প্রসবোত্তর রক্তপাত
প্রসবোত্তর রক্তপাত বা প্রসবকালীন হেমারেজ (পিপিএইচ) প্রায়শই শিশুর জন্মের প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫০০মিলিগ্রাম বা ১,০০০ মিলি রক্তক্ষয়ের সংজ্ঞা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।[2] কারও মতে এই অবস্থায় রক্ত পরিমাণ কমের লক্ষণও বিদ্যমান হবে। [6] লক্ষণ এবং উপসর্গগুলির মধ্যে প্রাথমিকভাবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে: হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি, দাঁড়ালে মাথা ঘোরা অনুভব করা, এবং শ্বাস প্রশ্বাস বৃদ্ধি।[1] যত বেশি রক্ত ক্ষরণ হয়, মহিলার ঠান্ডা বোধ করতে পারে, তার রক্তচাপ হ্রাস পেতে পারে, এবং সে অস্থির বা অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারে।[1] প্রসবের পর ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত এরকম অবস্থা হতে পারে। [6]
প্রসবোত্তর রক্তপাত | |
---|---|
অন্যান্য নাম | প্রসবোত্তর রক্তস্রাব |
![]() | |
একটি অবায়বীয় সংঘর্ষবিরোধী বস্ত্র (NASG) | |
বিশেষায়িত ক্ষেত্র | ধাত্রীবিদ্যা |
উপসর্গ | প্রসবের পর প্রচুর পরিমাণ রক্তক্ষরণ, বর্ধিত হৃৎস্পন্দন, দাঁড়ালে সংজ্ঞাহীন হবার অনুভূতি দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস [1][2] |
কারণসমূহ | জরায়ুর দুর্বল সংকোচন, সমস্ত অমরা বের না হওয়া, জরায়ুু বিদীর্ণ হওয়া, ত্রুটিপূর্ণ তঞ্চন[2] |
ঝুঁকিসমূহ | রক্তাল্পতা, এশীয়, একাধিক সন্তান, অতি স্থূলতা, ৪০ বছরের ওপর বয়স[2] |
প্রতিরোধ | অক্সিটোসিন, মিসোপ্রস্টল[2] |
চিকিৎসা | ইন্ট্রাভেনাস ফ্লুইড, অবায়বীয় আঘাত্রোধক বস্ত্র, রক্ত সঞ্চারণ, এরগোটামিন, ট্রানেক্সামিক এসিড[2][3] |
রোগের পূর্বাভাস | ৩% মৃত্যুর ঝুঁকি (উন্নয়নশীল বিশ্বের)[2] |
ব্যাপকতার হার | ৮৭ লক্ষ(বিশ্বব্যাপী)[4] / 1.2% of births (developing world)[2] |
মৃত্যু | ৮৩,১০০ (২০১৫)[5] |
সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল শিশুর জন্মের পর জরায়ুর অপর্য্যাপ্ত সংকোচন। [2] অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলি হল প্লাসেন্টা সম্পূর্ন না বেড়োন, জরায়ুতে ছিদ্র বা ছেড়া, বা ত্রুটিপূর্ন রক্ততঞ্চন। [2] এটি সাধারণতঃ যাদের রক্ত কম পরিমাণে থাকে , আয়তনে বড় বা একাধিক বাচ্চা থাকে, শরীর মোটা অথবা ৪০ বছরের বেশি বয়সের, তাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। [2] এটি আরও সাধারণভাবে সিজারিয়ান সেকশনের পরে, যাঁদের প্রসব শুরু করার জন্য ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে, যাদের ভ্যাকুয়াম বা ফরসেপ ব্যবহারের প্রয়োজন হয়েছে, এবং যাদের এপিসিওটমি হয়েছে তাদের হয়। [2][7]
কারণ
কারণ | পুনরাবৃত্তির হার |
---|---|
জরায়ুজ নিঃসাড়তা | ৭০% |
আঘাত | ২০% |
সংরক্ষিত টিস্যু | ১০% |
কোয়াগুলোপাথি(রক্ত জমাট বাঁধার অসুবিধা) | ১% |
প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণের কারণগুলি জরায়ুর দুর্বলতা, আঘাত, গর্ভফুল জনিত অস্বাভাবিকতা এবং কোয়াগুলোপ্যাথি, যা সাধারণত "চার টি এস" হিসাবে উল্লেখ করা হয়:[8]
