ফ্যাসিবাদ

ফ্যাসিবাদ (ইংরেজি: Fascism) হচ্ছে র‍্যাডিক্যাল কর্তৃত্বমূলক জাতীয়তাবাদের একটি রূপ।[1][2] যা বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ইউরোপে খ্যাতি লাভ করে। ১ম বিশ্বযুদ্ধের পর ইটালিতে ফ্যাসিবাদ উৎপত্তি লাভ করে জাতীয় সিন্ডিক্যালবাদ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে। এটি বিশেষভাবে বামপন্থী রাজনীতির উপাদান গ্রহণের মাধ্যমে ডানপন্থী রাজনীতিতে অবস্থান গ্রহণ করে; এবং এটি ছিল সমাজতন্ত্র, উদারতাবাদ, সাম্যবাদ, ডানপন্থী রক্ষণশীল, গণতান্ত্রিকের বিরোধী। যদিও ফ্যাসিবাদকে বাম-ডান রাজনীতিতে সাধারণভাবে দূর ডানে জায়গা দেয়া হয়, কতিপয় স্ব-ব্যাখ্যাত ফ্যাসিবাদী এবং কিছু মন্তব্যকারীরা বলেছেন যে এই বিবরণ যথার্থ নয়।[3][4][5] এটি মুলত রাষ্ট্রের সকল মানুষকে একাত্ব করে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। এই কাজে তারা নির্ভর করে একটি বিশেষ বাহিনী বা গোষ্ঠীর উপর যারা পূর্বে রাজনৈতিক অঙ্গনে ততটা প্রভাবশালী ছিল না। যাদের এই আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকে তারাই পরবর্তীকালে রাষ্ট্র নেতৃতে অগ্রনী দায়িত্ব নেয়। সেই রাষ্ট্র তখন প্রাথমিকভাবে রাজনৈতিক সহিংসতা, যুদ্ধ ও সাম্রাজ্যবাদকে অনুমোদন দেয় এবং রাষ্ট্রের মতে নতুনভাবে রাষ্ট্র গঠনের জন্য এগুলো মৌলিক বিষয়। ফ্যাসিবাদী মতাদর্শ অনুযায়ী উচ্চবিত্ত বা প্রভাবশালী রাষ্ট্রের (তারা নিজেদেরকেও এই শ্রেণীতে রাখে) উচিত অন্য দুর্বল বা যাদের অর্থনীতি তেমনটা মজবুত নয় এমন রাষ্ট্র বা জাতিকে দখল করে স্থানচ্যুত করা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফ্যাসিবাদীরা অন্য সংস্কৃতির প্রতি অশ্রদ্ধাশীল হয়ে থাকে এবং জাতি ও সংস্কৃতিকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করে।

দেশের সকল শ্রেণীর মানুষকে একাত্ব করাই অর্থাৎ শ্রেণীবিভাজন দূর করে রাষ্ট্র পরিচালনা করাই ফ্যাসিবাদের লক্ষ্য। অনেক বিশ্লেষকের মতে ফ্যাসিবাদ পুঁজিবাদসাম্যবাদের মাঝখানে অবস্থিত বা তৃতীয় “অবস্থান’’ বলেও উল্লেখ করেছেন। ফ্যাসিবাদী অর্থনীতি স্বনির্ভরতার উপর গুরত্ব দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফ্যাসিবাদী সরকার সামরিকায়নিত হয় বা সামরিক বাহিনীর ওপর অতিনির্ভর ও আস্থাশীল।

ইতালির জাতীয় শ্রমিক আন্দোলন জাতীয়তাবাদ থেকে ফ্যাসিবাদ উত্থান হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে কোন রাজনৈতিক দলই খোলাখুলিভাবে নিজেদের ফ্যাসিবাদী বলে দাবি করতে চায় না। এখন সাধারণত রাজনৈতিক দলগুলো বিরোধী দলের প্রতি ঘৃণা বা রাগ প্রকাশের জন্য এই শব্দ ব্যবহার করে। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে জার্মানির অ্যাডলফ হিটলার এবং ইতালির বেনিতো মুসোলিনি উল্লেখযোগ্য।

ফ্যাসিবাদের অগ্রদূত বলা হয় ফ্রেডারিক নিতসে কে।

তথ্যসূত্র

নোটসমূহ

  1. Turner, Henry Ashby, Reappraisals of Fascism. New Viewpoints, 1975. p. 162. States fascism's "goals of radical and authoritarian nationalism".
  2. Larsen, Stein Ugelvik, Bernt Hagtvet and Jan Petter Myklebust, Who were the Fascists: Social Roots of European Fascism, p. 424, "organized form of integrative radical nationalist authoritarianism"
  3. Roger Griffin. Fascism. Oxford, England, UK: Oxford University Press, 1995. pp. 8, 307.
  4. Aristotle A. Kallis. The fascism reader. New York, New York, USA: Routledge, 2003. p. 71
  5. Goldberg, Jonah. "Liberal Fascism: The Secret History of the American Left, From Mussolini to the Politics of Meaning". Three Rivers Press, 2009. pp. 79-84.

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.