পৃত্থিমপাশা জমিদার বাড়ি
পৃত্থিমপাশা জমিদার বাড়ি (যা পৃথিমপাশা নবাব বাড়ি নামেও পরিচিত) বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় জমিদারী আমলের স্মৃতি বিজড়িত এক ঐতিহাসিক এবং অপূর্ব স্থাপনার নাম পৃত্থিমপাশা জমিদার বাড়ি। পৃত্থিমপাশায় রয়েছে দু’টি জমিদার বাড়ি। এই জমিদার বাড়ির মতো জীবন্ত জমিদার বাড়ি বাংলাদেশে আর দ্বিতীয়টি নেই [1][2][3][4]
পৃত্থিমপাশা জমিদার বাড়ি | |
---|---|
বিকল্প নাম | পৃত্থিমপাশা নবাব বাড়ি |
সাধারণ তথ্য | |
ধরন | বাসস্থান |
অবস্থান | কুলাউড়া উপজেলা |
ঠিকানা | পৃত্থিমপাশা ৩ নং ওয়ার্ড |
শহর | মৌলভীবাজার জেলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
খোলা হয়েছে | ১৭০০ শতকে |
স্বত্বাধিকারী | নবাব আলী আমজাদ খাঁর পরিবার |
কারিগরী বিবরণ | |
পদার্থ | ইট, সুরকি ও রড |
অবস্থান ও বিবরণ

মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে ২৫ একর বিস্তৃত সাজানো-গোছানো জমিদার বাড়ির অবস্থান ৪৭ কিলোমিটার পূর্বে। পুরোনো কয়েকটি স্থাপনার সঙ্গে রয়েছে জমিদার নির্মিত শিয়া সম্প্রদায়ের একটি চমৎকার নকশা খচিত ইমামবাড়া। প্রত্যেকটি স্থাপনাতে আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট। পাশেই রয়েছে চমৎকার শান বাঁধানো ঘাটসহ সুবিশাল দীঘি।[1][5][6]
ইতিহাস
এই এলাকাটি এক সময় ছিল ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। এখানকার পাহাড়ি এলাকায় নওগা কুকি উপজাতির বেশ প্রতাপ ছিল। শ্রীহট্ট সদরে (বর্তমানে সিলেট) সেই সময় একজন কাজী ছিলেন যার নাম মোহাম্মদ আলী। ১৭৯২ সালে ইংরেজ শাসকদের পক্ষ হয়ে নওগা কুকিদের বিদ্রোহ দমনে মোহাম্মদ আলী আমজাদ খাঁন ভূমিকা রাখেন। ইংরেজ সরকার এতে খুশি হয়ে মোহাম্মদ আলীর পুত্র নবাব আলী আমজাদ খাঁনকে ১২০০ হাল বা ১৪,৪০০ বিঘা জমি দান করেন। তখনকার সময়ে বৃহত্তর সিলেটের মধ্যে সবচেয়ে স্বনামধন্য এবং প্রভাবশালী অন্যতম জমিদার ছিলেন নবাব আলী আমজাদ খাঁন। সিলেটের বিখ্যাত আলী আমজাদের ঘড়ি ও সুরমা নদীর তীরে চাঁদনীঘাটের সিঁড়ি সমাজসেবায় তার একটি অন্যতম দৃষ্টান্ত। ঐ সময় পৃত্থিমপাশা জমিদার বাড়িতে ত্রিপুরার মহারাজা রাধা কিশোর মানিক্য বাহাদুরসহ বহু ইংরেজ ভ্রমণ করে গেছেন। ইরানের রাজাও ভ্রমণ করে গেছেন। জমিদার বাড়ির ঐতিহ্য ধরে রাখতে আলী আমজাদ খাঁন মৌলভীবাজার ও কুলাউড়ায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজ এবং সুপেয় পানির জন্য দীঘি খনন করেন। [1][3][7]
বর্তমান অবস্থা
এই বাড়ির ভেতর সবকিছু পুরানো আমলের কারুকাজ খচিত মনে হলেও সেগুলো পরিষ্কার ঝকঝকেই আছে এখনো। জমিদারদের ব্যবহার করা অনেক জিনিসপত্র রয়েছে এ বাড়িতে। রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য এখানে লোক রয়েছে। নবাব আলী আমজাদ খাঁর উত্তসুরিরাই দেখাশুনা করেন জমিদার বাড়িটি।[3][8]
তথ্যসূত্র
- "পৃথিমপাশা নবাব বাড়ী"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭। ১৪ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৯।
- "ছুটির দিনে রোমাঞ্চকর কালা পাহাড়"। এনটিভি অনলাইন। ৬ জুলাই ২০১৯। ১৪ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৯।
- হাসান ইমাম চৌধুরী (২৭ মার্চ ২০১৪)। "জীবন্ত কিংবদন্তি পৃত্থিমপাশা জমিদার বাড়ি"। বহুমাত্রিক.কম। ১৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৯।
- "জমিদার আলী আমজদ খাঁ বনাম সুজানগরবাসীর ঐতিহাসিক মামলা"। দৈনিক সিলেটের ডাক। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। ১৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৯।
- "চৌহাট্টার সিংহবাড়িতে"। দৈনিক সমকাল। ২০ মার্চ ২০১৯। ১৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৯।
- "The Daily Star Web Edition Vol. 5 Num 264"। archive.thedailystar.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৩।
- "আলী আমজাদের ঘড়ি সংস্কার হবে আবার"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৩।
- ""উপমহাদেশের এক প্রখ্যাত নবাব পরিবারের গৌরবোজ্জল উত্তরাধিকারঃ নবাব আলী আব্বাছ খাঁনঃ নবাবহয়েও নবাবী দেখান নিঃ একসহজ সরল সাদা মনের মানুষ ॥ ""। সাপ্তাহিক পাতাকুঁডির দেশ। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮। ১৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৯।