- দৃঢ়তা: জরায়ুজ নিঃসাড়তা বা জরায়ুর অপর্যাপ্ত সঙ্কোচনের জন্য ক্রমাগত রক্তক্ষরণ হতে পারে। প্ল্যাসেন্টাল টিস্যু আটকে থাকা এবং সংক্রমণ জরায়ুজ নিঃসাড়তার কারণ হতে পারে। জরায়ুজ নিঃসাড়তা প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণের সবচেয়ে সাধারণ কারণ। .[9]
- আঘাত: প্রসব পথে অর্থাৎ জরায়ু, জরায়ুমুখ, যোনি এবং পেরিনিয়ামে আঘাত, যেগুলি প্রসব পদ্ধতি সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় তাও ঘটতে পারে। গর্ভধারণের সময় এই সমস্ত অঙ্গগুলি আরও রক্তরসপরিপূর্ন হয়ে ওঠে, সেকারণে রক্তপাতের সম্ভাবনা বেশী থাকে।
- টিস্যু: প্লেসেন্টা বা ভ্রূণের থেকে টিস্যু রয়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্লেসেন্টা অ্যাক্রেটা এবং পারক্রেটার মতো অস্বাভাবিকতা থেকে রক্তপাত হতে পারে।
- থ্রম্বিন: এটি একটি রক্তস্রাবের অসুবিধা যেখানে রক্তজমাট বাঁধার সমস্যা আছে যেমন কোয়াগুলোপ্যাথি জাতীয় রোগে ঘটে।
অন্যান্য ঝুঁকির কারণগুলি হল অতিস্থূলতা, গর্ভাবস্থায় জ্বর, প্রসবের আগে রক্তক্ষরণ, এবং হৃদরোগ [7]
বহিঃসংযোগ
তথ্যসূত্র
- Lynch, Christopher B- (২০০৬)। A textbook of postpartum hemorrhage : a comprehensive guide to evaluation, management and surgical intervention। Duncow: Sapiens Publishing। পৃষ্ঠা 14–15। আইএসবিএন 9780955228230। ২০১৬-০৮-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-১৯।
- GBD 2015 Disease and Injury Incidence and Prevalence, Collaborators. (৮ অক্টোবর ২০১৬)। "Global, regional, and national incidence, prevalence, and years lived with disability for 310 diseases and injuries, 1990-2015: a systematic analysis for the Global Burden of Disease Study 2015."। Lancet। 388 (10053): 1545–1602। doi:10.1016/S0140-6736(16)31678-6। PMID 27733282। পিএমসি 5055577
। - GBD 2015 Mortality and Causes of Death, Collaborators. (৮ অক্টোবর ২০১৬)। "Global, regional, and national life expectancy, all-cause mortality, and cause-specific mortality for 249 causes of death, 1980-2015: a systematic analysis for the Global Burden of Disease Study 2015."। Lancet। 388 (10053): 1459–1544। doi:10.1016/s0140-6736(16)31012-1। PMID 27733281। পিএমসি 5388903
। - Gibbs, Ronald S (২০০৮)। Danforth's obstetrics and gynecology (10th সংস্করণ)। Philadelphia: Lippincott Williams & Wilkins। পৃষ্ঠা 453। আইএসবিএন 9780781769372। ২০১৬-০৬-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- Lockhart, E (২০১৫)। "Postpartum hemorrhage: a continuing challenge."। Hematology. American Society of Hematology. Education Program। 2015: 132–7। doi:10.1182/asheducation-2015.1.132। PMID 26637712।
- Anderson JM, Etches D (মার্চ ২০০৭)। "Prevention and management of postpartum hemorrhage"। American Family Physician। 75 (6): 875–82। PMID 17390600।
- "Overview of postpartum hemorrhage"। ২০১৫-০১-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।