নন্দলাল বসু

নন্দলাল বসু (৩রা ফেব্রুয়ারি; ১৮৮৩-১৬ই এপ্রিল; ১৯৬৬)[1] ছিলেন বাঙালি চিত্রশিল্পী।

নন্দলাল বসু
জন্ম(১৮৮৩-০২-০৩)৩ ফেব্রুয়ারি ১৮৮৩
মৃত্যু১৬ এপ্রিল ১৯৬৬(1966-04-16) (বয়স ৭৯)
জাতীয়তাভারতীয়
পরিচিতির কারণচিত্রকলা
পুরস্কারপদ্মভূষণ
১৯৫৪
(আরও দেখুন)

জন্ম

নন্দলাল বসুর জন্ম খড়গপুরের মুঙ্গেরে। বাবার নাম পূর্ণচন্দ্র বসু। মাতার নাম ক্ষেত্রমণি। ছেলেবেলা থেকেই তিনি প্রবল উৎসাহের সঙ্গে দেব-দেবীর মূর্তি সহ পুতুল তৈরি করতেন।

শিক্ষাজীবন

চিত্রকলার প্রতি তার আকর্ষণ এবং পড়ালেখায় অমনোযোগিতার কারণে এফ, এ পরীক্ষায় পর পর দুবার ফেল করেন। পরে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহায্যে কলিকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তির সুযোগ পান। এখানকার ছাত্র থাকাকালীন তিনি কর্ণের সূর্যস্তব, গরুড়স্তম্ভতলে শ্রীচৈতন্য, কৈকেয়ী, শিবমতি, নৌবিহার প্রভৃতি ছবি এঁকে নিজের প্রতিভার পরিচয় দেন।

কর্মজীবন

তিনি কর্মজীবনের শুরুতে পাটনা, রাজগির, বুদ্ধগয়া, বারাণসী, দিল্লী, আগ্রা, মথুরা, বৃন্দাবন, এলাহাবাদ ভ্রমণ করে উত্তর ভারতের শিল্প ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত হন। প্রায় একই সময়ে পুরী থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত প্রায় সমগ্র দক্ষিণ ভারত ভ্রমণ করেন এবং কোণারকের সূর্য মন্দির তাকে প্রভাবিত করে। ১৯২১ সালে তিনি বাঘ গুহার নষ্ট হয়ে যাওয়া চিত্রগুলি পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি ভগিনী নিবেদিতার হিন্দু-বৌদ্ধ পুরাকাহিনী বইটির অঙ্গসজ্জা করেন এবং ঠাকুর বাড়ির চিত্রকলার তালিকা তৈরিতেও সাহায্য করেন। ১৯১৬ সালে রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত বিচিত্রা সংঘে তিনি শিল্পকলার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৩৫-৩৭ সালে পর পর তিন বছর তিনি কংগ্রসের বার্ষিক সম্মেলনে শিল্প প্রদর্শনী ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৩৭ সালে অনুষ্ঠিত হরিপুরা সম্মেলনে তিনি লোকচিত্রের ধারাবাহী ৮৩টি পট প্রদর্শন করেন যা হরিপুরা পট নামে খ্যাত। ১৯৪৩ সালে তিনি বরোদার মহারাজের কীর্তিমন্দির অলঙ্কৃত করার দায়িত্ব লাভ করেন। এই কীর্তিমন্দিরের চারিদিকের এবং শ্রীনিকেতন ও শান্তিনিকেতনের দেয়ালচিত্র নন্দলাল বসুকে খ্যাতিমান করে তুলে। ভারতীয় সংবিধানের সচিত্র সংস্করণও নন্দলাল বসু অলংকৃত করেন। তার আঁকা ছোট ছোট ছবিগুলোতেও তার প্রতিভার এবং স্বাতন্ত্রের পরিচয় মেলে। শেষ জীবনে নন্দলাল বসু তুলি-কালি এবং ছাপচিত্রের প্রতি বিশেষ মনোযোগী হন এবং এক্ষেত্রে সাফল্যের পরিচয় দেন। রবীন্দ্রনাথের সহজপাঠের ছবিগুলিও তার আঁকা। তার বিখ্যাত চিত্রগুলির মধ্যে অন্নপূর্ণা, সতী, দার্জিলিং প্রভৃতি উল্লেখ্য।

চিত্রশিল্প

পুরস্কার ও সম্মাননা

  • ১৯৫২ সালে বিশ্বভারতী তাকে দেশিকোত্তম উপাধিতে ভূষিত হন।
  • ১৯৫৪ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মবিভূষণ উপাধিতে ভূষিত করে।
  • ১৯৫৬ সালে ললিত কলা একাডেমির দ্বিতীয় ফেলো নির্বাচিত হনI

মৃত্যু

এই মহান চিত্রকর ১৯৬৬ সালের ১৬ই এপ্রিল ৭৯ বছর বয়সে তিনি শান্তিনিকেতনে পরলোকগমন করেন।

তথ্যসূত্র

  1. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, সম্পাদনাঃ সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত এবং অঞ্জলি বসু, ১ম খণ্ড, সংশোধিত পঞ্চম সংস্করণ, সাহিত্য সংসদ, ২০১০, কলকাতা
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.