ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ

ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ (থ্রিডি প্রিন্টিং নামেও পরিচিত) বা যুত উৎপাদন[1] এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে ডিজিটাল মডেল থেকে কার্যত যে কোন আকৃতির ত্রিমাত্রিক কঠিন বস্তু তৈরী করা যায়। যুত প্রক্রিয়ায় ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ করা হয় যাতে ধাতু বা অন্যবস্তুর স্তর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন আকৃতিতে একটি ওপর আরেকটি যুক্ত হতে থাকে।[2] প্রথাগত যান্ত্রিক উৎপাদন প্রক্রিয়া থেকে ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ স্বতন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয়, কেননা প্রথাগত পদ্ধতিতে কোন কিছু তৈরি করতে হলে একটি ধাতু বা বস্তুকে কেটে অথবা ছিদ্র করে কাঙ্খিত আকার দেয়া হয়।

একটি ORDbot Quantum থ্রিডি প্রিন্টার

এই প্রিন্টার সাধারণত ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক মুদ্রণের কাজ করে। একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে এই মেশিনের বিক্রি ব্যাপকভাবে বেড়েছে, এবং এগুলোর দামও বেশ অনেকটা কমেছে।[3]

প্রটোটাইপিং এবং ডিস্ট্রিবিউটেড ম্যানুফ্যাকচারিং - দুই ধরনের উৎপাদনেই এই প্রযুক্তি সক্ষম। গয়না প্রস্তুত, পাদুকা শিল্প, ইন্ডস্ট্রিয়াল ডিজাইন, স্থাপত্য, প্রকৌশল ও নির্মাণ, অটোমোটিভ, মহাকাশ, দন্ত এবং চিকিৎসা শিল্প, শিক্ষা, ভৌগলিক তথ্য ব্যবস্থা, পুরকৌশল, এবং অনেক অন্যান্য ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়।

3D Systems Corp এর চাক হাল ১৯৮৪ সালে প্রথম কর্ম উপযোগী ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ যন্ত্র তৈরি করেছিলেন।[4]

পরিভাষা

এখানে তথাকথিত তরল ফটো-পলিমার-এর (এক ধরনের কালি) সাহায্যে প্রিন্ট করা হয়, যা সাধারণ ইংক-জেট প্রিন্টার যেভাবে স্প্রেকরে সেইভাবেই স্প্রে করা হয়। অতি বেগুনি রশ্মি দিয়ে কালিকে শক্ত করা হয়। এরপর একের পর এক স্তর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে নকল বস্তুটি গড়ে তোলা হয়৷ অনেকে মনে করেন থ্রিডি মুদ্রণ শব্দটি কেবলমাত্র পলিমার প্রযুক্তির জন্যই ব্যবহৃত হয়। কিন্তু বাস্তবে এতে পলিমার ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ধাতব পদার্থ (যেমনঃ ইস্পাত) ব্যবহার করা হয়।

ইতিহাস

চার্লস ডব্লিউ. হাল আধুনিক থ্রিডি প্রিন্টারের আবিষ্কারক এবং এর কার্যক্ষম প্রমিত প্রযুক্তির উদ্ভাবক। প্রথম কোন প্রকাশিত তথ্যসূত্র অনুযায়ী, একটি কঠিন আকৃতি মুদ্রণের প্রথম কাজটি করা হয়েছিল ১৯৮১ সালে এবং এটি করেছিলেন নাগোয়া মিউনিসিপাল ইন্ডস্ট্রিয়াল রিসার্চ ইন্সটিটিউট এর হিদেও কোদামা।[5] তারপর থেকে এই প্রযুক্তি বেশ উন্নতি লাভ করেছে।

কার্যপ্রনালি

প্রথমে কম্পিউটার-সহায়ক সফটওয়্যার ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত বস্তুর একটি ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করা হয়। এরপর প্রিন্টারে সেটির একটি ফাইল (সিএডি) প্রেরণ করা হয়। প্লাস্টিক ফিলামেন্টে মোটরের মাধ্যমে প্লাস্টিক গলিয়ে একটি সরু মুখ (নজল) দিয়ে বের করা হয়। প্রিন্টারটি তরল, গুঁড়া, কাগজ বা ধাতব বস্তুর স্তর তৈরি করে এবং পর্যায়ক্রমে একের পর এক স্তর তৈরির মধ্য দিয়ে বস্তুটির অনুরূপ গঠন করে।[6]

তথ্যসূত্র

  1. "The rise of additive manufacturing - The Engineer The Engineer"www.theengineer.co.uk
  2. "3D Printer Technology – Animation of layering"। Create It Real। ২০১২-০৩-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-৩১
  3. Sherman, Lilli Manolis। "3D Printers Lead Growth of Rapid Prototyping (Plastics Technology, August 2004)"। ২০১০-০১-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-৩১
  4. "3D Printing: What You Need to Know"
  5. NSF JTEC/WTEC Panel Report-RPA http://www.wtec.org/pdf/rp_vi.pdf ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ আগস্ট ২০১৭ তারিখে
  6. "বিশ্বকে বদলে দেবে ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ"

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.