর, ১৯৩১ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
যেখানের শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | মার্কসবাদী তাত্ত্বিক, অধ্যাপক, লেখক, ইতিহাসবিদ |
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবুল হাশিম ও মাতার নাম মাহমুদা আখতার মেহেরবানু বেগম। যদিও তার পিতা আবুল হাশিম—একজন সাম্যবাদী—পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধী ছিলেন, তথাপি তিনি পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উমর ১৯৪৮ সালে বর্ধমান টাউন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫০ সালে তিনি বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি.পি.ই ডিগ্রি লাভ করেন।[3]
কর্মজীবন
প্রথমে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। বদরুদ্দীন উমর ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের যাত্রা শুরু হয় তারই হাত ধরে। ১৯৬৮তে পদত্যাগ করেন। তিনি সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ছিলেন গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের। তিনি সভাপতি আছেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের এবং বাংলাদেশ লেখক শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।[3] তিনি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে 'সংস্কৃতি' নামে একটি রাজনৈতিক সাময়িকী সম্পাদনা করেছেন। তিনি ১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন। তাকে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং ১৯৭৬ সালের মাঝামঝি অনুষ্ঠেয় বিশেষ কংগ্রেসের প্রতিবেদন তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়।[4]
প্রকাশিত গ্রন্থ
প্রবন্ধ-গবেষণা
|
|
ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত গ্রন্থ
- Politics and Society in East Pakistan and Bangladesh (১৯৭৩)
- Society and Politics in Pakistan (কলকাতা, ১৯৮০)
- Politics and Society in Bangladesh (১৯৮৭)
- Towards the Emergency in Bangladesh (১৯৮০)
- Imperialism and General Crisis of the Bourgeoise in Bangladesh (১৯৮৬)
- Language Movement in East Bengal (২০০১)
- Emergence of Bangladesh (১ম খন্ড ২০০৪ ও ২য় খন্ড ২০০৬) [3]
সম্মাননা
১৯৭২ সালে বদরুদ্দীন উমর বাংলা একাডেমী পুরস্কার অর্জন করেন। তবে তিনি তা সাথে সাথেই প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ইতিহাস পরিষদ পুরস্কার পান এবং প্রত্যাখ্যান করেন।
তথ্যসূত্র
- "বড় পটভূমির মধ্যে ভাষা আন্দোলনকে ধরতে চেয়েছিলাম"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-১৪।
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০১০-০৮-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০১-২১।
- "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৪ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০১১।
- জয়নাল আবেদীন, উপমহাদেশের জাতীয়তাবাদী ও বামধারার রাজনীতি প্রেক্ষিত বাংলাদেশ; বাংলাপ্রকাশ, ঢাকা; ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, পৃষ্ঠা-৩৯৪।
- http://www.shaptahik.com/v2/?DetailsId=4691